ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ইউয়ানের মূল্যপতনে এশিয়ার শেয়ারবাজার অস্থির

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ১৪ আগস্ট ২০১৫

ইউয়ানের মূল্যপতনে এশিয়ার শেয়ারবাজার অস্থির

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ চীন দ্বিতীয় দিনের মতো জাতীয় মুদ্রা ইউয়ানের অবমূল্যায়ন ঘটানোর পর এশিয়ার পুঁজিবাজারে তার মারাত্মক প্রতিক্রিয়া হয়েছে। গত বুধবার চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আবারও জাতীয় মুদ্রা ‘ইউয়ানের’ মান এক দশমিক নয় শতাংশ কমানোর ঘোষণা দেয়। এতে এশিয়া জুড়ে পুঁজি বাজারে এই সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়েছে। গত দুই দিনে দুই দফায় ইউয়ানের মূল্যমান যেভাবে কমানো হয়েছে গত দুই দশকে তার নজির নেই। চীন আশা করছে ইউয়ানের মুদ্রামান কমানো ফলে তাদের পণ্য রফতানিতে সুবিধা হবে। গত সপ্তাহান্তে প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা যায়, কেবল জুলাই মাসেই চীনের রফতানি পড়ে গেছে আট শতাংশ। এর ফলে চীনের অর্থনীতি শ্লথ হয়ে পড়েছে বলে উদ্বেগ বাড়ছে। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের পর চীন হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। ইউয়ানের মুদ্রামান কমাতে চীন যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে তার ফলে বিশ্ব জুড়ে ‘কারেন্সি যুদ্ধ’ শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র চীনের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, মুদ্রার দাম কমিয়েই অর্থনীতির হাল ফেরাতে মরিয়া চীন। আর, তার জেরে দুশ্চিন্তা ছড়িয়ছে ভারতীয় শিল্পমহলে, বিশ্ব জুড়ে পতনের গ্রাসে শেয়ার বাজার। এক ধাক্কায় ডলারে ভারতীয় টাকা পড়েছে ৫৯ পয়সা। ভারতীয় শিল্পমহল রিজার্ভ ব্যাংক ও কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয় পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখতে বলেছে। কেন্দ্রীয় উৎপাদন ও আমদানি শুল্ক পর্ষদ বুধবারই লোহা ও ইস্পাত, এ্যালুমিনিয়াম, নিকেল, তামা, দস্তার মতো বেশ কিছু ধাতুর আমদানি শুল্ক ২.৫ শতাংশ বাড়িয়েও দিয়েছে। লক্ষ্য চীনা আমদানি কমিয়ে দেশী শিল্পকে কিছুটা স্বস্তি দেয়া। এই নিয়ে পরপর দু’দিন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মুদ্রার তুলনায় দাম কমার জেরে বুধবার চীনা ইউয়ানের দাম নেমে এসেছে গত চার বছরে সবচেয়ে নিচে। দাম পড়েছে ৪ শতাংশ। প্রতি ইউয়ানের দর নেমে এসেছে ৬.৪৫১০ ডলারে, যা ২০১১ সালের অগস্টের পর সবচেয়ে কম। মুদ্রার কম দামের হাত ধরে বিশ্ব জুড়ে সস্তার পণ্য বেচে রফতানির বাজারে আরও বেশি জায়গা করে নেয়াই লক্ষ্য চীনের, যার জেরে আর্থিক বৃদ্ধির হারকেও টেনে তুলতে চায় তারা। চীনের স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, হঠাৎ করে দেশটির রফতানি আয়ে বড় পতন হয়েছে। দেশটিতে অর্থবছরের শুরুতেই অর্থাৎ গত জুলাই মাসে ৮ দশমিক ৩ শতাংশ রফতানি কমেছে, যা প্রত্যাশিত আয়ের চেয়ে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ কম। গত ছয় বছরের মধ্যে যা সর্বনিম্ন। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চীনের মুদ্রার মান পতনের কারণে মার্কিন ডলারের বিপরীতে এশিয়ার অন্যান্য দেশের মুদ্রার মানও কমেছে। চীনের রফতানির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে মুদ্রার মান কমানোর জন্য বিনিয়োগকারীদের চাপে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
×