
সংগৃহীত
রবিবার সকাল ১১টার দিকে রাজধানীর আফতাবনগরের মোড়ে চলছিল এক ব্যাটারিচালিত রিকশা। পেছনে বসা ছিল সাদিয়া (২০)। হঠাৎ করেই তার ওড়না পেঁচিয়ে যায় রিকশার চাকায়।
মুহূর্তেই গলায় টান পড়ে, দম বন্ধ হয়ে আসে। তিনি কিছু বলার আগেই নিস্তেজ হয়ে পড়েন। স্থানীয়রা দৌড়ে এসে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন, কিন্তু বেলা ১টার দিকে চিকিৎসক জানান সে আর বেঁচে নেই।
"সব ঠিক ছিল... শুধু ওড়নাটা খোলা ছিল" কান্নায় ভেঙে পড়েন বড় বোনসাদিয়ার পরিবার বলছে, “সে হাসিমুখে বলছিল, বাড়ি গিয়ে খিচুড়ি রান্না করবে। কে জানত, রিকশার একটি চাকাই তার গলায় দড়ি হয়ে আসবে?”
এই কান্না শুধু সাদিয়ার পরিবারের নয় এটা আমাদের সবার। কারণ এমন ঘটনা পুনরায় ঘটছে বারবার, আমরা শুধু খবরের শিরোনাম হয়ে ভুলে যাচ্ছি।
একটা ছোট অসাবধানতা, একটা চিরস্থায়ী অনুশোচনা ,এই ঘটনার মতো করেই গোপালগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় একই ধরনের দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে একের পর এক নারী।
- একবারও ভাবুন—ওড়নাটা যদি একটু গিঁট দিয়ে বাঁধা থাকত...
- রিকশাওয়ালা যদি একটু সাবধান করত...
- সামনে যদি সাইনবোর্ড থাকত ‘ওড়না সাবধানে পরুন’...
তাহলে কি সাদিয়া আজ আমাদের মাঝে থাকতেন?
কীভাবে আমরা এরকম মৃত্যু থামাতে পারি?
- রিকশা ও অটোতে উঠলে ওড়না বা শাড়ি গলায় পেঁচিয়ে রাখুন বা ব্যাগে রাখুন
- শিশু ও নারীদের জন্য জনসচেতনতামূলক প্রচারণা চালান
- চালকদের প্রশিক্ষণে নিরাপত্তা বিষয়ক বার্তা অন্তর্ভুক্ত করুন
- শহরের মোড়ে মোড়ে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড স্থাপন করা হোক
একটা জীবন গেলো বাকিরা কি একটু সাবধান হবো না? সাদিয়া আজ নেই। তার খালি রিকশার আসনে এখন শুধু একরাশ প্রশ্ন। আপনি যখন পরবর্তীবার রিকশায় উঠবেন একটু ভাবুন, আপনার ওড়নাটা কোথায়?
এই গল্প শুধু একটা মৃত্যুর নয়, এটা আমাদের সমাজের অসচেতনতার প্রতিচ্ছবি। আজ যদি আমরা শিক্ষা নেই তবেই সাদিয়ার মৃত্যু বৃথা যাবে না।
হ্যাপী