ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কুমাররা পেশা পাল্টাতে বাধ্য হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ২১ জানুয়ারি ২০১৭

কুমাররা পেশা পাল্টাতে বাধ্য হচ্ছে

কমদামের প্লাস্টিক সামগ্রীর দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে মৃৎশিল্প। এতে অনেকেই পেশা পরিবর্তন করছে। সুবিধাবঞ্চিত কুমারদের কেউ করছে মুদি দোকান, কেউবা চালাচ্ছে রিক্সা। কেউবা করছে দিনমজুরি। অথচ স্বাস্থ্যসম্মত মাটির পাতিলে রান্না খাবার নিরাপদ। আগের দিনে বিয়ে বা মেজবানি এবং যে কোন বড় অনুষ্ঠানে মাটির বাসনে খাবার পরিবেশন করা হতো। মাটির পাত্রে খাবার পাক করা হতো। মাটির তৈরি ফুলদানি, ফুলের টব, শিশুদের খেলনা, মাটিয়া ব্যাংক ইত্যাদির চাহিদা এখনও রয়েছে। এক সময় লক্ষ্মীপুর, সদর, রামগতি, রামগঞ্জ, রায়পুরে দু’শতাধিক নারী-পুরুষ এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত ছিল। বাজারেও তাদের তৈরি তৈজসপত্রের চাহিদা ছিল। এখানে তৈরি হতো হাঁড়ি-পাতিল, পাতিলের ঢাকনা বা বন্ডা, মালসা, মিটকি, ছোট-বড় মটকা, পিঠার খাঁজ, খই মুড়ির খোলা, বর্তমানে ৩৫-৪০ পরিবার আদি পেশা হিসেবে শিল্পটিকে ধরে রেখেছে। এর মধ্যে রয়েছে সদর উপজেলার দক্ষিণ মজুপুরে তিনটি, নন্দনপুরে ৩০-৩৫ পরিবার এখনও এ শিল্পকে আঁকড়ে ধরে লড়াই করে যাচ্ছে। জেলা সদর মাছ বাজার, মান্দারী বাজার, রায়পুর এবং রামগঞ্জে হাতেগোনা ১০-১২টি এ শিল্পের দোকান রয়েছে। এর মধ্যে এক সময় শিশুদের খেলনা যেমন টিয়া, ময়না, হাঁতি-ঘোড়াসহ মাটির ব্যাংক ইত্যাদি তৈরি করেছে। আবার যেসব মাটির জিনিস লক্ষ্মীপুরে তৈরি হতো না, সেসব ঢাকার বুদ্ধপাড়া, বরিশাল, পটুয়াখালী থেকে নৌকাতে করে আনা হতো। গোপী কৃষ্ণ পাল জানান, বাজারে কম দামে প্লাস্টিক সামগ্রী বিক্রি হওয়ার কারণে মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিলসহ যাবতীয় সামগ্রীর চাহিদা কমে গেছে। তাছাড়া স্থানীয়ভাবে এসব সামগ্রী তৈরির মাটি পাওয়া যায় না। জ¦ালানি খরচ ও শ্রমিকের মজুরিও বেশি। অপরদিকে সরকারী বা বেসরকারীভাবে এ শিল্পে পৃষ্ঠপোষকতায় কেউ এগিয়ে আসছে না। বর্তমানে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত তারা খুবই কষ্টে দিনাতিপাত করছে। চড়া মূল্যে মাটি কিনে সামগ্রী তৈরি করে তারা পোষাতে পারছে না। এ ব্যবসার চাহিদা কমে যাওয়ায় তিনি মাটির হাঁড়ি পাতিলের সঙ্গে মুদি ব্যবসাও করেন। এককভাবে এর ওপর নির্ভর করে সংসার চালানো কঠিন। Ñমহিউদ্দিন মুরাদ, লক্ষ্মীপুর থেকে
×