ইফতেখারুল অনুপম, টাঙ্গাইল ॥ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অপরাধে রাজনীতি থেকে ছিটকে পড়েছেন আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী। আওয়ামী লীগের এক সময়ের প্রভাবশালী এ নেতা প্রথমে মন্ত্রিপরিষদ এবং পরে প্রেসিডিয়াম সদস্য ও দলের সাধারণ সদস্য পদ থেকেও বহিষ্কার হন। তার সংসদীয় আসনটি শূন্য হওয়ায় নির্বাচন কমিশন এ আসনে তফসিল ঘোষণা করেছেন। এরপর থেকেই টাঙ্গাইল-৪ কালিহাতী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে প্রার্থীরা নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন। তাদের মধ্যে চলছে মাঠ দখলের ঠাণ্ডা লড়াই। উদ্দেশ্য লতিফ সিদ্দিকীর শূন্যতা পূরণ।
টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে আওয়ামী লীগের একঝাঁক নেতা এখন মাঠে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। নিজস্ব কায়দায় তারা প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন, করছেন জনসংযোগ। এর মধ্যে কিছু নতুন মুখও রয়েছে। দলের পরীক্ষিত নেতাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই তারা মাঠে নেমেছে। নতুনদের মধ্যে কেউ কেউ ইতোমধ্যেই বাহারি রংয়ের পোস্টার ছাপিয়ে কালিহাতীবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে। নির্বাচনী এলাকার বাইরেও শোভা পাচ্ছে এসব পোস্টার। প্রার্থীদের শুভেচ্ছা পোস্টারে ছেয়ে গেছে কালিহাতী। দলের সাধারণ নেতাকর্মীদের মতে, নতুনরা যত চেষ্টাই করুক না কেন, ত্যাগী এবং কর্মীদের কাক্সিক্ষত নেতাকে মনোনয়ন দেবে দল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ আসনে সঠিক নেতা উপহার দেবে কালিহাতীবাসীকে। কালিহাতীর এ আসনে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন কালিহাতী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, এফবিসিসিআই-এর প্রথম সাবেক সহসভাপতি, সার্ক ও টাঙ্গাইল জেলা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ স্বাধীনতা ব্যবসায়ী পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম আহমেদ। তিনি এরই মধ্যে এলাকায় ব্যাপক জনমত গড়ে তুলেছেন। তিনি বলেন, কালিহাতীতে থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদ করেছি। জীবন বাজি রেখে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের জাগ্রত রেখেছি। কালিহাতীর প্রতিটি গ্রাম আওয়ামী লীগের দুর্জয় ঘাঁটি হিসেবে গড়ে তুলেছি। দেশের সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কালিহাতীর সকল জনগণকে পাশে রেখে ভবিষ্যতেও কাজ করে যেতে চাই।
এছাড়া মনোনয়ন পেতে মাঠে রয়েছেন কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোজহারুল ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু, কালিহাতী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মোল্লা, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য আবু নাসের, এ্যাডভোকেট সাবিনা ইয়াসমিন ইব্রাহীম। তবে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতে, সবাইকে ছাপিয়ে অনেক এগিয়ে আছেন মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম আহমেদ। কারণ কালিহাতীর আওয়ামী রাজনীতির মূল শ্রোতধারা রয়েছে তার পক্ষে। ভৌগোলিকভাবে কালিহাতী উপজেলাকে দুটি অংশে ভাগ করা হয়। একটি পশ্চিমাঞ্চল ও অপরটি পূর্বাঞ্চল। তৃণমূলের নেতারা বলেন, আমরা আসলে সংগঠনকে আঁকড়ে ধরে আছি। কালিহাতী আওয়ামী লীগ এক ও অভিন্ন। লতিফ সিদ্দিকী বহিষ্কারের পর নতুন অনেকেই মাঠে নেমেছে। অন্য কাউকে দিয়েই লতিফ সিদ্দিকীর অভাব পূরণ হবে না। তবে কালিহাতীতে সাংগঠনিকভাবে পরীক্ষিত নেতাদের প্রভাব ভাল। এদিকে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী উপ-নির্বাচনে এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে ব্যাপক প্রচার-প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।
হাফ ডজন আওয়ামী লীগ নেতা মাঠে
লতিফ সিদ্দিকীর শূন্যতা পূরণে টাঙ্গাইলে দৌড়ঝাঁপ
প্রকাশিত: ০৬:০১, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: