
খুলনার পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলার কয়েক হাজার বিঘা জমিতে আসন্ন আমন মৌসুমে ধান চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। মিনহাজ নদীতে অস্বাভাবিক জলাবদ্ধতাই এর মূল কারণ। নদীর পানি উপচে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা পড়েছেন চরম বিপাকে। দ্রুত সমাধান না হলে এ বছর ধান চাষ প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে মিনহাজ নদীর পানি ধারণক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। নদীর বিভিন্ন স্থানে পলি জমে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাও ব্যাহত হচ্ছে। ফলে নদীর পানি আশপাশের নিচু এলাকা ও ফসলি জমিতে প্রবেশ করেছে। পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলার বিভিন্ন বিলে প্রায় ৪-৫ ফুট পানি জমে আছে, যা ধান চাষের জন্য সম্পূর্ণ অনুপযোগী।
কৃষকদের ভাষ্য, সাধারণত এই সময়ে আমনের চারা রোপণের প্রস্তুতি শুরু হয়। কিন্তু জলাবদ্ধতার কারণে জমিতে নামাই যাচ্ছে না। অনেক কৃষক ঋণ নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন—এখন তাদের মাথায় হাত। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না হলে হাজারো কৃষক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এবং এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে স্থানীয় খাদ্য উৎপাদনেও।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা দ্রুত নদী খনন ও পানি অপসারণে কার্যকর উদ্যোগের দাবি জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে মিনহাজ নদীর নাব্যতা হ্রাস পেলেও কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। জরুরি ভিত্তিতে পাম্প বা বিকল্প ব্যবস্থায় পানি সরিয়ে জমি প্রস্তুত করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা চলছে। তবে কৃষকরা বলছেন, শুধু আশ্বাসে কাজ হবে না—প্রয়োজন বাস্তব পদক্ষেপ।
যদি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে জলাবদ্ধতা দূর না হয়, তবে পাইকগাছা ও কয়রা অঞ্চলের বিশাল এলাকার কৃষকরা আমন ধান চাষ থেকে বঞ্চিত হবেন। এতে যেমন তাদের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে, তেমনি স্থানীয় অর্থনীতিও বড় ধাক্কা খাবে। সচেতন মহলের মতে, সরকারের এখনই কার্যকরভাবে কৃষকদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।
নুসরাত