ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রসুনের দাম বেড়েছে

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

রসুনের দাম বেড়েছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আট কেজি পেঁয়াজের দামে বিক্রি হচ্ছে এক কেজি রসুন। অর্থাৎ প্রতিকেজি রসুনে ভোক্তাকে গুনতে হচ্ছে ২৪০ টাকা। আর ৩০-৩২ টাকা দিয়ে কেনা যাচ্ছে প্রতিকেজি পেঁয়াজ। মসলা জাতীয় এই পণ্যটির দাম গত কয়েক মাস ধরেই বাড়তি। রসুনের উচ্চমূল্য ভোগাচ্ছে ক্রেতাদের। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এই পণ্যটির দাম বেড়েছে প্রায় শতভাগ। ভরা মৌসুমেও দাম কমার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ভোক্তাদের প্রত্যাশা, রসুনের দাম স্বাভাবিক করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে নতুন রসুন ৯০-১০০ টাকায় পাওয়া গেলেও পুরনো দেশী রসুনের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় ১০ টাকা বেড়ে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া আমদানি করা রসুনের দাম বাড়তে বাড়তে কেজি ১৯০ থেকে ২৪০ টাকায় উঠেছে। অব্যাহত দাম বৃদ্ধির কারণে ভোক্তাদের মধ্যে অস্বস্তি বাড়ছে। রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, রসুনের দাম এক মাসের ব্যবধানে গড়ে ২৬ শতাংশ, আর বছরের ব্যবধানে ৯৫ শতাংশ বেড়েছে। মাসের ব্যবধানে দেশী রসুনের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশ আর বছরের ব্যবধানে ৭১ শতাংশ এবং আমদানি করা রসুনের ক্ষেত্রে মাসিক বৃদ্ধি ২৭ শতাংশ হলেও গত এক বছরে বেড়েছে ১২৪ শতাংশ পর্যন্ত। রসুনের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে কাপ্তান বাজারের ব্যবসায়ী মনির হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, বাজারে যে নতুন রসুন দেখা যাচ্ছে সেটি এক কোয়া রসুন এবং কাঁচা। এই রসুনের বিশেষ চাহিদা নেই। যে কারণে পুরনো রসুনের দাম কমছে না। তবে নতুন রসুনের সরবরাহ বাড়লে দাম কমে আসবে। একই বাজারের রসুনের ক্রেতা জাভেদ হোসেন বলেন, গত কয়েক মাস ধরেই এ পণ্যটির দাম বাড়ছে। এখন আড়াই শ’ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি রসুন। তাই দাম কমাতে সরকারী উদ্যোগ প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নিলে হয়ত দাম কমতে পারে। এদিকে, শীত কমার সঙ্গে সঙ্গে কমেছে শীতকালীন সবজির সরবরাহও। এ কারণে বেড়ে যাচ্ছে সবজির দাম। পটল, ঢেঁড়শ ও চিচিঙ্গাসহ কিছু গ্রীষ্মকালীন নতুন সবজি বাজারে এসেছে। দাম বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির ও পেঁয়াজের। প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩২ টাকা। প্রতিকেজি মসুর ডাল ৯০-১৪৫ টাকা, চিনি ৪৮-৫০, আদা ৬০-৯০ এবং সয়াবিন তেল পাঁচ লিটার ৪৩০-৪৫৫, সয়াবিন তেল লুজ প্রতিলিটার ৮০-৮৪, পামওয়েল লুজ ৫৪-৬০, পামওয়েল সুপার ৬২-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাছের দাম বাড়তির দিকে রয়েছে। এছাড়া কমেছে ডিমের দাম। চাল, চিনি, আটা, ডালসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাড়তির দিকে রয়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। মুরগি বিক্রেতারা জানান, ফার্মের মুরগির বাচ্চা প্রতি ২০ টাকা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এ কারণে ফার্মের মুরগির দাম বেড়েছে। যে বাচ্চা ৩৩ টাকা ছিল, সেই বাচ্চা এখন ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তবে ফার্মের মুরগির দাম আরও বাড়বে বলেও জানান একাধিক বিক্রেতা। ফার্মের ব্রয়লার মুরগি গত সপ্তাহ থেকে এ সপ্তাহে কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেশি দামে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ সপ্তাহে অপরিবর্তিত দামে প্রতিকেজি লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। গত সপ্তাহের অতিরিক্ত ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি দামে এ সপ্তাহেও বিক্রি হচ্ছে দেশী মুরগির। ছোট-বড় আকার ভেদে দেশী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা। পাকিস্তানী মুরগি (পিস) ২০০ টাকা এবং কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা দরে। এছাড়া গরু ও খাসির মাংস আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি গরুর মাংস ৩৮০ টাকা এবং খাসির মাংস ৫৬০ থেকে ৫৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তবে এ সপ্তাহে বাজার ও ডিমের আকার ভেদে রাজধানীর বাজারে ২ টাকা কমে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতিহালি ৩৪ থেকে ৩৬ টাকায়, ডজন ১০০ টাকা। দেশী মুরগির ডিম হালি ৪৫ টাকা, ডজন ১৩৫ টাকা। হাঁসের ডিমের হালি ৪৬ টাকা ও ডজন ১৩৫ টাকা। এছাড়া বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ মাছ। প্রতিকেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা। ৫০০ গ্রাম সাইজের ইলিশ ৬০০-৭০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
×