ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

হ্যাটট্রিক শিরোপার লক্ষ্যে আজ শুরু স্পেনের

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ১৩ জুন ২০১৬

হ্যাটট্রিক শিরোপার লক্ষ্যে আজ শুরু স্পেনের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ স্বর্ণসময় কি পেরিয়ে এসেছে স্পেন? অনেকের মনেই এখন উঁকি দেয় প্রশ্নটি। ২০০৮-২০১২ এই সময় স্পেনের ফুটবলের ইতিহাসেই সেরা। ২০০৮ সালে ৪৪ বছর পর ইউরো জয় করে স্প্যানিশরা। দুই বছর পর ২০১০ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপও জিতে নেয় লা রোজারা। ২০১২ সালে একমাত্র প্রথম দেশ হিসেবে ইউরো শিরোপা ধরে রাখার অসাধারণ কৃতিত্ব দেখায় স্পেন। অর্থাৎ টানা তিন শিরোপা জয়ের বিরল রেকর্ড গড়ে ইকার ক্যাসিয়াসের দল। এই দলটি ২০১৪ সালে ব্রাজিলে হারিয়ে বিশ্বসেরার মুকুট। তবে ইউরোর মুকুট এখনও তাদের দখলে। টানা দুই আসরে শিরোপা জয় করা স্প্যানিশদের সামনে এবার ফ্রান্সে হ্যাটট্রিক শিরোপার হাতছানি। ইউরোর ইতিহাসে প্রথম ও একমাত্র দল হিসেবে টানা তৃতীয়বার শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে মিশন শুরু করছে ভিসেন্টে ডেল বস্কের দল। ‘ডি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে চেক প্রজাতন্ত্রের বিপক্ষে খেলবে স্পেন। টুলুজে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় আজ সন্ধ্যা ৭টায়। ‘ই’ গ্রুপে আজ রাতে দুটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে লড়বে জ¬াতান ইব্রাহিমোভিচের সুইডেন। তবে গ্রুপের আরেক ম্যাচ দৃষ্টি থাকবে গোটা ফুটবলবিশ্বের। ম্যাচটিতে মুখোমুখি হচ্ছে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের দুই নম্বর দল বেলজিয়াম ও চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালি। লিঁওতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে আজ্জুরিদের বিপক্ষে জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবছে না বলে জানিয়েছেন বেলজিক মারোনে ফেলাইনি। নিজেদের দল নিয়ে দারুণ আশাবাদী এই মিডফিল্ডার। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে খেলা তিন তারকা কেভিন ডি ব্রুইনে, ইডেন হ্যাজার্ড ও রোমেলু লুকাকুকে সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার হিসেবে আখ্যা দিয়ে ভাল কিছু করার স্বপ্ন বুনছেন তিনি। ফেলাইনি বলেন, আমাদের আছে শীর্ষ কোয়ালিটিসম্পন্ন খেলোয়াড়। তারা যে কোন মুহূর্তে পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। তিন বিশ্বমানের ফরোয়ার্ড আছে আমাদের। শুরুটা ভাল করার প্রত্যয় জানিয়ে তিনি বলেন, সবসময় ভাল শুরু করা জরুরী। এতে করে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। তবে ইতালি অনেক ভাল দল। তাদের হারানো সহজ হবে না। কিন্তু আমরা জয় ছাড়া কিছুই ভাবছি না। অভিন্ন লক্ষ্য ইতালিরও। গত আসরের ফাইনালে স্পেনের কাছে রীতিমতো বিধ্বস্ত হয়েছিল আজ্জুরিরা। এবার তাই জিয়ানলুইজি বুফনরা এসেছেন কষ্ট লাঘবের মিশনে। এ লক্ষে গ্রুপ পর্বেই কঠিন লড়াইয়ে পড়তে হবে তাদের। তাদের ‘ই’ গ্রুপটিকে বলা হচ্ছে মৃত্যুকুপ। বেলজিয়াম, আয়ারল্যান্ড, সুইডেন, ইতালিকে নিয়ে গড়া দলটিকে মৃত্যুকূপ না বলে কি উপায় আছে! ইতালির রক্ষণভাগ সবসময়ই বিশ্বসেরা। এবারও এর ব্যতিক্রম নয়। দেশটির সাবেক স্ট্রাইকার জিয়ানলুকা ভিয়ালিও এমন মনে করছেন। অবশ্য আজ্জুরিদের আক্রমণভাগ নিয়ে আত্মবিশ্বাসী নন তিনি। ব্রাজিল বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল ইতালিকে। তবে এ্যান্টোনিও কন্টের শিষ্যরা এবারের আসরে নিজেদের সেরাটা দিতেই এসেছেন। কোচ কন্টে, অধিনায়ক জিয়ানলুইজি বুফন, জিওর্জিও চিয়েল্লিনি ও লিওনার্ডো বনুচ্চির প্রশংসা করে ভিয়ালি বলেন, আমরা দারুণ একজন কোচ পেয়েছি। তার অধীনে দল ভাল একটা শুরু করতে পারে। আমি নিশ্চিত এখনকার ফুটবলাররা অবশ্যই সম্মান এনে দেবে। মূল আসরে অংশ নেয়ার আগে প্রস্তুতিটা মোটেও ভাল হয়নি স্পেনের। নিজেদের শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে কখনও ইউরো ও বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ না পাওয়া জর্জিয়ার কাছে ১-০ গোলে হার মানে ডেল বস্কের দল। অবশ্য প্রস্তুতি পর্বে আগের দুটি ম্যাচে সহজেই জিতেছিল ২০১০ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। বসনিয়া-হার্জেগোভিনাকে ৩-১ ব্যবধানে হারানোর পর দক্ষিণ কোরিয়াকে ৬-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল স্পেন। কিন্তু জর্জিয়ার কাছে মাথা নত করেই মাঠ ছাড়তে হয়েছে ইউরোর বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের। এরপরও স্পেনকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন ক্যাসিয়াস। তিনি বর্তমান দলটির মধ্যে ২০০৮ সালের দলটির ছায়া দেখছেন। বর্তমান দল নিয়ে ক্যাসিয়াস বলেন, দলে অনেক পরিবর্তন হয়েছিল। সেবার কেউ ভাবেননি যে আমরা ২০০৮ সালে ইউরো চ্যাম্পিয়ন হব। কিন্তু আমরা শিরোপা জিতেছিলাম। আট বছর পরও এই দলটির মধ্যে তেমন কিছুই লক্ষ্য করছি। ভাগ্য সহায়ক থাকে তাহলে এবারও নিজেদের শোকেসে ইউরোর ট্রফি দেখছেন ক্যাসিয়াস। তারকা এই গোলরক্ষক বলেন, ২০০৮ সালে আমরা একটা নতুন স্টাইল আবিষ্কার করেছিলাম। কেউ ভাবতে পারেনি যে আমরা ইউরো জিততে পারি। এবারের স্পেন দলে ভাল ফুটবলার আছে। দরকার ভাগ্যের। আশা করি এবারও ইউরো জিতবে স্পেন।
×