ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মণীশ রায়

কড়াদা বাঁচতে চেয়েছিল

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ২২ জুলাই ২০১৬

কড়াদা বাঁচতে চেয়েছিল

(পূর্ব প্রকাশের পর) কড়াদা বলে উঠল, ‘অহনও ভয় যায় নাই তর? আমি খারাপ ভূত নারে। আগেও আছিলাম না। অহনও নাই।’ ঠিক তখনি বাজ পড়ার শব্দ হল একটা। নিমিষে উজ্জ্বল হয়ে ঝনঝন করে কেঁপে উঠল চারপাশ। প্রকৃতির এই আগুন-হাওয়া-শব্দের খেলায় ভীত হয়ে প্রচ- বেগে বাড়ির দিকে ছুটে এলাম আমি। পিছনে শুনতে পেলাম কড়াদা হাসছে। কিন্তু আমি আর সেদিকে তাকাইনি। সোজা দাদাজানের ঘরে এসে আশ্রয় নিলাম। স্ত্রী রাবেয়া আমাকে কিছুক্ষণ পরখ করে একটি তোয়ালে বাড়িয়ে দিল হাতে। আমি ভেজা শরীর মুছে নিয়ে বোকার মত হেসে বললাম, ‘অনেকদিন বৃষ্টির জলে ভিজি নাত। ইচ্ছে হল।’ ‘ঠা-া লাগলে আমি সেবা করতে পারব না।’ মুখ ঘুরায় ও। রাবেয়া জানে আমার মাঝে কিছু পাগলামি রয়েছে, যা সংসারী মানুষের সঙ্গে ঠিক যায় না। তবু দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে সেগুলো যেহেতু সে হজম করেছে সেহেতু আমার এই আচরণ ওকে খুব একটা ভাবাচ্ছে বলে মনে হয় না। সে যথারীতি অন্য কাজে মনোযোগী হয়ে ওঠে। রাতে আমি দাদাজানের ঘরে একা শুই। ঘুম না আসা পর্যন্ত আমি কড়াদার মুখখানা ভাববার চেষ্টা করছি। দুপুরে যে ঘটনাটি ঘটে গেল তা মনের ভুল ভেবে যত মন থেকে তাড়াতে চাইছি তত সেটি সেঁধিয়ে যেতে চাইছে আমার ভেতর। মদালস বৃষ্টিবেলার একটা নেশা রয়েছে; কড়াদা হয়তো সেই নেশারই এক অংশ। কদিন পর ঠিকই এই মরীচীকা-ভাবনার অর্থহীনতা খুঁজে পাব। এসব তালগোল পাকানো ভাবনা-চিন্তা করতে করতেই একসময় ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘুমের ভেতর সহসা মনে হল কেউ আমার বিছানার পাশে বসে আমার নাম ধরে ডাকছে, ‘শরাফত শরাফত। আমারে দেখতে পাইতাছিস? আমি এইখানে।’ ঘুমচোখ মেলতেই চোখের সামনে কড়াদার গ্র্যানাইট পাথরের মত কঠিন মুখ; গোল চোখে হাসির ঝিলিক। চোখে চোখ পড়তেই বলে উঠল, ‘শীত নাই, গ্রীষ্ম নাই, নিজের জান বাজি রাইখা শীতলক্ষ্যার এত মাছ তগোরে খাওয়াইছি আর আমারে একটা রীটা মাছ ভাজা খাওয়াবি না শরাফত?’ সঙ্গে সঙ্গে আমি জেগে উঠলাম। অন্ধকারে কাউকে দেখতে পাচ্ছি না। কিন্তু স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি ভাজা রিটা মাছ খাওয়ার জন্য কড়াদার দীর্ঘশ্বাসের শব্দ। পরদিন আমি বাড়ির কাউকে না জানিয়ে দুটো ছোট রিটা বাজার থেকে কিনে নিয়ে একটি স্থানীয় হোটেলে দিয়ে বললাম, ‘এটি ডুবো তেলে ভেজে দিতে হবে কড়া করে। সঙ্গে ভাত, পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচ দেবে।’ লোকটি আমাকে চেনে। প্রথমদিকে কিছুটা বিস্মিত হলেও কোন প্রশ্ন না করে সেগুলো রেধে দিল। আমি ভাতের সঙ্গে ভাজামাছ নিয়ে চলে এলাম তমাল গাছের নিচে। সেখানে মাছের পোঁটলাটা রেখে ফিরে আসতে চাইলাম। তখনি চোখ পড়ল তমালের সবুজ পাতার আড়ালে কড়াদার উজ্জ্বল মুখখানার ওপর। আজ আমার ভয় করছে না। বরং ভাল লাগছে এই ভেবে যে কড়াদার একটি সাধ আমি পূরণ করতে পারছি। এর সঙ্গে কোন বাস্তব জ্ঞানগম্যি মিশে না থাকলেও আমি যে তৃপ্তি পাচ্ছি তাতে কোন সন্দেহ নেই। এও বা কম কি? কোন মানুষকে ভালবাসলে তার জন্য কিছু করতে কার না মন চায়? আর কড়াদা তো আমার কৈশোরের ইন্দ্রনাথ, তার জন্য মন তো কিছুটা হলেও আনচান করবে, তাই না? খেতে খেতে কড়াদা কত কথাই না বলল। সবই পুরনো কথা। নিজের মা আর আমার দাদাজানের কথা বলতে গিয়ে চুপ হয়ে রইল কিছুক্ষণ। মনে হল কন্ঠটা ধরে এসেছে। পরক্ষণে নানারঙের সেই দিনগুলো নিয়ে অনর্গল কথা বলতে শুরু করল। থামতেই চায় না। নদীর ঢেউর মত কলকল খলখল করছে কড়াদার কণ্ঠস্বর। আজ প্রকৃতি কিছুটা শান্ত। নদীপাড়ের উতল-হাওয়া প্রকৃতির ভেতর কিছুটা উদাসীনতা ছড়িয়ে দিলেও গতকালের মত ঝড়ো হাওয়া নেই। বেশ মনোরম আর প্রেমময় দেখাচ্ছে নদীপাড়ের মুখখানা। খাওয়া-দাওয়া শেষে হঠাৎ কড়াদা আমাকে প্রশ্ন করে বসল, ‘এত কথা কইলাম, কই, তুই তো কোন প্রশ্ন করলি না? প্রশ্ন নাই তর?’ আমার সাহস বেড়ে গেছে। এখন আমি আর পঞ্চাশোর্ধ্ব কোন প্রৌঢ় নই। আমি সেই কিশোর, কড়াদার হাত ধরে হাঁটছি আর মনে যা আসছে তা-ই অকপটে বলে চলেছি। আর কড়াদাও নদীর হাওয়া শরীরে মেখে যা খুশি তাই একটা উত্তর দিয়ে সেই কিশোরকে মুগ্ধ করতে চাইছে। ‘কি প্রশ্ন আর করব? তোমারে দেখতে পেলাম। এটাই বড় কথা।’ আমি কথা বাড়াতে চাইলাম না। ‘ছোটবেলায় এই নদীর ধারে হাঁটতে হাঁটতে কত কতাই না জিগাইতি। আমি গোঁজামিল দিয়া উত্তর দিতাম। তর মতন লেহাপড়া জানা পোলার লগে কি আমি পারি?’ বলে হেঃ হেঃ করে হেসে উঠল কড়াদা। ‘তুমি নিখোঁজ হলে কি করে?’ প্রশ্নটা বুকের ভেতর চেপেছিল অনেকদিন। দীর্ঘ চল্লিশ বছর। আজও ভেবেছিলাম, অপ্রিয় বিষয়টা আর সামনে আনব না। দৈবক্রমে কড়াদা আমার কাছে ভাজামাছ আর ভাত খেতে চেয়েছে। আমি খাইয়ে ফিরে যাব। এই অলৌকিক ঘটনাটি হয়তো কাউকেই আমি বলতে পরব না। কেউ শুনলে বিশ্বাসও করবে না। হয়তো ভাববে, সরকারি চাকরি করে করে এই বয়সে এসে মাথাটা আমার খারাপ হয়ে গেছে, বেচারা! তবু প্রশ্নটা সাহস করে জিজ্ঞাসা ফেললাম। সত্য জানবার অধিকার তো সবার রয়েছে। কিছু সত্য পুলিশ তদন্ত করে বের করে নেয়। কড়াদা তো সেরকম মানুষ নয়; সে অতি তুচ্ছ অতি সাধারণ এক মানুষ। এদেশের অখ্যাত গ্রামের নাম না জানা মানুষের কাতারে তার স্থান। তার কথা কি কোন থানার ওসি বের করার দায়িত্ব নেবে? যদি কড়াদার নিরুদ্দেশ হবার কথা দৈবসূত্রে পেয়ে যাই তাহলে কার কি ক্ষতি? আমিও তো ছাপোষা এক মানুষ; সাংসারিক ঝুট-ঝামেলায় সারাক্ষণ ঘুর্ণায়মান এক রোজগেরে পুরুষ। আমার পক্ষে এই অলৌকিক সত্য নিয়ে কি নাড়াচাড়া করা সম্ভব? আমি হলাম শহুরে মধ্যবিত্ত; যা কিছু আমার সঞ্চয় তা রক্ষা করতে মরিয়া আমি। সেই আমি যেচেবুঝে পাগলের টুপি পরব নাকি মাথায়, পাগল! তবু প্রশ্নটা করি। আমরা যেভাবে খবরের কাগজ পড়ি ঠিক সেভাবে প্রশ্নটা তুলে দিলাম কড়াদার প্লেটে। খবরের কাগজ পড়ে কোন মধ্যবিত্ত কি বিপ্লবী হয়েছে কোনদিন? আমিও এ প্রশ্নটার উত্তর পেলে মনে মনে কদিন হয়তো গজগজ করব। তারপর একশ আটটা নতুন খবরে মুখ ঢেকে ভুলে যাব সব। অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যত পুনরায় নতুন ধারাভাষ্য তৈরি করবে আমার কাছে। চিরবিশ্বাসী মন এক ডাল থেকে অন্য ডালে চড়ে পৃথিবী দেখবে আর ক্ষণে ক্ষণে নিজের দিকে তাকিয়ে সুখী ও তৃপ্ত মুখ করে ভাববে, ভালোই তো আছি। এই বা কজন থাকে? সেই আমি কড়াদাকে প্রশ্নটা করে যেন নিজেরই দিকে তাকিয়ে থাকি। মনে হচ্ছে প্রশ্নটা যাকে করবার সে কড়াদার নামের কোন অলৌকিক অস্তিত্ব নয়, সে আমি নিজে। কড়াদা বলে উঠল, ‘কেন, তুই জানিস না কিছু?’ ‘মনে পড়ে না? তুমি বল।’ ‘শোন্, আমি মুক্তিযুদ্ধে যামু বইলা মন ঠিক কইরা ফেলাইলাম। আমার তো কুন পিছটান নাই। মা গত হয়েছেন জানুয়ারিতে। আর অহন এপ্রিল মাস। মুক্তিযোদ্ধাগো একখান নৌকা শীতালক্ষ্যার ঘাটে বান্দা। হেরা সবাই আমার বয়সী। যাইব ইন্ডিয়া। বাক্স প্যাটরা বাইন্দা আমিও তৈরি। কিন্তু যাইতে দিল না তোমার চাচারা।’ ‘কেন?’ ‘কারণ হইল, আমি চইলা গেলে হেগোরে দেহনের কেউ নাই। কেডা তাগোরে পাহারা দিব? হেগো কাকুতি মিনতিতে নরম অইলাম আমি। মুক্তিযোদ্ধা অওনের খায়েসটারে বুকে চাইপা রাইখা তগো চাচাগো লাইগা রইয়া গেলাম তগো বাড়িত। কিন্তু যেইদিন মুক্তির খুঁজে পাক সৈন্য আর রাজাকাররা তরার বাড়িত হানা দিল হেইদিন ইন্ডিয়ার চর মালাউন মুক্তি কইয়া আমারে তর চাচারা দেহাইয়া দিল। নিজেরা বাঁচনের লাইগা আমারে ধরাইয়া দিল। এই তমাল গাছটাত বাইন্দা হেরা আমার চোখ দুইডা তুলল বেয়নেট দিয়া। আমার অন্ডকোষ ইটের চাক্কা দিয়া ছেঁচল। আমি চীক্কার দিলাম। হেরা আমার বুকের মাংস চাকু দিয়া কাইটা সেইখানে লবণ ছড়াইল। আমার চামড়া ছালাইয়া মরিচ দিল। আমার চীক্কারে আকাশ বাতাস থরথর কইরা কাঁপল। তর চাচারা দরজা বন্ধ কইরা আমার সেই কষ্টের চিক্কারগুলা হুনল। কিন্তুক দরজা খুলল না। হেরা বাঁচল, আমি মরলাম।’ বলে বড় করে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল কড়াদা। আমার মন এমনিতেই নরম; কারো কষ্টে মনে মনে কেঁদে উঠি। সমবেদনায় কাতর হই। ব্যস, ওইটুকুই। দাদাজানের মত কোন সাহায্য-সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে পারি না। মনে মনে কিছু করতে চাইলেও পরক্ষণে মুখ ফিরিয়ে নিই। মনে হয় আমার সীমিত সম্পদ দিয়ে ওদের সাহায্য করলে শেষ পর্যন্ত আমার ওয়ারিশদের জন্য কী থাকবে? ভাগে কম পড়বে না? বৈষয়িক এই চিন্তাটি মগজে খোঁচা দিলেই আহত দিল নিয়ে আমি কড়াদার মত আরও অনেক ক্ষেত্র থেকে মুখ ফিরিয়ে নিই। কড়াদাকে বললাম, ‘তুমি বিচার দাবি কর? আজকাল মুক্তিযুদ্ধে যারা আহত-নিহত হয়েছেন তাদের পরিজন সুবিচার পাচ্ছে তো। তুমিও পাবে। দেশকাল পাল্টে গেছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ফিরে আসছে সমাজে।’ কড়াদা মলিন চেহারায় হাসি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করল। কিন্তু সে হাসিটা কান্নায় এতটাই টলমল যে আমার মনে হল কোন খরস্রোতা নদীর জলে একটি পদ্মপাপড়ি ভাসছে। পাপড়িটি চক্রাকারে কেবল ঘুরছে। যে কোন সময় চিরতরে ডুবে যাবে জলে। আমি যেন কড়াদার চোখে টলমল সেই পাপড়িটিকেই দেখতে পেলাম। সহসা আমার মনে হল কড়াদা বিড়বিড় করে বলছে, ‘আমি কার বিচার চামু, ক? যাগো আশ্রয়ে বড় অইছি হেগো? দুঃখীরা কুনদিন বিচার পায়, তুই হুনছস? হগলডাই আমার কপাল। হের চেয়ে তর যদি আমার কতা মনে লয়, তো কালেভদ্রে একবার এই নদীপাড়ে তমালগাছটার নিচে আইয়া দাঁড়াইছ। আমি খুব খুশি হমুরে বাপ। আইছ।’ বলে ঝরঝর করে কাঁদতে লাগল কড়াদা। এ সময় বৃষ্টি শুরু হলো। দমকা হাওয়ার সঙ্গে এলোপাতাড়ি বৃষ্টির ছাট। মনে হলো কড়াদার কান্না আর বৃষ্টি মিলেমিশে একাকার হয়ে গেল। ভারি মন নিয়ে বাড়ি ফিরে এলাম। রাতে খাওয়ার সময় ইচ্ছে করে চাচাদের সামনে কড়াদার কথা উঠালাম। সঙ্গে সঙ্গে আমার রাখিমালের ব্যবসায়ী ছোটচাচা বলে উঠলেন, ‘পোলাডা খুব ভাল আছিল রে শরাফত। বহুৎ খেদমত করছে আমগো। একাত্তর সনে নিজের জীবন দিয়া আমগোরে বাঁচাইছে। হে ধরা না খাইলে তো আমরা আল্লার পেয়ারা হইয়া যাইতাম কবে। পোলাডা খুব ভালা। হিন্দু পোলা অতডা বিশ্বাসী আমি দুইডা দেহি নাই জীবনে। আব্বাজান আছিলেন বুদ্ধিমান লোক। কাজের লোক ভালা কইরাই চিনতেন, আমরাই বুঝবার পারি নাই, খালি ভুল বুইজা গেছি। অহন ত কাম করনের আগে কামের লোক ট্যাকাপয়সা চাইয়া বইয়া থাহে। কি যে দিনকাল পড়ছে। কি কন ভাইজান?’ বড়চাচার ওপর দৃষ্টি তার। আমার বড়চাচা একটু-আধটু রাজনীতি করা এলাকার বিশিষ্ট ট্রাক-ব্যবসায়ী। তিনি ছোটভাইর কথায় মাথা নেড়ে সমর্থন জানালেন। বিড়বিড় করে বললেন, ‘খুব সাহসী পোলা। হিন্দুগো মতন বাক্স-প্যাটরা লইয়া ইন্ডিয়া-পালানো পাড্ডারাইলা আছিল না। খুবঅই প্রভুভক্ত আছিল। হে অহন থাকলে যে কী একটা উপকার অইত এই পরিবারের। আহা!’ বলে মুখে চুকচুক শব্দ করে উঠলেন অশীতিপর বৃদ্ধ আমার বড়চাচা। আমি চুপ করে রইলাম। কোন প্রতিবাদ করলাম না। (শেষ) কেউ রাখেনি তার খবর ফিরোজা সামাদ মেঘমেদুর বাদলদিনে, একপশলা বৃষ্টি এসে... ভিজিয়ে দিয়ে গেলো, শ্যাওলা জমা আঙিনার দেহ!! সাথে ঝড়ো বাতাস, কদমবনে হিল্লোলিত বায়ু... ছুঁয়ে ছঁয়ে গেলো ঘাসের শরীর!! পুকুর জলে সরপুঁটিদের লাফালাফি, কানকো দিয়ে হেঁটে কই মাছেরা... ডাঙায় উঠে... যাত্রা শুরু করলো নিরুদ্দেশে, আনন্দের এই জলসায় শুধু... কিশোরী কন্যার মন খারাপের একফোঁটা অশ্রু মিলে গেলো বরর্ষার জলে, কেউ রাখেনি তার খবর!!
×