জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ শুক্রবার ফরিদপুর, সিরাজগঞ্জ ও মাগুরায় সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে চারজন। এর মধ্যে ফরিদপুরের মধুখালী ও ভাঙ্গায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় চাচা-ভাতিজাসহ তিনজন, সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় স্বামী-স্ত্রী ও মাগুরায় একজন নিহত হয়েছে। খবর নিজস্ব সংবাদদাতা ও স্টাফ রিপোর্টারের পাঠানো।
জানা গেছে, ফরিদপুরের মধুখালী ও ভাঙ্গায় পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে মধুখালীতে যাত্রীবাহী বাসের নিচে চাপা পড়ে দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছে। এছাড়া ভাঙ্গায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে এক চাকরিজীবী পুরুষ নিহত হয়েছে। মধুখালীর ঘটনার প্রতিবাদে এলাকাবাসী ওই বাসটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।
জানা যায়, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা থেকে খুলনাগামী হানিফ পরিবহনের একটি বাস মধুখালী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের পাইককান্দি নামক স্থানে একটি মোটরসাইকেলকে চাপা দেয়। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহী মধুখালী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের পাইককান্দি গ্রামের প্রবাসী মাসুদ মোল্লা (৩৫) ও তার চাচা হায়দার হোসেন (৪৫) ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। দুর্ঘটনার পর চালক বাসটি দ্রুত চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং বাসটি দুর্ঘটনাস্থল থেকে দুই শ’ গজ দূরে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়। এ সময় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী খাদে পড়ে যাওয়া হানিফ পরিবহনের বাসটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। পরে ফরিদপুর থেকে দমকল বাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়। এ সময় ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মহাসড়কের উভয় পাশে শত শত গাড়ি আটকা পড়ে। বাসচালক পালিয়ে গেছে। পুলিশ বাসটি জব্দ করেছে। মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, ঘটনার পর বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে ২০ মিনিট পর পুনরায় বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যায়।
এছাড়া ভাঙ্গায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে এবিএম ইকরামুল হক (৪৮) নামে এ ব্যক্তি নিহত হয়েছে। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা পৌরসভার বিশ্বরোড মোড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত এবিএম ইকরামুল হক মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের বাসিন্দা। সে ঢাকায় একটি বেসরকারী কোম্পানিতে চাকরি করত। ঢাকা থেকে মাদারীপুরগামী সার্বিক পরিবহনের একটি বাসে করে একরামুল হক ভাঙ্গায় এসে নামার পর ওই গাড়ির পেছনের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। দুর্ঘটনায় পর বাসটি পালিয়ে যায়।
সিরাজগঞ্জ ॥ শুক্রবার সকালে জেলার সলঙ্গায় হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কে সলঙ্গা থানার চড়িয়া এলাকায় প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে স্বামী-স্ত্রীর নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় একই পরিবারের আরও চারজন আহত হয়েছে। নিহতরা হলোÑ ওয়ালটন গ্রুপের সহকারী প্রকৌশলী টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী উপজেলার কালিহাতী গ্রামের সৈয়দ আবু বক্কার সিদ্দিকীর ছেলে সাখাওয়াত হোসেন (৩৫) ও তার স্ত্রী হালিমা আক্তার (২৫)। আহতরা হলোÑ একই পরিবারের সৈয়দ আবু বক্কার সিদ্দিকী (৬৫), তার স্ত্রী সালেহা খাতুন (৫৫), মেয়ে তুলি খাতুন (২৫) ও দ্বীপ (৮)।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, সাখাওয়াত হোসেন তার পরিবারসহ প্রাইভেটকারযোগে টাঙ্গাইল থেকে নাটোরের বনপাড়ায় আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে যাচ্ছিল। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রাইভেটকারটি ঘটনাস্থলে পৌঁছলে এর চাকা খুলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এতে প্রাইভেটকারে থাকা একই পরিবারের ছয় যাত্রী গুরুতর আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠায়। সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর সোয়া ১টার দিকে সাখাওয়াত ও হালিমা আক্তার মারা যায়। বাকিরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মাগুরা ॥ শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মাগুরা-ঢাকা মহাসড়কের মাগুরা পৌর এলাকার পারনান্দুয়ালী ব্র্যাক অফিসের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় আইসক্রিম কারখানার ম্যানেজার আরিফ হোসেন (৪০) নিহত হয়েছে। আরিফ হোসেন মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার দ্বারিয়াপুর গ্রামের আব্দুল হকের ছেলে ।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মাগুরা-ঢাকা মহাসড়কের মাগুরা পৌর এলাকার পারনান্দুয়ালী ব্র্যাক অফিসের সামনের সড়ক পার হওয়ার সময় ঢাকাগামী একটি বাস তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলে সে নিহত হয়। নিহত আরিফ হোসেন মাগুরা পৌর এলাকার পারনান্দুয়ালী এলাকায় অবস্থিত একটি আইসক্রিম কারখানায় ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করত।
সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগ সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালে আনার পূর্বেই তার মৃত্যু হয়। লাশ সদর হাসপাতালে রয়েছে। বাসসহ চালক পালিয়ে গেছে।