ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আসিফ রাতুল

অজানা ১০ দেশ

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ২৬ মে ২০১৭

অজানা ১০ দেশ

এটি কারও ভূগোলের জ্ঞানবিরুদ্ধ কিছু না। আসলে আমরা নিচে উল্লেখিত দেশগুলো সম্পর্কে খুব একটা জানি না তেমনি শুনিওনি। নিচে উল্লেখিত দেশগুলো সম্পর্কে বিশ্বের বিশিষ্ট প্রচারমাধ্যমগুলো সাধারণত খুব একটা সময় ব্যয় করে না, কিন্তু তার মানে এটা না যে, দেশগুলো উল্লেখযোগ্য নয়। জেনে নিন, এমন ১০টি দেশের তথ্য, যা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মনোযোগ পাওয়ার যোগ্য। জিবুতি ॥ জিবুতি, আনুষ্ঠানিকভাবে জিবুতি প্রজাতন্ত্র, হর্ন অব আফ্রিকার একটি দেশ এবং দেশটি আফ্রিকা মহাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় চতুর্ভুজে অবস্থিত। এর সীমান্ত লোহিত সাগর, আদিনের উপসাগর, ইরিত্রিয়া, ইথিওপিয়া এবং সোমালিয়া দ্বারা বেষ্টিত। জিবুতি মাত্র ৯ হাজার বর্গমাইলের ছোট্ট একটি দেশ। যদিও এটি ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিল, ১৯৭৭ সাল থেকে এটি স্বাধীন দেশ হিসেবে পরিচিত। দেশটির জনসংখ্যা প্রায় এক মিলিয়ন এবং বেশিরভাগ মুসলিম ধর্মাবলম্বী। তবে ভিন্ন ধর্মের স্বাধীনতা রয়েছে দেশটিতে। কিরিবাতি ॥ কিরিবাতি, উচ্চারণ করা হয় কির-এ-বেস, পূর্বে নাম ছিল গিলবার্ট দ্বীপপুঞ্জ। এটি একটি দ্বীপ দেশ, কেন্দ্রীয় প্রশান্ত মহাসাগর থেকে কিছুটা দূরে। ২০১০ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, এর সংখ্যা প্রায় ১০২৫০০ জন। দেশটির আয়তন মাত্র ৩১৩ বর্গমাইল। কিরিবাতি ৩৩টি প্রবালপ্রাচীর এবং রিফ দ্বীপ দ্বারা গঠিত। দেশটি ব্রিটিশ উপনিবেশিত ছিল পরবর্তীকালে ১৯৭৯ সালে স্বাধীনতা লাভ করে। যদিও এই দেশটিকে প্রশান্ত মহাসাগরের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হিসাবে উল্লেখ করা হয়, পর্যটন শিল্প এই দেশটির অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যা হোক, কিরিবাতি প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ার কারণে এবং যাতায়াতের অসুবিধার দরুন দেশটির পর্যটন শিল্প চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। বেনিন ॥ বেনিন আফ্রিকার পশ্চিমে অবস্থিত ছোট্ট একটি দেশ। এর সীমান্ত পশ্চিমে টোগো, পূর্বে নাইজেরিয়া এবং উত্তরে বুর্কিনা ফাসো পর্যন্ত অবস্থিত। ১৯৬০ সালে স্বাধীন হওয়ার আগ পর্যন্ত দেশটি ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিল। ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বেনিন, পিপলস রিপাবলিক অব বেনিনের মতোই ছিল। বর্তমান প্রজাতন্ত্রটি ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বেনিনের মাত্র ০.৪ শতাংশ পানি দ্বারা আবৃত। ২০১৩ সালের আদমশুমারির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটির জনসংখ্যা ১০,০০৮,৭৪০ জন। বেনিনের রাজধানী রাজধানী পোর্ট নভো। যদিও দেশটির সম্পর্কে খুব কমই কথা শোনা যায়, তবে আলোচনায় আনা হয় সাধারণত দরিদ্র অর্থনৈতিক কাঠামো এবং দারিদ্র্যসীমার জন্য। যা হোক, বেনিন মৌখিক রপকথার শক্তিশালী সংস্কৃতি এবং সুস্বাদু ঐতিহ্যবাহী খাবারের জন্য বিখ্যাত। লিচেনস্টেইন ॥ লিচেনস্টাইন সুইজারল্যান্ড এবং অস্ট্রিয়ার সীমান্তে অবস্থিত ইউরোপের একটি ছোট দেশ। এর আয়তন আকারে মাত্র ৬১ বর্গমাইল, তাই এই দেশটি কথা খুব কম শোনা যায়। মাত্র ৩৭৩৪০ জন লোকের জনসংখ্যার এই দেশটি আকারে ছোট হওয়া সত্ত্বেও সমগ্র বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ জিডিপি রয়েছে। এই দেশে ধর্ম বেশিরভাগ রোমান ক্যাথলিক এবং সরকার রাজতন্ত্র আকারে গঠিত। লিচেনস্টাইন মূলত জার্মান ভাষাভাষীর দেশ। ব্রুনাই ॥ ব্রুনাই দেশটি সম্পর্কেও খুব কম কথা বলা হয়। দেশটি দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার মধ্যে অবস্থিত, এটি মালয়েশিয়া এবং দক্ষিণ চীন সাগর দ্বারা পরিবেষ্টিত। দেশটির রাজধানী হচ্ছে, বন্দর সেরি বেগওয়ান। দেশটির জনসংখ্যা প্রায় ৪১৭২০০। ১৯৮৮ সালে স্বাধীনতা অর্জনের আগ পর্যন্ত দেশটি ব্রিটিশ আশ্রিত রাজ্য ছিল। দেশের ক্ষুদ্র মাপের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা বিশ্বের বাকি অংশ থেকে দেশটিকে অপেক্ষাকৃত ছিন্ন করে রেখেছে। এ্যান্ডোরা ॥ এ্যান্ডোরা ইউরোপের একটি ক্ষুদ্র রাষ্ট্র। এ্যান্ডোরার রাজধানী হচ্ছে, এ্যান্ডোরা লা ভিলা এবং কাতালান হচ্ছে মূল কথ্য ভাষা। এই তালিকার বেশিরভাগ দেশগুলোর মতো, এটি একটি ছোট জমির এলাকা (কেবল ১৮০ বর্গমাইল)। বিভিন্ন জাতিগতগোষ্ঠীর মিশ্রণে পর এর মোট জনসংখ্যা প্রায় ৮৫৪৭০। মোট অর্থনীতির প্রায় ৮০ শতাংশ পর্যটন খাতের সঙ্গে জড়িত থাকায় দেশটি একটি পর্যটন অর্থনীতির আকাক্সক্ষা অর্জন করেছে। দেশটি এখনও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য নয়। কমোরোস ॥ কমোরোস হচ্ছে দ্বীপপুঞ্জের একটি ছোট্ট দেশ, যা কৌশলগতভাবে ভারতীয় মহাসাগরে, আফ্রিকান মহাদেশের পূর্বে অবস্থিত। দেশটি মাদাগাস্কার এবং মোজাম্বিকের দেশগুলোর খুব কাছে অবস্থিত। দেশটির রাজধানী শহর ‘মোরনি’ নামে পরিচিত। আনুমানিক ৭৯৮০০০ জনসংখ্যার সঙ্গে দেশটির আয়তন প্রায় ২০৩৪ বর্গ কি.মি। দেশটির দ্বীপগুলো রাষ্ট্রপতি দ্বারা শাসিত হয়, যদিও একটি দ্বীপকে ফ্রান্সের একটি বিদেশী অঞ্চল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কুমোরস দ্বীপুঞ্জের প্রধান ধর্ম ইসলাম। অন্য দেশের তুলনায় এই দেশটি ক্ষুদ্রতর হওয়া সত্ত্বেও, যারা এটি দেখার জন্য যায় তারা এটিকে একটি গোপন রতœ হিসেবে বিবেচনা করে। ডোমিনিকা ॥ ডোমিনিকা দেশটিকে প্রায়ই সবাই ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র দেশ মনে করে বিভ্রান্ত হতে পারে। যা হোক, ডোমিনিকা একটি সার্বভৌম দ্বীপ যা গুয়াডেলুপের দক্ষিণ-পূর্ব এবং মার্টিনিকের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। দেশটির ছোট আয়তন বিশ্বের কম স্বীকৃত দেশগুলোর মধ্যে স্থান করে দিয়েছে। ২০১৬ সালের আদমশুমারির তথ্যানুসারে, দেশটির জনসংখ্যা আনুমানিক ৭২,৩২৪ জন। দেশটি প্রথমে কালিনাগো উপজাতি অধ্যুষিত ছিল, পরবর্তীতে ফরাসী দ্বারা উপনিবেশিত ছিল, ১৯৭৮ সালে দেশটি স্বাধীনতা অর্জন করে। রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে দেশটিতে সরকার গঠিত হয়। দেশটির মুদ্রা হচ্ছে, পূর্ব ক্যারিবিয়ান ডলার। এটি বিশ্বের সর্বনিম্ন মাথাপিছু জিডিপির দেশ। টুভালু ॥ দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত টুভালু একটি স্বাধীন দ্বীপ রাষ্ট্র। ২০১৩ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, দ্বীপের জনসংখ্যা প্রায় ৯৮৭৬ জন। টুভালু ভূমির দিক দিয়ে বিশ্বের অন্যতম একটি ক্ষুদ্রতম দেশ। দেশটির আকার এবং অবস্থান প্রায়ই বিশ্বের অন্য দেশের দৃষ্টি থেকে দেশটিকে লুকিয়ে রাখে। বৈজ্ঞানিক গবেষণা অনুযায়ী, ক্রমবর্ধমান সমুদ্রপৃষ্ঠ ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দ্বীপটি ভবিষ্যতে ডুবে যেতে পারে। নিউই ॥ নিউই নিউজিল্যান্ডের ১৫০০ মাইল উত্তর-পূর্বে অবস্থিত একটি ছোট দ্বীপ। এর জনসংখ্যা ১৪০০ এর কাছাকাছি। দেশটি জাতিসংঘের সদস্য নয়, যদিও ১৯৯৪ সালে জাতিসংঘের কাছ থেকে দেশটি আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে স্বাধীনতার সমতুল্য স্বীকৃতি পেয়েছে। নিউইয়ের বাসিন্দারা নিউজিল্যান্ডের নাগরিক এবং এর বেশিরভাগই নিউজিল্যান্ডের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। দেশটি মাছ ধরা এবং পর্যটন শিল্পের ওপর নির্ভরশীল।
×