ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কোহিনূর হীরার রক্তাক্ত ইতিহাস

প্রকাশিত: ০৩:৪২, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৬

কোহিনূর হীরার রক্তাক্ত ইতিহাস

অনেক মূল্যবান পাথরের রক্তাক্ত ইতিহাস আছে। বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত হীরা কোহিনূরও তাই। তবে এটি অন্য সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে। তেমনি একটি নতুন গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে যাতে রক্তাক্ত ইতিহাসের বিভীষিকাময় বর্ণনা রয়েছে। এতে ভারতীয় উপমহাদেশজুড়ে প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ছিল সবচেয়ে বেশি রক্তাক্ত ও ভয়ঙ্কর। খবর এএফপির। কোহিনূর (মাউন্টেন অব লাইট) এখন ব্রিটিশ রানীর রতœভা-ারের অংশ। এটি ভারতীয় উপমহাদেশজুড়ে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের উৎপত্তি ও পতনের সাক্ষী হয়ে আছে। বর্তমানে এর মালিকানা নিয়ে ব্রিটেন ও ভারতের মধ্যে এক তিক্ত বিতর্ক রয়েছে। ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ উইলিয়াম ডালরিম্পল ও সাংবাদিক অনিতা আনন্দ মিলে ‘কোহিনূর : দ্য স্টোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ডস মোস্ট ইনফেমাস ডায়মন্ড’ নামে একটি গ্রন্থ সঙ্কলন করেছেন। উইলিয়াম ডালরিম্পল বলেন, এটি একটি অবিশ্বাস্য সহিংস গল্প... যারাই এর সংস্পর্শে এসেছে বা একে মালিকানায় নিয়েছে তাদের অধিকাংশই বিভীষিকাময় জীবন অতিবাহিত করেছে। আমরা বিষ প্রয়োগে হত্যা, বেদম প্রহার করে মৃত্যু নিশ্চিত করা, ইট দিয়ে মাথায় আঘাত, অনেক যন্ত্রণা, গরম সুই দিয়ে অন্ধ করার মতো বিভীষিকাময় কাহিনী এতে পেয়েছি। বিশেষ এক বিভীষিকাময় ঘটনার গ্রন্থ সম্পর্কে বলতে গিয়ে সঙ্কলক উইলিয়াম বলেন, হীরাটির অবস্থান প্রকাশ করতে বাধ্য করার জন্য পারস্যের এক রাজকুমারের মুকুটের মধ্যে গলিত সিসা ঢেলে দেয়া হয়। সে হীরাটি আজ লন্ডনের প্রয়াত রানীমাতার মুকুটের অংশ হিসেবে টাওয়ার অব লন্ডনে জনসাধারণের জন্য প্রদর্শিত হয়। ঐতিহাসিকগণ মনে করেন, মোগলদের রাজত্বকালে সম্ভবত প্রথম ভারতে এটির সন্ধান মেলে। রেকর্ড অনুযায়ী কোহিনূরের কথা প্রথম জানা যায় ১৭৫০ সালে। সে সময় মোগল রাজধানী দিল্লী আক্রমণ করেন পারস্যের শাসক নাদির শাহ। নাদির শাহ রাজধানী দিল্লী লুট করে ময়ূর সিংহাসনসহ কোষাগারে রাখা যাবতীয় মূল্যবান পাথরের সঙ্গে কোহিনূর নিয়ে যান। উইলিয়াম বলেন, ময়ূর সিংহাসন বিশ্বের সবচেয়ে দামি আসবাব হিসেবে আজও সমাদৃত। এর খরচ তাজমহলের খরচের চারগুণ, যাতে সবচেয়ে উৎকৃষ্টমানের রতেœর মধ্যে একটি ছিল কোহিনূর। এটি মোগলরা বানিয়েছিল। সে সময় কোহিনূর এত বিখ্যাত হয়নি। কিন্তু মোঘলদের কাছে রুবির মতো রঙ্গিন স্বচ্ছ পাথর অধিক পছন্দের ছিল। মোগল সাম্রাজ্যের পতনের পর কোহিনূরকে মুসলিম এক ধর্মীয় প-িত পাথর পেপারওয়েট হিসেবে ব্যবহার করেন। এছাড়া পাঞ্জাবের শিখ রাজা একে তার বাহুবন্ধনীতে লাগিয়ে ব্যবহার করতেন।
×