ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মানুষ আজ শঙ্কিত

প্রকাশিত: ০৪:১২, ১৬ জুন ২০১৬

মানুষ আজ শঙ্কিত

জাস্টিন গোমেজ ১৯৭১ সালে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। লাখ লাখ প্রাণ ও মা-বোনের ইজ্জত বিসর্জিত হয়েছে এ স্বাধীনতা অর্জনে। স্বাধীনতা লাভের ৪৫ বছর পর আজও বাংলাদেশের নাগরিক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। কেননা এক ধরেনের বর্বর ও পৈশাচিক কর্মকা- বরাবরই বাংলাদেশের পরিবেশকে উত্তপ্ত করে তুলছে। এ ধরনের কর্মকা- যেমন মানুষের জীবনে হুমকিস্বরূপ হয়ে দাঁড়িয়েছ, তেমনি আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও নষ্ট হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষ শারীরিকভাবে ভাল থাকলেও মানসিক দিক দিয়ে রয়েছে আতঙ্কে। যেসব হত্যাকা- ও সন্ত্রাসী তৎপরতা চলছে তাতে উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। প্রতিনিয়ত টার্গেট হত্যাকা-ে দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে দেশের বেশ কিছু মুক্তমনা ব্লগার, সাহিত্যিকের ওপর জঙ্গী ও সন্ত্রাসী তৎপরতা চালিয়ে তাদের পাশবিকভাবে হত্যা করা হয়েছে। এসব জঙ্গী ও সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না শিক্ষক, পুলিশ, ধর্মযাজক, বৌদ্ধ ভিক্ষু, বিদেশী নাগরিক এমনকি পুলিশ সুপারের স্ত্রী পর্যন্ত। ইদানীং যাদের হত্যা করা হয়েছে এরা কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন, কোন মতবাদের অনুসারী নন, এমনকি কোন রাজনৈতিক মতাদর্শের মানুষও নন। এরা সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। নাটোরের বড়াইগ্রামের সুনীল গোমেজকে পৈশাচিকভাবে হত্যা, একই দিনে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রীকে জবাই করেছে সন্ত্রাসীরা। এ ছাড়াও এর পূর্বে সংখ্যালঘু হিন্দু পুরোহিত, বৌদ্ধ পুরোহিত ও বিদেশী খ্রীস্টান যাজকের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এরা অরাজনৈতিক, শান্তিপ্রিয়, কেউবা ধর্মগুরু যারা মানুষের সেবায় ও কল্যাণে নিবেদিত। এসব জঙ্গী ও সন্ত্রাসীদের ইতিহাসে মানবতা বলে কিছুই নেই। এরা রক্তের নেশায় বুদ হয়ে আছে। টার্গেট কিলিংয়ের মধ্য দিয়ে এরা এ দেশের গৌরব ও উন্নয়নে রক্ত ঢেলে দিতে চাইছে। বর্তমানে সরকার যতই এ দেশকে উন্নয়নের উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে ততই বর্বর গোষ্ঠী দেশকে নিচে নামানোর অপচেষ্টা করছে। সারা বিশ্বে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি ধীরে ধীরে বিনষ্ট করা হচ্ছে। এ ধরনের কর্মকা- মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গাগুলোকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এদের লক্ষ্য এখন পরিষ্কার। এরা চায় আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে। মানুষ এখন ভয়ে দিন কাটাচ্ছে। সরকারের প্রশাসনিক তৎপরতা থাকলেও আইনের সুষ্ঠু শাসন প্রতিষ্ঠায় কিছু দুর্বলতার মাঝে জঙ্গী ও সন্ত্রাসী তৎপরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইদানীং ঘটে যাওয়া টার্গেট কিলিং নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ও শঙ্কিত। আমরা এই হত্যাকা-ের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করি। এ দেশ কোন জঙ্গী বা সন্ত্রাসীদের আস্তানা হতে পারে না। নটর ডেম কলেজ, ঢাকা থেকে
×