ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এবারের ফিতরা ৬৫ টাকা, সর্বোচ্চ ১৬৫০

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১৬ জুন ২০১৬

এবারের ফিতরা ৬৫ টাকা, সর্বোচ্চ ১৬৫০

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এ বছর জনপ্রতি সর্বনিম্ন ফিতরার হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৫ টাকা। এছাড়া সর্বোচ্চ ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৬৫০ টাকা। যে কেউ ইচ্ছা করলে সর্বনিম্ন এই হার থেকে সর্বোচ্চ হারে ফিতরা আদায় করতে পারবেন। বুধবার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এই হার নির্বারণ করা হয়। এর আগে ১৪৩৭ হিজরীর সাদকাতুল ফিতরের হার নির্ধারণের লক্ষ্যে সকালে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মুকাররম সভাকক্ষে জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দ্বীনী দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগের পরিচালক ড. মাওলানা মুহাম্মদ আবদুস সালাম। সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় ইসলামী শরীয়াহ মতে আটা, খেজুর, কিসমিস, পনির ও যব ইত্যাদি পণ্যগুলোর যে কোন একটি দ্বারা ফিতরা প্রদান করা যায়। আটা দ্বারা ফিতরা আদায় করলে ১ কেজি ৬শ’ ৫০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ৬৫ টাকা আদায় করতে হবে। যব দ্বারা আদায় করলে ৩ কেজি ৩শ’ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ২শ’ টাকা, কিসমিস দ্বারা আদায় করলে ৩ কেজি ৩শ’ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ১ হাজার টাকা, খেজুর দ্বারা আদায় করলে তিন কেজি ৩শ’ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ১ হাজার ৫শ’ টাকা, পনির দ্বারা আদায় করলে ৩ কেজি ৩শ’ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ১ হাজার ৬৫০ টাকা ফিতরা আদায় করতে হবে। মুসলমানগণ নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী উপরোক্ত পণ্যগুলোর যে কোন একটি পণ্য বা তার বাজার মূল্য দ্বারা সাদকাতুল ফিতর আদায় করতে পারবেন। এতে জানানো হয় উপরোক্ত পণ্যসমূহের স্থানীয় খুচরা বাজার মূল্যের তারতম্য থাকলে সে অনুযায়ী স্থানীয় মূল্যে পরিশোধ করলেও ফিতরা আদায় হবে। ফিতরা নির্ধারণ কমিটির ওই সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল প্রফেসর সিরাজ উদ্দিন আহমাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সাইয়েদ আবদুল্লাহ আল মা‘রূফ, ঢাকা নেছারিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মুহাম্মদ কাফীলুদ্দীন সরকার সালেহী, কাদেরিয়া তৈয়্যবিয়া মাদ্রাসার প্রধান মুফতী মাওলানা মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মাওলানা হাবিবুল মতিন সরকার, উপ-পরিচালক ড. মাওলানা মুশতাক আহমদ, ড. মাওলানা আবদুল জলীল, মুফতী মাওলানা মোহাম্মাদ আবদুল্লাহ, মুহাদ্দিস মাওলানা ওয়ালীয়ূর রহমান খান, মুফাসসির ড. মাওলানা আবু ছালেহ পাটোয়ারী, বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, মুফতী মুহিব্বুল্লাহিল বাকী নদভী, মুফতী মাওলানা এহসানুল হক ও আহছানিয়া ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক শাইখ মুহাম্মদ উছমান গণী প্রমুখ। সভায় জানানো হয় ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম গম বা আটা অথবা খেজুর, কিসমিস, পনির বা যবের মধ্যে যে কোন একটি পণ্যের ৩ কেজি ৩শ’ গ্রামের বাজার মূল্য ফিতরা হিসেবে গরিবদের মধ্যে বিতরণ করা যায়। এই হিসাবে এবার সর্বনিম্ন ৬৫ টাকা থেকে ১ হাজার ৬৫০ টাকা ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে ফাউন্ডেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোঃ নিজাম উদ্দিন জানান। ইসলাম ধর্মের বিধান অনুযায়ী, প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব। নাবালক ছেলেমেয়ের পক্ষ থেকে বাবাকে এই ফিতরা দিতে হয়। আর তা দিতে হয় ঈদ-উল ফিতরের নামাজের আগেই। গত বছর সর্বনিম্ন ফিতরা ধরা হয়েছিল জনপ্রতি ৬০ টাকা। তার আগের বছর ছিল ৬৫ টাকা। ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে একদিন ও এক রাতের খাদ্যের অতিরিক্ত পরিমাণ সম্পদ থাকলে এরকম প্রত্যেক ব্যক্তিকে নিজের ও পরিবারের সমস্ত সদস্যদের পক্ষ থেকে ফিতরা প্রদান করা ফরজ যাদের লালন-পালনের দাযত্বি¡ শরীয়ত কর্তৃক তার ওপরে অর্পিত হয়েছে। তবে যার নিকট এক দুই বেলার খাবার ব্যতীত অন্য কিছু নেই তার ফিতরা দেয়ার প্রয়োজন নেই। মূলত গরিব, দুস্থ, অসহায়, অভাবগ্রস্ত ব্যক্তিকে ফিতরা প্রদান করা যাবে।
×