ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

টানা বৃষ্টিতে হাঁটুপানি বাগেরহাটে, চরম দুর্ভোগে মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট 

প্রকাশিত: ২১:৩৪, ৯ জুলাই ২০২৫

টানা বৃষ্টিতে হাঁটুপানি বাগেরহাটে, চরম দুর্ভোগে মানুষ

ছবি: জনকণ্ঠ

গত চার দিনের টানা বৃষ্টিতে বাগেরহাট শহরের সড়ক, গলি, বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ নিম্নাঞ্চলের শতাধিক গ্রাম দৃশ্যত তলিয়ে গেছে। এমনকি জেলা শহর বাগেরহাট পৌরসভার অধিকাংশ এলাকায় হাঁটুপানি জমেছে। দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। পানিবন্দি হয়ে মানবেতর অবস্থায় পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। সরকারি-বেসরকারি ভবন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও পানি প্রবেশ করেছে। অসংখ্য চিংড়ি ঘের ও পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। অতিরিক্ত পানির চাপ ও লাগাতার বৃষ্টিতে বেমরতা’র চিতলী এলাকায় ভৈরব নদের বাঁধ ভেঙে গেছে।

বুধবার সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের খানজাহান আলী রোড, রেল রোড, সাধনার মোড়, শালতলা, পিটিআই মোড়, খারদার স্কুল রোড, জেলা হাসপাতাল মোড়, জেলা ডাকঘরের সামনে, বাসাবাটি, মিঠাপুকুরপাড় মোড়, পৌরসভার পাশের এলাকা, জাহানাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় সড়ক, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পিছনসহ বহু স্থানে হাঁটুপানি জমে রয়েছে। অনেক দোকান ও বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। রাস্তা-ঘাটে পানি জমে থাকায় যান চলাচলে চরম ব্যাঘাত ঘটছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার দিনমজুর, রিকশাচালক ও খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ।

রিকশাচালক মো. শাহিন বলেন, “সকাল থেকে এখন প্রায় তিনটা বাজে, কিন্তু ৫০ টাকাও ইনকাম হয়নি। পানিতে রিকশা চালানো যাচ্ছে না, যাত্রীও কম।”
শহরের বাসিন্দা গৃহবধূ জেসমিন আক্তার বলেন, “বাড়ির ভেতরে পানি উঠে গেছে। চুলায় আগুন ধরানো যাচ্ছে না। ছোট ছেলেটা পানিতে সর্দি-জ্বরে ভুগছে।”
ব্যবসায়ী ফিরোজ শেখ বলেন, “দোকানে পানি উঠে গেছে। কষ্ট করে মালামাল সরিয়ে রেখেছি। বিক্রি নেই, লোকসান গুনছি।”

শুধু শহর নয়, বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, মোংলা, রামপাল ও কচুয়ার নিম্নাঞ্চলেও জলাবদ্ধতার খবর পাওয়া গেছে। এসব এলাকার অনেক ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে, মাছ বেরিয়ে গেছে। হুমকির মুখে পড়েছে জেলার হাজার-হাজার চিংড়ি ঘের ও পুকুর। চাষিরা তাদের মৎস্য খামার রক্ষায় প্রাণান্ত চেষ্টা করছেন। লক্ষাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে আছেন।

তবে বাগেরহাট পৌরসভার প্রশাসক ডা. ফখরুল হাসান বলেন, “পৌর শহরে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে, যা দৃশ্যমান হলে জনভোগান্তি কমবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।”
 

শহীদ

×