ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ফিলাডেলফিয়ায় ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতাদের মনোযোগ আকর্ষণ করছে প্রশ্ন

ট্রাম্পকে জেতাতে পুতিনের হস্তক্ষেপ!

প্রকাশিত: ০৩:৪০, ২৭ জুলাই ২০১৬

ট্রাম্পকে জেতাতে পুতিনের হস্তক্ষেপ!

একটি অস্বাভাবিক প্রশ্ন সাইবার বিশেষজ্ঞ, রুশ বিশ্লেষক ও যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায় ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতাদের মনোযোগ আকর্ষণ করছে যে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন কি মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অযাচিত হস্তক্ষেপ করছেন? ক্রেমলিন কি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সহায়তা করছে? শুক্রবার পর্যন্ত শুধু এমন জল্পনা চলতে থাকে। কিন্তু ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কমিটির (ডিএনসি) কম্পিউটার সার্ভার থেকে চুরি হওয়া প্রায় ২০ হাজার ই-মেল শুক্রবার প্রকাশিত হওয়ার পর ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিতে রুশ গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকা নিয়ে আলোচনা জোরালো হয়। খবর ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমস ও এএফপির। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সোমবার ঘোষণা দিয়েছে, তারা এ ই-মেল হ্যাকিংয়ের ঘটনা তদন্ত করে দেখছে। এদিকে লাওসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সঙ্গে বৈঠকের আগে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এ ই-মেল হ্যাকের পেছনে মস্কোর হাত থাকার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন। এছাড়া ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ অভিযোগকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে অভিহিত করেছেন। ই-মেলগুলো প্রথমে এক সন্দেভাজন হ্যাকার ও পরে উইকিলিকস ফাঁস করে দেয়। ফাঁস হওয়া মেলগুলোতে দেখা গেছে, বাছাইপর্বের নির্বাচনগুলোতে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কর্মকর্তারা একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী ভারমন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডারসের চেয়ে হিলারি ক্লিনটনের প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখিয়েছেন। এ ঘটনার পর চাপের মুখে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জাতীয় সম্মেলনের আগের দিন রবিবার ডিএনসি চেয়ারম্যান ডেবি ওয়াসারম্যান শুল্জ পদত্যাগ করেন। সাধারণত সাইবার হামলার সূত্র খুঁজে পাওয়া অনেক কঠিন হয়। তবে গবেষকরা এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, ডিএনসির কম্পিউটার সার্ভারে রাশিয়ার দুই গোয়েন্দা সংস্থা হামলা চালিয়েছে। একই হামলাকারীরা এর আগে গত বছর হোয়াইট হাউস, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জয়েন্ট চীফস অব স্টাফের সার্ভারে সাইবার অভিযান পরিচালনা করেছিল। এদিকে প্রকাশিত ই-মেলের মেটাডাটায় দেখা গেছে, রুশ কম্পিউটারের মাধ্যমে তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে। উইকিলিকসকে এ ই-মেলগুলো দেয়ার দায়িত্ব যে হ্যাকার স্বীকার করেছে, সেই প্রধান সন্দেহভাজন। এ হ্যাকারকে পুতিন নির্দেশ দিয়েছেন নাকি কোন তোষামোদকারী পুতিনকে সন্তুষ্ট করতে এ কাজ করেছে, তা নিছকই অনুমান। হিলারির নির্বাচনী প্রচারের ম্যানেজার রবি মুক রবিবার সকালে এবিসি নিউজের ‘দিস উইক’ অনুষ্ঠানে বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সহায়তার উদ্দেশে রুশরা ই-মেলগুলো ফাঁস করেছে। তবে তিনি বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃতি ছাড়া আর কোন প্রমাণ উপস্থাপন করেননি। মুক আরও বলেন, রুশদের ট্রাম্পকে সমর্থনের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। রিপাবলিকান মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ট্রাম্প গত সপ্তাহে নিউইয়র্ক টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, যদি ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো রাশিয়ার হামলার শিকার হয়, তাহলে হয়ত তিনি ওই দেশগুলোকে সমর্থন করবেন না। তিনি প্রথমে মনে করতেন, ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর আটলান্টিক জোটে যথেষ্ট অবদান রয়েছে। ট্রাম্পের প্রচার শিবির থেকে এমন অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করা হয়েছে এবং পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের কোন ধরনের সম্পর্ক না থাকার ওপরই জোর দেয়া হয়েছে। ট্রাম্পের সঙ্গে কি পুতিনের কোন সম্পর্ক রয়েছে- এবিসি টিভিতে ট্রাম্পের প্রচার শিবিরের প্রধান পল মানাফোর্টের উত্তর- না, কখনই না। এটা পুরোপুরি ভিত্তিহীন। ট্রাম্পের ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র সিএনএনকে বলেছেন, এটি হিলারির প্রচার শিবিরের নোংরামি এবং আমি মনে করি এর চেয়ে বড় মিথ্যা হতে পারে না। এফবিআই এক বিবৃতিতে বলেছে, এফবিআই এরই মধ্যে এ ই-মেল ফাঁসের বিষয়ে তদন্তে নেমেছে। এ ধরনের ঘাটতিকে (সাইবার অনুপ্রবেশের সুযোগ) আমরা খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। এফবিআই তদন্ত চালিয়ে যাবে এবং সাইবার স্পেসে এ হুমকি যারা এনেছে, তাদের ধরা হবে।
×