অনলাইন ডেস্ক ॥ বয়স ছয়। স্কুল টালিগঞ্জ গার্লস। পার্মানেন্ট অ্যাড্রেস মালদহ। আর প্রেজেন্ট, প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড।
এই ছ’বছরেই সে গত কয়েক মাস ধরে নিয়ম করে সন্ধে সাড়ে ছ’টার স্লটে হাজির হচ্ছে বাঙালির ড্রইংরুমে। সৌজন্যে ‘পটলকুমার গানওয়ালা’। না! ‘পটল’ আজকের সাবজেক্ট নয়। আজ ফোকাসে রিল লাইফের এই ছ’বছুরে। ‘তুলি’। রিয়েল লাইফের সিঞ্চনা সরকার। ওই জনপ্রিয় ধারাবাহিকের খলনায়িকা। হ্যাঁ, নায়িকাই বলা যায়। কারণ তার অভিনয় নায়িকাসুলভ তো বটেই। আর কথা বলা, তাকানো, এক্সপ্রেশন— সবেতেই ‘ভিলেন’ এলিমেন্ট স্পষ্ট। তাই ‘খল’নায়িকা। সে কারণেই সব লাইমলাইট এই মুহূর্তে ‘তুলি’র ওপর। ভাল অভিনয়ের প্রশংসা তো ঝুলিতে রয়েইছে। কিন্তু, সেটা ছাপিয়ে উঠে আসছে বিতর্ক।
প্রশ্ন উঠছে, এই বয়সের শিশু অভিনেতাকে দিয়ে এই নেগেটিভ চরিত্র করানোটা কতটা যুক্তিসঙ্গত? সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নিয়ে চলছে বিস্তর চর্চা।
সপাট জবাব দিলেন সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘এটা একদম ঠিক হচ্ছে না। মোটেই ভাল মেসেজ নয়। আমি তো বলব অত্যন্ত কুরুচির পরিচয়। আমার বাড়িতেও এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমি দেখেছি, মেয়েটি এত বুদ্ধি করে দুষ্টুমি করে যেটা ওর পক্ষে করা অসম্ভব। বাস্তবে এমন মেয়ে আছে কিনা আমার জানা নেই। তবে এতটা নেগেটিভ দেখানো বোধহয় ঠিক নয়। শিশু তো কাদার তাল। ওর মনেও তো প্রভাব পড়তে পারে!’’
দীর্ঘদিন ধরে ‘তুলি’র চরিত্রে অভিনয় করতে করতে বাস্তবে সিঞ্চনার অ্যাটিটিউডেও কি কোনও পরিবর্তন হতে পারে?
‘‘আশঙ্কাটা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে ওকে না দেখে বলাটা বেশ মুশকিল। দেখতে হবে কতটা ও নিজে অভিনয় করছে, আর কতটা ওকে দিয়ে করানো হচ্ছে’’ বলছেন মনোবিদ মোহিত রণদীপ।
আদৌ কতটা বদলেছে ছোট্ট সিঞ্চনা? শেয়ার করলেন ‘তুলি’র মা রীতা সরকার। বললেন, ‘‘দেখুন আমার মেয়ে ক্যামেরার সামনে তুলি আর ক্যামেরা অফ হলেই সিঞ্চনা। আমার মনে হয়নি ওর কোনও চেঞ্জ হয়েছে। ও ভাল অভিনয় করছে। আমি তাতেই খুশি।’’
আর দর্শক? যাঁরা অভিনেতাদের কাছে ভগবান? তাঁদের মধ্যে ‘তুলি’র নেগেটিভিটির প্রভাব কতটা?
‘‘বড়দের কুচুটেপনাটা আমি দেখি না। কিন্তু ওরটা দেখছি। এ বার সেরা খলনায়িকার অ্যাওয়ার্ড ওর বাঁধা।’’—বললেন পঞ্চাশোর্ধ গৃহবধূ কৃষ্ণা মজুমদার। কলেজ পড়ুয়া শ্রীতমার কথায়, ‘‘তুলি অভিনয়টা ফাটাফাটি করছে কোনও সন্দেহ নেই। সে জন্যই গায়ে জ্বালা ধরছে আমাদের। তবে আমার ভাইঝি ক্লাস ফোরে পড়ে। ওকে আমরা সিরিয়ালটা দেখতে দিই না। কারণ ওটা দেখে ওই অ্যাটিটিউটা ও যদি কপি করার চেষ্টা করে, সেই ভয়টা তো আছেই।’’
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: