ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাতক্ষীরায় ড. কামাল

আবারও জাতীয় ঐক্যের দাবি উঠেছে

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ২২ নভেম্বর ২০১৫

আবারও জাতীয় ঐক্যের দাবি উঠেছে

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, জাতীয় ঐক্যের কারণে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বসহ সকল জাতীয় অর্জন সম্ভব হয়েছে। দেশের জনগণের মধ্য থেকে আবারও জাতীয় ঐক্যের দাবি উঠেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯৭৫ এ জাতীয় নেতৃবৃন্দকে হারিয়েও জনগণ হতাশ হয়নি, তারা হতাশ হবেও না। সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে জনগণকে রুখে দাঁড়াতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে ড. কামাল হোসেন শনিবার সকালে সাতক্ষীরায় গণফোরামের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন। শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা আহ্বায়ক এম জামান খানের সভাপতিত্বে আয়োজিত সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সুস্থ ধারার গণতন্ত্র কায়েমের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও আমরা পিছিয়ে থাকতে পারি না। তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে ড. কামাল বলেন, ভাষা আন্দোলন, যুক্তফ্রন্ট আন্দোলন, ছাত্র আন্দোলন, গণআন্দোলন সকল ক্ষেত্রেই তরুণরা অগ্রসর হয়েছে। জনগণই ক্ষমতার মালিক মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারা নির্ভেজাল গণতন্ত্র, নিরপেক্ষ নির্বাচন, আইনের শাসন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন চায়। এসব বিষয়ে জনগণ কোন রকম দ্বিমত প্রকাশ করে না বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘সংকীর্ণ স্বার্থে আমরা জাতীয় মূলনীতি বিসর্জন দিতে পারি না’। তিনি সুস্থ ধারার রাজনীতি এবং প্রকৃত গণতন্ত্রের জন্য কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ঐক্যের উদ্যোগ নিয়ে ২০০৫ সালে ডাক দিয়েছিলাম। ঐক্যের ভিত্তিতে আমরা সকল সংগ্রাম করেছি বলে মন্তব্য করেন তিনি। সাতক্ষীরায় জনগণের অধিকার আদায় করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হাতে সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা স.ম আলাউদ্দিন, কৃষক নেতা সাইফুল্লাহ লস্করসহ অনেকেই প্রাণ দিয়েছেন। এরপরও ভূমিহীনদের ১৪ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, জনগণের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হোন। সাবেক পাকিস্তান সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করল। আর জনগণ তা প্রতিরোধ করল। জেলের তালা ভাঙ্গবো, বঙ্গবন্ধুকে আনবো এই আন্দোলন করে তারা বিনা শর্তে মামলা প্রত্যাহার করতে পাকিস্তান সরকারকে বাধ্য করেছিল। জনগণের ন্যায়সঙ্গত দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার দাবিতে ড. কামাল ৬ দফা ও ১১ দফা আন্দোলনের ঐতিহাসিক কাহিনী তুলে ধরেন। ৬২’র ছাত্র আন্দোলন, ৬৬’র ৬ দফা আন্দোলন, ৬৯’র গণআন্দোলন এবং ৭০ এর সাধারণ নির্বাচন কেউ চাপিয়ে দেয়নি উল্লেখ করে ড. কামাল বলেন, জনগণের মধ্য থেকেই এই দাবি উত্থিত হয়েছিল। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন জনগণ কিভাবে মূল্যায়ন করেছে তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়ে ড. কামাল আরও বলেন, জনগণ চায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা। তারা সন্ত্রাস ও অসুস্থ রাজনীতি চায় না। তিনি দিনকে রাত বানানো যায় না বলে উল্লেখ করেন। মানুষের অধিকার আদায়ে ২৩ দফার চাইতেও সংবিধান বড় মন্তব্য করে তিনি বলেন, আসুন গোলটেবিলে বসি। ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারির নির্বাচন জনগণ বর্জন করেছিল জানিয়ে তিনি বলেন, সকল ক্ষেত্রে জনগণের অধিকারকে নিশ্চিত করতে হবে। যাদের জীবনের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা তাদের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান জানানোর আহ্বান জানিয়ে কামাল হোসেন বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা কোন ধরনের আর্থিক লাভ পাবার আশায় মুক্তিযুদ্ধ করেননি। লোভের রাজনীতি করলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে হয় বলে জানান তিনি। সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নেতা এ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, এ্যাডভোকেট আফম শফিকুল্লাহ, মুস্তাক আহমেদ, এ্যাডভোকেট সেলিম আকবর, ফজলুল করিম কাউসার, আলী নূর খান বাবুল, কাজী রবিউল ইসলাম, এনামুল হক, মামুনুর রহমান প্রমুখ।
×