ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৩ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে হাউসবোটে পর্যটকদের হয়রানি

মোঃ এমদাদ হোসেন ভুঁইয়া, সিলেট

প্রকাশিত: ১৬:৫০, ১১ জুন ২০২৫

সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে হাউসবোটে পর্যটকদের হয়রানি

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে টাঙ্গুয়ার হাওরে হাউসবোটে যেসব সেবা ও সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়, সেগুলো না থাকাসহ পর্যটকদের হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পর্যটকদের সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেজে এ–সংক্রান্ত একটি জরুরি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়, পর্যটকবাহী হাউসবোটে সেবা গ্রহণে বিভিন্ন হয়রানির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। হাউসবোটগুলো বিভিন্ন পর্যটন স্পটের বুকিং গ্রহণ করে; কিন্তু যাত্রীদের প্রতিশ্রুত সেবা দেয় না এবং যান্ত্রিক ত্রুটির নাম করে নির্ধারিত পর্যটন স্পটে নিয়ে যায় না। পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে অতিরিক্ত আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে চুক্তি লঙ্ঘন করছেন মর্মে প্রতারণার তথ্যও রয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লাস ট্রাভেল পরিচালিত ‘হাওরডিঙ্গি’ হাউসবোট পর্যটকদের বিভিন্ন সময়ে প্রতিশ্রুত সেবা দেয়নি বলে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, হাওরডিঙ্গি সময়মতো যাত্রা শুরু এবং নির্ধারিত আনুষঙ্গিক সেবা যেমন বিদ্যুৎ, আবাসন, স্যানিটেশন সেবা দেয়নি। এমনকি যান্ত্রিক ত্রুটির নামে যাত্রীদের নিরাপত্তাহীন অবস্থায় রেখেই হাউসবোট কর্তৃপক্ষ অন্যত্র চলে যায়।

বিজ্ঞপ্তিতে হাওরডিঙ্গি হাউসবোটসহ অন্যান্য হাউসবোটে ভ্রমণের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের জন্য পর্যটকদের অনুরোধ জানানো হয়। এ ছাড়া হাউসবোটে কোনো অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে বা প্রতারণার শিকার হলে দ্রুত জেলা প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য উল্লাস ট্রাভেলের ফেসবুক পেজে দেওয়া মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে কেউ ফোন রিসিভ করেননি।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল হাসেম বলেন, ‘হাউসবোটগুলোকে অবশ্যই নীতিমালা মেনে চলতে হবে। পর্যটকদের প্রতিশ্রুত সেবা ও প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দিতে হবে। কোনোভাবেই হাওরের প্রকৃতি–পরিবেশের ক্ষতি হয়—এমন কাজ করা যাবে না। কোনো অভিযোগ পেলেই আমরা ব্যবস্থা নেব।’

সুনামগঞ্জ শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে তাহিরপুর ও মধ্যনগর উপজেলায় টাঙ্গুয়ার হাওরের অবস্থান। এই হাওরের আয়তন ১২ হাজার ৬৫৫ হেক্টর। হাওরে ছোট–বড় ১০৯টি বিল আছে। হাওরের ভেতরে অসংখ্য খাল ও নালা রয়েছে। বর্ষায় সব মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। হাওরের উত্তরে ভারতের মেঘালয় পাহাড়। এই পাহাড় থেকে ৩৮টি ঝরনা নেমে এসে মিশেছে টাঙ্গুয়ার হাওরে।

হাওর, পাহাড়, নদী ও লেকের অপার সৌন্দর্য একসঙ্গে ধরা দেয় সুনামগঞ্জে। হাওর পর্যটনে গত পাঁচ বছরে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে হাউসবোট। আধুনিক সুযোগ–সুবিধাসহ টাঙ্গুয়ার হাওরে নিবন্ধিত প্রায় ১০০ হাউসবোট আছে। এর বাইরে নানা জায়গা থেকে ছোট–বড় প্রায় ১০০ নৌকা ও বোট আসে টাঙ্গুয়ার হাওরে। পর্যটকেরা এসব বোটে সারা দিন হাওরে ঘুরে বেড়ান, পরে বোটেই রাত কাটান হাওরের টেকেরঘাট এলাকায়। আবার অনেক বোট সারা দিন ঘুরে পর্যটকদের নিয়ে হাওর থেকে ফিরে আসে।

সজিব

×