
ছবি: সংগৃহীত।
চট্টগ্রামের আনোয়ারা ও চন্দনাইশ হয়ে কক্সবাজারের সঙ্গে সরাসরি সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। শহীদ মুরিদুল আলম সড়কের ১৭ কিলোমিটার অংশকে ১৮ ফুট থেকে ৩৪ ফুটে উন্নীত করে বিকল্প মহাসড়ক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের প্রাথমিক বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৪৬৫ কোটি টাকা।
২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বহুল প্রত্যাশিত কর্ণফুলী টানেল চালু হওয়ার পর থেকেই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছে সওজ। টানেলের সুবিধা কার্যকরভাবে কাজে লাগিয়ে কক্সবাজারের সঙ্গে বিকল্প ও কার্যকর যোগাযোগ নিশ্চিত করতেই আনোয়ারা কালাবিবির দীঘির মোড় থেকে গাছবাড়িয়া কলেজ গেইট পর্যন্ত সড়ক প্রশস্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ সড়কটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত হবে।
সওজ সূত্রে জানা গেছে, বিকল্প এই সড়কটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে নতুন বিকল্প মহাসড়ক হিসেবে পরিচিতি পাবে। এটি আনোয়ারা-কালাবিবির দীঘি থেকে শুরু হয়ে আনোয়ারা সদর, বরকল ব্রিজ, চন্দনাইশ সদর, গাছবাড়িয়া কলেজ গেইট হয়ে মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত হবে। এতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার কমে যাবে।
এই সড়কটি ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পায়নের গতিকে বেগবান করবে এবং যানজট নিরসনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রস্তাবিত ৩৪ ফুট প্রশস্ত এই সড়কটি চট্টগ্রাম বন্দর, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মহেশখালী গভীর সমুদ্র বন্দর ও টেকনাফ স্থলবন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত হবে। এর ফলে কর্ণফুলী টানেল ও ছয় লেনের সংযোগ সড়কের মাধ্যমে কক্সবাজারের সঙ্গে একটি পূর্ণাঙ্গ সড়ক নেটওয়ার্ক তৈরি হবে।
দক্ষিণ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু কুমার চাকমা বলেন, “এই বিকল্প সড়কটি বর্তমানে ১৮ ফুট প্রশস্ত। এটিকে ৩৪ ফুটে উন্নীত করার জন্য ৪৬৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রেরণ করা হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের বিভিন্ন দিক যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের সভায় উপস্থাপনের পর তা পুনরায় পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে। যাচাই-বাছাই শেষে একনেকে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। অনুমোদন পেলে তিন ধাপে বাজেট বরাদ্দ দিয়ে পর্যায়ক্রমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।”
এছাড়া জানা গেছে, প্রকল্প বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে আনোয়ারা-চন্দনাইশ সংযোগ সড়কে চাঁনখালী খালের ওপর ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বরকল সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও বিএনপি নেতা এডভোকেট নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “টানেল কেন্দ্রিক বিকল্প সড়ক বাস্তবায়িত হলে চন্দনাইশ ও বাঁশখালী দুটি রুটে কক্সবাজার যাওয়া যাবে। টানেলের মাধ্যমে দক্ষিণ চট্টগ্রামের শিল্প ও ব্যবসা বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটছে। বিকল্প সড়কটি বাস্তবায়ন হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামে একটি বিশাল শিল্পজোন গড়ে উঠবে এবং অর্থনৈতিকভাবে অঞ্চলটি বিপ্লবের মুখোমুখি হবে। এই উন্নয়নের সুফল পেতে হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের মেধাবী মানুষদের এগিয়ে আসতে হবে।”
সায়মা ইসলাম