ছবি: জনকণ্ঠ
বাগেরহাটে হ্যামকো কোম্পানির ‘অ্যাঞ্জিন মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজে’ ৮ ঘণ্টাব্যাপী ডাকাতি হওয়া মালামাল উদ্ধার ও জড়িত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ও নিজস্ব গোয়েন্দা তৎপরতার ভিত্তিতে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতি হওয়া মালামালসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বুধবার (০৯ জুলাই) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেসব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোঃ তৌহিদুল আরিফ। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মহিদুর রহমান, শামীম হোসেন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম শামীম, ওসি ডিবি শরিফুল ইসলাম, ওসি ফকিরহাট আবদুর রাজ্জাক মীর, ওসি ডিএসবি আব্দুর রাজ্জাক হোসেনসহ পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্ধার মালামালের মধ্যে রয়েছে ১০ টন অ্যালুমিনিয়াম বার, ১ টন তাম্র ও আড়াই টন তাম্র তার। যার বাজারমূল্য আনুমানিক এক কোটি ২ লাখ টাকা।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার কালামৃধা এলাকার মৃত আব্দুল ছাত্তারের ছেলে স্বপন হোসেন (৩২), বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার পতিহার পূর্বপাড়া এলাকার আদম আলী খানের ছেলে জলিল খান (৪৫), রাজবাড়ী সদরের রামকান্তপুর এলাকার হোসেন আলীর ছেলে জয়নাল ফকির (৪৫), চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ঢাকিরগাঁও এলাকার ছিদ্দিক মৃধার ছেলে ইকবাল হোসেন (৩৫), ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার তারাগাজী এলাকার চাঁন মিয়ার ছেলে আল আমিন (৩৬), নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলার দক্ষিণ মানিকপুর এলাকার গোলাম সরোয়ারের ছেলে গোলাম মর্তুজা (৩৬), চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড উপজেলার উত্তর বাঁশবাড়িয়া এলাকার মাহমুদুর রহমানের ছেলে আশরাফুল ইসলাম (৩৫), বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার বৈলতলী এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে আব্দুর রহমান (৪২) ও খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার দক্ষিণ খাজাডাঙ্গা এলাকার ইব্রাহিম শেখের ছেলে রহমত শেখ (৩৭)।
তাদের মধ্যে ৫ জন সরাসরি ডাকাতির সঙ্গে জড়িত। ২ জন ডাকাতির মালামালের ক্রেতা এবং ২ জন—কোম্পানির নিরাপত্তা প্রহরী আব্দুর রহমান ও রহমত শেখ—এই ডাকাতির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত ৪ জুলাই রাতে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার কাটাখালি এলাকায় মহাসড়কের পাশে থাকা হ্যামকো কোম্পানির প্রতিষ্ঠান অ্যাঞ্জিন মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজে নিরাপত্তা প্রহরী ও শ্রমিকদের বেঁধে রেখে প্রায় ৮ ঘণ্টা ধরে এক কোটি ২ লাখ টাকার মালামাল ট্রাকে করে নিয়ে যায় ডাকাত দল। পরদিন ওই প্রতিষ্ঠানের সহকারী ব্যবস্থাপক আশরাফুল মিজান বাদী হয়ে ফকিরহাট থানায় একটি ডাকাতি মামলা দায়ের করেন। মামলার পরপরই পুলিশ অভিযান শুরু করে।
পুলিশ সুপার মোঃ তৌহিদুল আরিফ জানান, ঘটনার পর থেকে পুলিশ তৎপর ছিলো। তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ৭ জুলাই চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতির মালামালসহ ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যমতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরও ৫ জনকে আটক করা হয়। এছাড়া ফকিরহাট থেকে ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা অন্য কোনো ডাকাতির সঙ্গেও জড়িত কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ফ্যাক্টরিতে নিয়োজিত কেউ জড়িত রয়েছে কিনা, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে কোম্পানিটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল খুবই দুর্বল। এত বিপুল পরিমাণ মালামাল রাখলেও তারা বিষয়টি পুলিশকে জানায়নি। কোম্পানি কর্তৃপক্ষকে নিরাপত্তা জোরদারের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
শহীদ
