ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কমিটি বাতিল দাবি

বিএনপি অফিসের সামনে ছাত্রদলের দু’পক্ষের ফের সংঘর্ষ

প্রকাশিত: ০৫:২০, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বিএনপি অফিসের সামনে ছাত্রদলের দু’পক্ষের ফের সংঘর্ষ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ছাত্রদলের নতুন কমিটিতে স্থান পাওয়া- না পাওয়াকে কেন্দ্র করে আবারও দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয়। বুধবার বিকেলে ছাত্রদলের কমিটি বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ হয়। এদিকে পদবঞ্চিত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন যতদিন বর্তমান কমিটি ভেঙ্গে পদবঞ্চিতদের স্থান দিয়ে কমিটি না করা হবে ততদিন তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতাকর্মীরা কাকরাইল নাইটিঙ্গেল মোড়ে জড়ো হয়। এক পর্যায়ে তারা সেখান থেকে ইট-পাটকেল ও লাঠিসোটাসহ মিছিল নিয়ে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দিকে এগিয়ে যায়। সেই সঙ্গে রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয় পদবঞ্চিতরা। তাদের মিছিল বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কাছাকাছি গেলে আগে থেকে সেখানে অবস্থানরত ছাত্রদলের নতুন কমিটির নেতাকর্মীরাও উচ্চৈঃস্বরে সেøাগান দিয়ে এগিয়ে এলে পরস্পরের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় দু’পক্ষই ইটপাটকেল ছুড়ে পরস্পরকে ঘায়েল করার চেষ্টা করে। ছাত্রদলের উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার কারণে আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে লোকজন দিগি¦দিক ছোটাছুটি করে। নয়াপল্টন এলাকায় সব দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। এ ঘটনায় কয়েক পথচারী আহত হয়। এক পর্যায়ে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা সেখান থেকে সরে আসে। পরে ওই এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সড়কে আবার যান চলাচল শুরু হয়। আগের ক’দিনের ধারাবাহিকতায় পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতাকর্মীদের বিক্ষোভের আগাম খবর পেয়ে বুধবার সকাল থেকেই নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করে ছাত্রদলের নতুন কমিটির নেতাকর্মীরা। তারা সেখানে অবস্থান করে মাঝেমধ্যে সেøাগান দিয়ে নতুন কমিটিকে স্বাগত জানাতে থাকে। দিন যত বাড়ে নতুন কমিটির নেতাকর্মীদের আগমন ততই বাড়তে থাকে। সেখানে উপস্থিত নতুন কমিটির ছাত্রদল নেতাদের মধ্যে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যায় শাখার সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার সিদ্দিকী, ঢাকা মহানগর পূর্বের সভাপতি খন্দকার এনামুল হক, সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন মানিক, পশ্চিমের সভাপতি কামরুজ্জামান জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক সাফায়েত রাব্বি, সরকারী বাংলা কলেজ শাখার সভাপতি আইয়ুব আলী, সিনিয়র সহ-সভাপতি খলিলুর রহমান খলিল প্রমুখ। উল্লেখ্য, ৬ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে ছাত্রদলের ৭৩৬ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। পরদিন রবিবার রাতে পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতাকর্মীরা ঘোষিত কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটির দাবিতে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। আর সোমবার বিকেলে নয়াপল্টন বিএনপি কার্যালয়ে গিয়ে বিক্ষোভ করে তারা। বিক্ষোভ চলাকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে ও সামনে অগ্নিসংযোগ ও ব্যাপক ভাংচুর করে তারা। বিক্ষোভকারী ছাত্রদল নেতাকর্মীদের অভিযোগ বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও সহ-ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু পছন্দমতো নিজেদের লোক দিয়ে ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করেছেন। টাকার বিনিময়ে অনেক জুনিয়র সিনিয়রকে টপকে বড় পদ পেয়েছেন। অথচ অনেক মেধাবী সিনিয়র ও মেধাবী নেতাকে নতুন কমিটিতে স্থান দেয়া হয়নি। আর এ কারণেই পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করে প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছেন। ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কাওসার মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, নতুন কমিটির নেতাকর্মীরা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করছিল। পরে কিছু বিদ্রোহী নেতাকর্মী কার্যালয়ের সামনে আসার চেষ্টা করলে তাদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। অপরদিকে ছাত্রদলের বিদ্রোহী নেতা হিসেবে পরিচিত রাকিবুল ইসলাম রয়েল সংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসানের অনুসারীরা পদবঞ্চিত নেতাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী কলঙ্কিত করার চেষ্টা করেছে। তিনি বলেন, এর আগেও রাজিব আহসান এবং আকরামুল হাসান দলীয় কার্যালয়ে ভাংচুরের দায়ে বহিষ্কার হয়েছেন। আমি বিশ্বাস করি জাতীয়তাবাদী শক্তির কোন কর্মী দলীয় কার্যালয় ভাংচুর করতে পারে না।
×