ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা

পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ১২.৭৩ শতাংশ

প্রকাশিত: ০৪:০৬, ২৮ আগস্ট ২০১৬

পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ১২.৭৩ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সব ধরনের মূল্যসূচক কমলেও বেড়েছে লেনদেন। আলোচ্য সপ্তাহে এ বৃদ্ধির পরিমাণ ছিল ১২ দশমিক ৭৩ শতাংশ। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ব্যাংক, টেলিযোগাযোগ, খাদ্য-আনুষঙ্গিক, ওষুধ-রসায়নের মতো বড় মূলধনী খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির দরপতনে একদিকে সূচক কমেছে, অন্যদিকে বেড়েছে লেনদেন। সপ্তাহ শেষে ডিএসইর দৈনিক গড় লেনদেন ৫০০ কোটি টাকা ছাড়ায়, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৪৪৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা। ডিএসইতে ১২৬টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও কর্পোরেট বন্ডের দরবৃদ্ধির বিপরীতে সপ্তাহ শেষে কমেছে ১৭৫টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৬টির বাজারদর। লেনদেন হয়নি দুটি সিকিউরিটিজের। সিএসইতে ১০১টির দরবৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১৫৪টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৫টির বাজারদর। বাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে বড় মূলধনী, স্বল্প মূলধনী সব ক্যাটাগরির কোম্পানিতেই কম-বেশি মুনাফা করেছেন বিনিয়োগকারীরা। আসন্ন ঈদ-উল-আযহা সামনে রেখে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছু মুনাফা তুলে নেয়ার একটি প্রবণতা শুরু হয়েছে। এছাড়া ৪ হাজার ৬০০ পয়েন্টের মনস্তাত্ত্বিক বাধা সব ক্যাটাগরির বিনিয়োগকারীর ক্ষেত্রেই কাজ করেছে। বিনিয়োগকারীদের কাছে সপ্তাহের উল্লেখযোগ্য খবরগুলো ছিল অর্থবছর শেষে চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত অর্ধেকে নেমে আসার আশঙ্কা, ট্রেজারি বন্ড ও বিলের সুদ কমে আসা, চীনে বাংলাদেশের চামড়া, তামাকসহ ১৭টি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের আলোচনা ও ব্যাংকিং খাতের খেলাপী ঋণ বাড়তে থাকা। খাতভিত্তিক চিত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, ডিএসইতে আগের সপ্তাহের মতোই লেনদেনে প্রাধান্য ধরে রাখে প্রকৌশল খাত। স্টক এক্সচেঞ্জটির মোট কেনাবেচায় এ খাতের কোম্পানিগুলোর অবদান ২০ থেকে ২১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এদিকে আগের সপ্তাহে দুই নম্বরে থাকলেও এ সপ্তাহে ওষুধ-রসায়ন খাতের অবস্থান তৃতীয় অবস্থানে নেমে এসেছে। বিপরীতে বিদ্যুত-জ্বালানি খাতের অংশ ১১ থেকে ১৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। সমাপ্ত সপ্তাহে ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯২ দশমিক ৭৯ শতাংশ। ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ২ দশমিক ২৯ শতাংশ। ‘এন’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ। ‘জেড’ ক্যাটাগরির লেনদেন হয়েছে দশমিক ৭৫ শতাংশ। ডিএসইর সার্বিক সূচক বা ডিএসইএক্স সূচক কমেছে দশমিক ৬৭ শতাংশ বা ৩০ দশমিক ৮১ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই৩০ সূচক কমেছে ১ দশমিক ০১ শতাংশ বা ১৭ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট। অপরদিকে, শরিয়াহ বা ডিএসইএস সূচক কমেছে ১ দশমিক ২৬ শতাংশ বা ১৪ দশমিক ১৪ পয়েন্টে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩২৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১২৬টি কোম্পানির, কমেছে ১৭৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬টির। আর লেনদেন হয়নি দুটি কোম্পানির শেয়ার। সাপ্তাহিক লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো- মবিল যমুনা বাংলাদেশ, শাহজিবাজার পাওয়ার, ন্যাশনাল টিউবস, বাংলাদেশ স্টিল মিলস লিমিটেড, ব্র্যাক ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মা, কেয়া কসমেটিকস, আমান ফিড মিলস লিমিটেড, এ্যাকমি ল্যাবরেটরিজ ও অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ। দরবৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো- ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স, ন্যাশনাল টিউবস, এমবি ফার্মা, এ্যাপেক্স ফুডস, এ্যাটলাস বাংলাদেশ, ডেল্টা লাইফ, জিকিউ বলপেন, রহিম টেক্সটাইল, মেঘনা সিমেন্ট ও এসএমইএল লেকচার মিউচুয়াল ফান্ড। দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো- ৮ম আইসিবি, স্কয়ার টেক্সটাইল, রহিমা ফুড, বিডি ওয়েল্ডিং, এএলআই মিউচুয়াল ফান্ড, সোনারাগাঁও টেক্সটাইল, দুলা মিয়া কটন, ঝিল বাংলা সুগার, সাউথ ইস্ট মিউচুয়াল ফান্ড ও লিব্রা ইনফিউশন। এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সেচঞ্জে (সিএসই) লেনদেন হয়েছে ১০০ কোটি ২৬ লাখ টাকার শেয়ার। তবে সার্বিক সূচক কমেছে দশমিক ৭৪ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ২৮১টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১০১টির, কমেছে ১৫৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৫টির।
×