ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ইমার্জিং টিমস কাপ, আফগানিস্তানের কাছে হেরে ভারতের বিদায়

বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ টাই

প্রকাশিত: ০৬:০০, ৩১ মার্চ ২০১৭

বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ টাই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চরম উত্তেজনা, চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতা। একবার বাংলাদেশের দিকে ম্যাচ দুলে। আরেকবার পাকিস্তানের দিকে ম্যাচ দুলে। স্নায়ুচাপে ভরপুর ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত টাই হয়েছে। কোন দলই জিতেনি। কোন দলই হারেনি। ইমার্জিং টিমস কাপে তাই বাংলাদেশ-পাকিস্তান গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচটি অমীমাংসিতই থাকল। টস জিতে আগে ব্যাট করে ৮ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ২৩৩ রান করে পাকিস্তান। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৩ রান করেন হার্সিল সোহেল। হুসেন তালাতের ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ৫৭ রান। বল হাতে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ৩টি, আবুল হাসান রাজু ও নাসুম আহমেদ ২টি করে উইকেট নেন। জবাবে ব্যাট করতে নেমে মুমিনুল হকের ৭৫, মোহাম্মদ মিঠুনের ৫৩, নাজমুল হোসেন শান্তর ৩০ রানে জয়ের কাছাকাছি গিয়েও পারেনি বাংলাদেশ। চরম উত্তেজনার ম্যাচে শেষ ওভারে গিয়ে ৭ রানের দরকার ছিল। কিন্তু তা নিতে পারেনি বাংলাদেশ। ৮ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভার খেলে ২৩৩ রানই করে। ম্যাচ তাই টাই হয়। তাতে করে পাকিস্তান বাজিমাত করল। রানরেটে এগিয়ে থেকে ‘বি’ গ্রুপের অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন দল হয় পাকিস্তান। বাংলাদেশ গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে সেমিফাইনালে খেলবে। তারাও গ্রুপ পর্বে অপরাজিতই রয়েছে। ‘এ’ গ্রুপে আপসেট ঘটেছে। আফগানিস্তানের কাছে ২ উইকেটে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে ভারত। এই গ্রুপ থেকে মালয়েশিয়াকে ২০৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে শ্রীলঙ্কা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়। শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান সেমিফাইনালে খেলা নিশ্চিত করে নিয়েছে। সমান ৪ পয়েন্ট পেয়েও রানরেটে এগিয়ে থেকে শ্রীলঙ্কা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়। আফগানিস্তান হয় দ্বিতীয়। ভারত সমান ৪ পয়েন্ট পেয়েওে রানরেটে পিছিয়ে পড়ে বিদায় নেয়। এখন চট্টগ্রামে শনিবার সেমিফাইনাল ম্যাচ দুটি হবে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা মুখোমুখি হবে। আর এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান লড়াই করবে। দুটি সেমিফাইনালের জয়ী দল ৩ এপ্রিল জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ফাইনাল ম্যাচে পরস্পরের প্রতিপক্ষ থাকবে। যে দল জিতবে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে। এ টুর্নামেন্টে অনূর্ধ-২৩ দলের ক্রিকেটাররা খেলছে। জাতীয় দলের চারজন করে ক্রিকেটারও খেলতে পারবেন। টেস্ট খেলুড়ে দল খেলছে চারটি-বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও ভারত। আর আইসিসির সহযোগী দেশ খেলছে চারটি-আফগানিস্তান, মালয়শিয়া, নেপাল ও হংকং। ভারত ছাড়া টেস্ট খেলুড়ে তিনটি দলই সেমিফাইনালে উঠেছে। আর সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে শুধু আফগানিস্তান সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা করে নিয়েছে। ২০১৩ সালে যে এ টুর্নামেন্টটি হয়েছিল, সেখানে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। এবার তারা গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছে। বাংলাদেশের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ ভালই ছিল। কিন্তু তারা পারেনি। কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শেষ ওভারে জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার ছিল ৭ রান। হাতে তখনও দুই উইকেট। উইকেটে সাইফুদ্দিন ও নাইম হাসান। প্রথম পাঁচ বলে পাঁচ রান নেয়া যায়। শেষ বলে নিতে হতো দুই রান। কিন্তু শেষ বলে সাইফুদ্দিন এক রানের বেশি নিতে না পারায় খেলা শেষ হয় ‘টাই’-এর মধ্য দিয়ে। পাকিস্তানের ছুড়ে দেয়া ২৩৪ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দ্রুত টপঅর্ডার হারায় বাংলাদেশ। সেই বিপর্যয়ে দলের ত্রাতার ভূমিকা নেন ঘরের ছেলে মুমিনুল হক। মাঝপথে ১১০ রানে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর মোহাম্মদ মিঠুনও হাল ধরেন। মুমিনুল ও মিঠুন মিলে পঞ্চম উইকেটে ৭৩ রানের জুটিও গড়েন। কিন্তু ১৮৩ রানে মুমিনুল আউটের পরই বাংলাদেশের হাত থেকে ম্যাচ ফসকে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। ২০১ রানে গিয়ে যখন মিঠুনও আউট হন, তখন ম্যাচ হাতছাড়া হয়ে গেছে ভাবা হয়। কিন্তু সাইফুদ্দিন (১৮*) শেষ পর্যন্ত দলকে নিয়ে যান। জয়ের সম্ভাবনাও জাগান। কিন্তু আর একটি রানই নেয়া যায়নি। না হলে ম্যাচটি বাংলাদেশই জিতত। পাকিস্তানও বাংলাদেশের বোলারদের সামনে শুরুতে সুবিধা করতে পারেনি। কিন্তু হারিস ও তালাত মিলে পাকিস্তানকে এত দূর নিয়ে যান। যা পাকিস্তানকে শেষ পর্যন্ত হার থেকে রক্ষা করে। বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত টাই হয়।
×