
ছবিঃ সংগৃহীত
যৌতুকের টাকা না পেয়ে বাবা কর্তৃক নবজাতক সন্তানকে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিবাদ করায় স্ত্রীকে অমানুষিক নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। গুরুতর আহত ওই নারীকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের জয়শ্রী গ্রামে ঘটেছে।
আজ মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুরে উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভুক্তভোগী ও তার স্বজনরা জানিয়েছেন, হস্তিশুন্ড গ্রামের মৃত হাকিম মৃধার মেয়ে রোজিনা বেগম (৩০) এর সঙ্গে দীর্ঘদিন আগে জয়শ্রী গ্রামের হাতেম আলী সরদারের ছেলে মনজুর আলম সরদার (৪৪) এর সামাজিকভাবে বিয়ে হয়।
রোজিনা বেগম জানান, বিয়ের পর থেকেই মনজুর আলম তাকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করে বাবার বাড়ি থেকে কয়েক দফায় মোটা অঙ্কের টাকা যৌতুক আদায় করেন। সর্বশেষ তার বাবার বাড়ির সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা আনার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন।
তিনি আরও জানান, গত তিন মাস আগে গৌরনদীর একটি ক্লিনিকে সিজারের মাধ্যমে তিনি একটি ছেলে সন্তান জন্ম দেন। কিন্তু তার স্বামী তাকে জানান যে, একটি কন্যা সন্তান জন্ম হয়েছে এবং সে খুবই অসুস্থ হওয়ায় তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর সেখানেই সে মারা যায়। পরে লাশ দেখতে চাইলে তার স্বামী বলেন, লাশ আর আনা হয়নি।
রোজিনা বেগম আরও বলেন, গত ৩০ জুন বিকেলে তিনি জানতে পারেন, তার যৌতুকলোভী পাষণ্ড স্বামী মনজুর আলম নবজাতক ছেলেকে আড়াই লাখ টাকার বিনিময়ে এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে বিক্রি করেছেন। বিষয়টি জানতে পেরে তিনি প্রতিবাদ করায় পাষণ্ড মনজুর আলম তাকে অমানুষিক নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন।
প্রতিবেশীদের কাছ থেকে রোজিনার স্বজনরা খবর পেয়ে ওইদিন রাতেই তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে উজিরপুর উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন।
স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে মনজুর আলম সরদার বলেন, “আমি মারধর করিনি, উল্টো আমাকে মারধর করেছে।”
নবজাতক বিক্রির অভিযোগ বিষয়ে তিনি বলেন, “ওই সময় আমার স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তির কাগজে আমি স্বাক্ষর করিনি, তাই এ বিষয়ে আমি দায়ী নই। নবজাতক সন্তানের কী হয়েছে, তা আমি জানি না।”
উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুস সালাম বলেন, “এ বিষয়ে এখনো কেউ থানায় অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
মারিয়া