ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শিল্পকর্ম অবলোকন ও অনুধাবনের আয়োজন চারুপাঠ কর্মশালা

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ১১ জুন ২০১৬

শিল্পকর্ম অবলোকন ও অনুধাবনের আয়োজন চারুপাঠ কর্মশালা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ছুটির দিনের বিকেল। শিল্পানুরাগীদের সমাগমে মুখর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা। ঝাঁকবেঁধে শিল্পরসিকরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন গ্যালারিতে। নবীন শিল্পীদের সৃজিত চিত্রকর্মের সঙ্গে অবলোকন করছেন ভাস্কর্য কিংবা স্থাপত্য। প্রথমে এ দেখার শুরুটা হয় চিত্রশালার ৫, ৬ ও ৩ নম্বর গ্যালারি এবং ভাস্কর্য গ্যালারিতে। এখানে চলছে ২০তম নবীন শিল্পী চারুকলা প্রদর্শনী। ঠাঁই পেয়েছে সারাদেশের ১৮৮ নবীন শিল্পীর ২২৭টি শিল্পকর্ম। নবীনদের শিল্পসম্ভার দেখা শেষে দর্শনার্থীরা চোখ ফেললেন স্থায়ী গ্যালারিতে পথিকৃৎ ও বরেণ্য শিল্পীদের সৃষ্টির ভুবনে। ঘুরে ঘুরে দেখলেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, পটুয়া কামরুল হাসান, এসএম সুলতান, সফিউদ্দীন আহমেদসহ ৯৬ জন শিল্পীর ১৫১টি শিল্পকর্ম। এ তো গেল দেখার পালা। বিকেল দেখা শেষে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় শিল্পকর্ম অনুধাবনের পর্ব। আর এভাবেই শিল্পকর্ম অবলোকন ও অনুধাবনের সম্মিলন ঘটে চারুপাঠ কর্মশালায়। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগের ব্যবস্থাপনায় শুক্রবার এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এ কর্মশালায় অংশ নেন শিল্পের নানা শাখার তিন শতাধিক অনুরাগী। তাদের মধ্যে ছিলেন সঙ্গীত, নৃত্য, নাট্য, আবৃত্তি ও চারুকলার সংগঠক, শিল্পী ও প্রশিক্ষণার্থী। শুক্রবার বিকেলে চিত্রশালা মিলনায়তনে কর্মশালা উদ্বোধন করেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি প্রতি মাসেই শিল্পের অন্যান্য বিষয়ের ওপর এ কর্মশালা আয়োজনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। কথা হয় কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী দনিয়া সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হাফিজের সঙ্গে। এ তরুণ জনকণ্ঠকে বলেন, শিল্পকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে আছে সৃজনশীলতার বিষয়টি। আর শিল্পবিষয়ক এ ধরনের উদ্যোগে অংশ নেয়ার মাধ্যমে মানবিক বোধগুলো বিকশিত হয়। তাছাড়া এ আয়োজনের মাধ্যমে আমরা একসঙ্গে দুই প্রজন্মের শিল্পীদের শিল্পকর্ম অবলোকনের সুযোগ পেলাম। সন্ধান পেলাম দুই প্রজন্মের শিল্পীদের ভিন্নধর্মী সৃজনের প্রকাশ। এমনকি তাদের ভাবনা বা মনোজগতের গতিরেখাটাও বেশ চোখে পড়ল। দনিয়া অলংকরণ আর্ট স্কুলের চারুশিক্ষক মোহাম্মদ আলী বলেন, এ ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে যারা শিল্পচর্চায় জড়িত তারা অনেক উপকৃত হবে। শিল্প দেখার পাশাপাশি শিল্প-সমালোচকদের আলোচনা খুলে দেবে তাদের মনোজগত। সে আগ্রহ থেকেই আমিও অংশ নিয়েছি এ কর্মশালায়। আয়োজনটির গুরুত্ব তুলে ধরে শিল্প-সমালোচক মইনুদ্দীন খালেদ জনকণ্ঠকে বলেন, এখানে চারুকলার বাইরেও সঙ্গীত, নাটক, আবৃত্তিসহ বিভিন্ন শিল্পমাধ্যমের মানুষ অংশ নিচ্ছে। এতে সবার দৃষ্টিভঙ্গিটা আরও প্রসারিত হবে। কেউ গান বা নাটক করলেই যে চিত্রকর্ম বুঝতে পারবেÑ বিষয়টা এমন নয়। সেক্ষেত্রে এ ধরনের কর্মশালা তাদের সে দেখার পথটি তৈরি করে দেবে। চারুশিল্পকে উপলব্ধি করতে সহায়তা করবে। সৃষ্টি হবে শিল্পবোধ। এছাড়া এ ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে একটা শিল্পীসংঘও গড়ে উঠবে। এতে বিভিন্ন মাধ্যমের শিল্পীর মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক বাড়বে। অভ্যন্তরীণ ঐক্য গড়ে উঠবে। সন্ধ্যায় চারুপাঠ কর্মশালায় প্রবীণ শিল্পীদের বিষয়ে আলোচনা ও পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন শিল্প-সমালোচক মইনুদ্দীন খালেদ। তিনি স্থায়ী গ্যালারিতে উপস্থাপিত বরেণ্য শিল্পীদের শিল্পকর্ম নিয়ে আলোচনা করেন। এতে জয়নুল আবেদিন থেকে শুরু করে কামরুল হাসান, মুর্তজা বশীর, শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদসহ বিশিষ্ট শিল্পীদের কাজের গতিধারা উপস্থাপিত হয়। আর নবীন শিল্পীদের শিল্পকর্ম বিষয়ে আলোচনা করেন শিল্পী শাওন আকন্দ। শিল্পিতর স্মরণে মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী ॥ কিংবদন্তি মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী স্মরণে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘শিল্পিত’। শুক্রবার সকালে সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা বাংলাদেশে মোহাম্মদ আলীর সফর নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চিত্রনায়িকা নূতন। বিশেষ অতিথি ছিলেন মতিন বৈরাগী ও সৈয়দ আলী ইমাম। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ওসমান গনি। আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে কবিতা আবৃত্তি করেন মুস্তারী খাতুন, হাসিনা মমতাজ, মোহাম্মদ রবিউল, প্রিয়তি পুষ্প, ডাঃ হাফিজ উদ্দীন আহমদ, ওয়াহেদ হোসেন, মোনায়েম হিমু, আমিনা মুনমুন, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
×