ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নেপাল আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘আকাশ কত দূরে’

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ১১ জুন ২০১৬

নেপাল আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘আকাশ কত দূরে’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের বাইরে বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এবার যুক্ত হলো নতুন মাত্রা। নেপাল মানবাধিকার চলচ্চিত্র কেন্দ্রের আয়োজনে শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া তিনদিনব্যাপী ‘চতুর্থ নেপাল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চলচ্চিত্র উৎসব’ এ প্রদর্শিত হবে বাংলাদেশী চলচ্চিত্র। জানা গেছে উৎসবের সমাপনীদিন আগামীকাল ১২ জুন রবিবার বেলা ২-১৫ মিনিটে প্রদর্শিত হবে সামিয়া জামান পরিচালিত ইমপ্রেস টেলিফিল্মের চলচ্চিত্র ‘আকাশ কত দূরে’। শুধু তাই নয় উৎসবে অন্যতম জুরি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নির্মাতা শাহনেওয়াজ কাকলী এবং বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিধিত্ব করবেন ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেডের নির্বাহী প্রযোজক (চলচ্চিত্র) কাজী শাহ্রিয়ার পারভেজ রাজন। কাটমান্ডুর ললিতপুর স্টাফ কলেজ অডিটোরিয়ামে এ চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নেপালের মানবাধিকার পরিস্থিতি ও সচেতনতা বিশ্ব সম্প্রদায়কে তুলে ধরা এবং একইসঙ্গে বিশ্বব্যাপী চলচ্চিত্রের সঙ্গে জড়িত প্রযোজক, পরিবেশক এবং কলাকৌশলীদের মাঝে মানবাধিকার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে এই চলচ্চিত্র উৎসব উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন আয়োজকরা। ‘আকাশ কত দূরে’ ২০১৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি মুক্তিপ্রাপ্ত একটি বাংলাদেশী চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটির কাহিনী, চিত্রনাট্য, সংলাপ ও গীত রচনা করেছেন জুলফিকার রাসেল। পরিচালনা করেন সামিয়া জামান। প্রযোজনা করে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম ও ভার্সা মিডিয়া। চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশ সরকারের অনুদানে নির্মিত। চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রাজ্জাক, শর্মিলী আহমেদ, মোস্তফা প্রকাশ, ফারিয়া, মিশা সওদাগর, অঙ্কন প্রমুখ। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফারহানা শাহরিন ফারিয়া ও অঙ্কন। তাদের অভিনীত চরিত্রের নাম পরী ও বিচ্ছু। চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন ইবরার টিপু ও বেলাল খান। বিভিন্ন গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ইবরার টিপু, কণা, বেলাল খান, খেয়া, প্রান্তি প্রমুখ। চলচ্চিত্রের কাহিনীতে দেখা যায় জন্ম দিয়ে মা মারা যায় বিচ্ছুর। জন্ম-পরিচয়হীন সেই বাচ্চাকে একটি এতিমখানায় দেয়া হয়। সেখান থেকে তাকে পাঠান হয় আরেকটি এতিমখানায় যেখানে পড়াশুনার পাশাপাশি হাতের কাজও করানো হয়। কিন্তু সে সেখানকার অতিমাত্রায় শাসন ও অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বিচ্ছু পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বন্ধুর সহযোগিতায় সে দেয়াল টপকে পালিয়ে চলে আসে ঢাকায়। ঢাকায় এসে পথে দেখা হয় বুলেট আর জসিম নামের দুটি ছেলের সঙ্গে। বিচ্ছুকে তারা নিয়ে যায় ওস্তাদের কাছে। এভাবে বিচ্ছু অন্ধকার জগতে প্রবেশ করে। ওস্তাদের ঘনিষ্ঠ সহচর হয়ে ওঠে সে। এখানে পরী তাকে খুব স্নেহ করে। পরী বিয়ের নামে প্রতারণা করে বেড়ায়। এক অপারেশনে গিয়ে ধরা পড়ে বিচ্ছু। গাড়ির মালিক বিচ্ছুকে পুলিশের হাতে না দিয়ে নিজের বাসায় নিয়ে আসেন। বিচ্ছুর মধ্যে তিনি তার ছেলের ছায়া খুঁজে পান। এদিকে পাতাগাঁও গ্রামে বিচ্ছুর খোঁজ-খবর নিয়ে তিনি জানতে পারেন বিচ্ছু তারই নাতি। অপরদিকে পরী আরিফ নামের এক সাংবাদিকের সঙ্গে বিয়ে নিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পেতে নিজেই সেই ফাঁদে আটকে যায়। যার ফলে সেই সাংবাদিকের সহযোগিতায় পুলিশ তাদের আস্তানার খোঁজ পায় ও তাদের সবাইকে ধরে নিয়ে যায়। সবশেষে বিচ্ছু তার দাদুর কাছে ফিরে যায়। ‘আকাশ কত দূরে’ চলচ্চিত্রটি ইতোমধ্যে মুম্বাই ও মেনস ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল-২০১৩, ১০ম জেনেভা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ২০১৪, ৭ম বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ২০১৪, ৫ম কলকাতা আন্তর্জাতিক শিশু কিশোর চলচ্চিত্র উৎসব ২০১৫, ১৫তম রেইনবো ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল লন্ডনÑ ২০১৪, ট্রান্সসাহরিয়ান জাগোরা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব, মরক্কো ২০১৪-সহ বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে।
×