ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দৃকে নয় নবীন শিল্পীর চিত্রপ্রদর্শনী ‘কালের কোলাজ’ চলছে

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ২৭ এপ্রিল ২০১৫

দৃকে নয় নবীন শিল্পীর চিত্রপ্রদর্শনী ‘কালের কোলাজ’ চলছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ধানম-ির দৃক গ্যালারিতে চলছে নয় নবীন শিল্পীর যৌথ চিত্রকলা প্রদর্শনী। শিরোনাম ‘কালের কোলাজ’। প্রত্যেকটি শিল্পকর্মে যেন উপস্থাপিত হয়েছে তারুণ্যের উচ্ছ্বাস। ঘটেছে আপন মেধা ও মননের নান্দনিক প্রতিফলন। শিল্পী কামরুজ্জোহা মানুষের প্রতিকৃতি নিয়ে নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। একটি মুখাকৃতির মধ্যে যেন প্রকৃতিকে ধারণ করার চেষ্টা করেছেন। মূর্ত রীতিতে শিশুশ্রমকে মেলে ধরেছেন অনুপম সরকার জনি। তার কাজের ধরনে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে উঠেছে। মৃত্তিকা সাহা এঁকেছেন দুই ভগ্নির অন্তরঙ্গ প্রতিচ্ছবি, যা তার সবল শিল্প আঙ্গিকের বহির্প্রকাশ। জাকিয়া সুলতানার শিল্পভাবনায় উঠে এসেছে মানুষ ও প্রকৃতি। তিনি এঁকেছেন প্রকৃতির অনুষঙ্গ হিসেবে পাখিদের উৎসব। গৌতম দাশগুপ্তের শিল্পকর্মের বিষয়বস্তু নাগরিক জীবনের ইট কাঠের দালান-কোঠা, যার দ্বারা প্রকাশ পেয়েছে তথাকথিত নাগরায়নের বিরুদ্ধে বক্তব্য। সাদিয়া বনি প্রকৃতির নিসর্গেই অবগাহন করার চেষ্টা করেছেন তার চিত্রকর্মে। অত্যন্ত জোরালো উজ্জ্বল রঙে তুলে ধরেছেন প্রকৃতির সৌন্দর্যকে। শবনম সিদ্দিকী শোভার কাজে ফুটে উঠেছে নারীর অবয়ব ও ফুল। তার উপস্থাপনা বেশ নান্দনিক। শারমিন আক্তার লিনার চিত্রকর্মে বাস্তবধর্মী আঙ্গিকে প্রকাশ পেয়েছে পথশিশুদের কথা। সম্পা হালদার এঁকেছেন ময়ূরের মুখ। তার চিত্রকর্মে লালিত্যময় অলঙ্কারিক গুণ বিদ্যমান। সব মিলিয়ে নয় নবীন শিল্পীর সৃজিত ২৪টি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে প্রদর্শনীতে। প্রদর্শনী চলবে আগামী ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। বজলুর রহমান স্মৃতিপদক পাচ্ছেন চার গুণীজন ॥ এ বছর চার গুণীজনকে প্রদান করা হবে খেলাঘর প্রবর্তিত সাংবাদিক বজলুর রহমান স্মৃতিপদক। এই চার গুণী হলেন অধ্যাপক মুস্তাফা নূর-উল-ইসলাম, অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, নাট্যজন লিয়াকত আলী লাকী ও খেলাঘর সংগঠক নৃপেন্দ্র কুমার চক্রবর্তী। জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন খেলাঘরের ৬৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ স্মৃতিপদক প্রদান করবে কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর। আগামী ২ মে বিকেল ৫টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে চার গুণীজনের হাতে এ পদক তুলে দেয়া হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। বিশেষ অতিথি থাকবেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ। সভাপতিত্ব করবেন খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিম-লীর চেয়ারম্যান অধ্যাপিকা পান্না কায়সার। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এ আয়োজনে বাঙালী ঐতিহ্যলালিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করবে খেলাঘরের খুদে শিল্পীরা। লোককবি আবদুল হাই মাশরেকীর জন্মজয়ন্তী ॥ আল্লাহ মেঘ দে, পানি দে/ছায়া দেরে তুই আল্লাহ মেঘ দেÑবৃষ্টির জন্য প্রাণ আকুল করা এই গানটি বহুল পরিচিত। ত্রিশের দশকের লোককবি আবদুল হাই মাশরেকী রচিত এই গানটি যেন সুরপ্রেমীর হৃদয়ে বৃষ্টি ঝরায়। প্রখ্যাত এই লোককবির ৯৬তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে রবিবার থেকে শুরু হলো দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। ‘এবার জাগাও মোরে’ শীর্ষক তাঁরই কাব্যবাণী ধারণ করে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে অগ্নিবীণা ও লোককবি আবদুল হাই মাশরেকী গবেষণা কেন্দ্র। মাশরেকীর জীবন দর্শনের সৃষ্টি কবিতা, গান, পালা ও কবি নজরুললের জীবনভিত্তিক জারির পরিবেশনায় সাজানো অনুষ্ঠানের সূচনা রবিবার বিকেলে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক। আলোচনায় অংশ নেন মাশরেকী গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান উপদেষ্টা অভিনয়শিল্পী শংকর সাঁওজাল, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের সংসদ সদস্য ফকরুল ইসলাম, দি রিপোর্ট ২৪ডটকমের উপদেষ্টা সম্পাদক ফকির শওকত আলী প্রমুখ। লোককবির জন্মজয়ন্তী পর্ষদের আহ্বায়ক ডাঃ বিশ্বাস শাহীন হাসানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন অগ্নিবীণার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এইচ.এম সিরাজ। কবির সাহিত্যকর্ম, জীবন-দর্শন নিয়ে আলোচনা শেষে সন্ধ্যায় শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এতে আবৃত্তি ও কাব্যনৃত্য পরিবেশন করে ‘বঙ্গলোক’। এরপর পালানৃত্য ‘জরিনা সুন্দরী’ পরিবেশন করে গে-ারিয়া কিশোলয় কচিকাঁচার মেলা। এছাড়াও এ অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয় আধুনিক ও লোকগান। অনুষ্ঠানে কয়েকজন অবৃত্তিশিল্পীকে সংবর্ধনা ও কবি আবদুল হাই মাশরেকী স্মৃতি পদক প্রদান করা হয়। সঙ্গীতের পাইরেসি রোধে অভিযান জোরদার ॥ শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, সঙ্গীত ও শিল্প-সাহিত্যের মতো সৃজনশীল মেধাসম্পদের পাইরেসিরোধে দ্রুত দেশব্যাপী অভিযান জোরদার করা হবে। এ ধরনের অপকর্মের বিরুদ্ধে অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত কপিরাইট আইনের আলোকে এ অভিযান চলবে। এ জন্য এ সব মেধাসম্পদের মালিকানা সুরক্ষায় গীতিকার, সুরকার, শিল্পী, সাহিত্যিক, নাট্যকারসহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সঙ্গে জড়িত সকলের সহায়তা দরকার। রবিবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘সঙ্গীতের চেতনায় জেগে উঠুন’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস উপলক্ষে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদফতর (ডিপিডিটি) এ সেমিনার আয়োজন করে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোঃ ফরহাদ উদ্দিনের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থান করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের চেয়ারম্যান শাহনাজ নাসরিন ইলা। অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই’র সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, ডিপিডিটি’র ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মোঃ ইলিয়াস ভূঁইয়া আলোচনায় অংশ নেন। আসাদুজ্জামান নূর বলেন, মেধাসম্পদ বর্তমানে অর্থনৈতিক সম্পদে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশে সঙ্গীত শিল্প খাত থেকে সরকার প্রতিবছর ২শ’ ৫০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করছে। এর পাশাপাশি দেশব্যাপী আয়োজিত বই মেলা থেকে প্রকাশক ও সরকার আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। চারু ও কারুশিল্প গ্রামীণ অর্থনীতির ভিত শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তিনি শিল্পীর প্রতিভার বিকাশে সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি সৃজনশীল মেধাসম্পদের সুরক্ষায় আইনী কাঠামো শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্ব দেন। শিল্পকলায় মঞ্চস্থ মেরাজ ফকিরের মা ॥ আবদুল্লাহ আল মামুন রচিত ও নির্দেশিত থিয়েটারের দর্শকনন্দিত সাড়া জাগানো নাটক মেরাজ ফকিরের মা। রবিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটারে মঞ্চস্থ হলো ব্যতিক্রমী গল্পের প্রযোজনাটি। নাটকের কাহিনী গড়ে উঠেছে ধর্মীয় অনুভূতিকে কেন্দ্র করে। এক মায়ের গর্ভে জন্ম নিয়ে একজন মানুষ বেড়ে উঠেছে একটি নামে। দীর্ঘ ৩৯ বছর পর আকস্মিকভাবে সে জানতে পারে তার গর্ভধারিণী মায়ের ধর্ম আর তার ধর্ম এক নয়। ধর্ম পরিচয়ে যে ফারাক রচিত হয় তা কি মা-ছেলের সম্পর্ককে ফারাক করে দিতে পারে? ধর্মের ভিন্নতার কারণে ছেলে কি অস্বীকার করতে পারে তার মাকে? এমনি সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা এবং মানবের স্বরূপ প্রকাশের চেষ্টা হয়েছে নাটকে। ধর্মব্যবসাকে পুঁজি করে ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে গুটিকয়েক সমাজপতি সমাজের মানুষের ক্ষতি করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে এগিয়ে যায় নাটকটির কাহিনী। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন রামেন্দু মজুমদার, ফেরদৌসী মজুমদার, ত্রপা মজুমদার, মজিবর রহমান জুয়েল, তানজুম আরা পল্লী, মারুফ কবির, সাইফ জোয়ারদার, আব্দুল কাদের, তোফা হোসেন প্রমুখ। হাসান আহমেদের মঞ্চ পরিকল্পনায় আলোক পরিকল্পনায় ছিলেন ঠান্ডু রায়হান। আবহসঙ্গীত করেছেন প্রদীপ কুমার নাগ।
×