অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, যারা দেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে তারা হচ্ছে সভ্যতার বিরুদ্ধে প্লেগ রোগ। যারা সমাজে রাজনৈতিক ইনফ্লুয়েঞ্জা সৃষ্টি করছে তাদের ধ্বংস করা হবে। এ অস্বাভাবিক শক্তির চ্যালেঞ্জ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মোকাবেলা করা হবে। একটি সভ্য দেশ একটি সভ্য সরকার যেভাবে তার ও সৃষ্ট নৈরাজ্য মোকাবেলা করে আমরাও তাই করব। বৃহস্পতিবার নবম আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি শো ও সেমিনার-২০১৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, নিরাপদ মুরগি ও ডিম উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিদেশে রফতানি বাড়াতে হবে। এ জন্য তিনি সরকারের পক্ষ থেকে এ শিল্পের উন্নয়নে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। মন্ত্রী বলেন, ট্যানারির বর্জ্য দিয়ে একটি অসাধু চক্র অনিরাপদ পোল্ট্রি খাদ্য তৈরি করছে। এ বিষয়ে সরকার সজাগ রয়েছে। সরকারের হস্তক্ষেপের কারণে এ ধরনের অসাধু প্রবণতা বিলুপ্ত হওয়ার পথে। ফলে ভোক্তারা নিঃসন্দেহে ডিম ও মাংস খেতে পারছেন। পোল্ট্রি শিল্পের উৎপাদন আরও বাড়াতে এবং মান উন্নয়ন করতে উদ্যোক্তা ও বিজ্ঞানীদের মেধার সমন্বয় ঘটাতে হবে।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনের পোল্ট্রি শো ও সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সচিব ইউনুসুর রহমান, প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক অজয় কুমার রায়, ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স এ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ইএন সিলভা, জেনালের সেক্রেটারি ড. আরডব্লিউএ ডব্লিউ মুল্ডার। ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স এ্যাসোসিয়েশনের বাংলাদেশ শাখার সভাপতি মসিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নারিশ পোল্ট্রির পরিচালক সামসুল আরোফিন খালেদ, বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স এ্যাসোসিয়েশনের বাংলাদেশ শাখার সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ও সহ-সভাপতি আবু লুৎফে ফজলে রহমান খান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কৃষিসচিব ইউনুসুর রহমান বলেন, এ খাতের অর্জনকে টেকসই করতে হবে। বর্ধিত জনসংখ্যার খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণে কৃষি এবং অকৃষি উভয় সেক্টরকে কাজ করতে হবে। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক অজয় কুমার রায় বলেন, স্বাস্থ্যবান জাতি গঠনে আমাদের আরও অধিক পরিমাণ পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। বর্তমানের ডিম ও মুরগির মাংস গ্রহণের হারকে বাড়তে হবে। স্বাস্থ্যবান মেধাবী জাতি গড়তে হলে আরও অধিক পরিমাণ মুরগির ডিম ও মাংস খেতে হবে।
ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স এ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ই এন সিলভা বলেন, পোল্ট্রি শিল্প হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশগুলোর পুষ্টি চাহিদা পূরণের অন্যতম উৎস। সুতরাং এ শিল্পের উন্নয়নে সকলকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। তিনি ঘোষণা করেন আগামী বছর ৫Ñ৯ সেপ্টেম্বর বেইজিং এ ওয়ার্ল্ড পোল্ট্রি কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে।
ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স এ্যাসোসিয়েশনের জেনারেল সেক্রেটারি ড. আর ডব্লিউ এ ডব্লিউ মুল্ডার বলেন, বাংলাদেশ এ ধরনের পোল্ট্রি শো আয়োজনের মধ্যদিয়ে তাদের বিকাশকে তুলে ধরেছে। বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ শাখা ওয়ার্ল্ড পোল্ট্রি সায়েন্স এ্যাসোসিয়েশনের সবচেয়ে বড় শাখা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স এ্যাসোসিয়েশনের বাংলাদেশ শাখার সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, বর্তমানে পোল্ট্রি শিল্পে ৬ মিলিয়ন মানুষ জড়িত রয়েছেন। ২০২০ সালের মধ্যে এ সংখ্যা ১০ মিলিয়নে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। দেশিয় পোল্ট্রি শিল্পের বিকাশ ত্বরান্বিত করতে সরকারের কাছে কর সুবিধা এবং আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণার দাবি জানান।
নাশকতাকারীরা সভ্যতার বিরুদ্ধে প্লেগ রোগ ॥ মতিয়া চৌধুরী
প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: