ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৬ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

১১ দিন ধরে নিখোঁজ বৃদ্ধের ছিন্নভিন্ন লাশ জঙ্গলে, খাচ্ছিলো শেয়াল-কুকুর!

এনামুল হক এনা, উপকূলীয় প্রতিনিধি, বরিশাল।

প্রকাশিত: ২০:৪৭, ২৫ মে ২০২৫

১১ দিন ধরে নিখোঁজ বৃদ্ধের ছিন্নভিন্ন লাশ জঙ্গলে, খাচ্ছিলো শেয়াল-কুকুর!

উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের তিল্লা গ্রাম ঘেঁষে বয়ে চলা খালের পাশের ঝোপঝাড় থেকে একটি কঙ্কাল পাওয়া গেছে। কঙ্কালটির বা হাত বিচ্ছিন্ন অবস্থায় পাশেই পড়ে ছিল। এর পাশে পড়ে থাকা টুপি, লুঙ্গি, গেঞ্জি ও জুতা দেখে কঙ্কালটি আব্দুর রহিম সরদার (৮৫) নামের এক বৃদ্ধের বলে শনাক্ত করেন তার পরিবারের সদস্যরা।


রোববার (২৫ মে) দুপুরে হারিয়ে যাওয়া রহিমের ছোট ছেলে মোস্তফা সরদার খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে ঝোপের মধ্যে কঙ্কালটি দেখতে পান। পরে পরিবারের অন্য সদস্যরা গিয়ে পাশে থাকা পোশাক দেখে মরদেহটি শনাক্ত করেন। খবর পেয়ে রাঙ্গাবালী থানা পুলিশ বিকেল ৫টার দিকে কঙ্কালটি উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে পাঠায়। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্য ও কৌতূহলের সৃষ্টি করেছে। 


স্থানীয়রা জানান, আব্দুর রহিম সরদারের বাড়ি ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের তিল্লা গ্রামে। তিনি তার তিন ছেলে মান্নান সরকার, সোনা সরদার ও মোস্তফা সরদারের বাড়িতে পালাক্রমে থাকতেন। সর্বশেষ তিনি তিল্লা গ্রামে অবস্থিত মেঝো ছেলে সোনা সরদার ও ছোট ছেলে মোস্তফা সরদারের বাড়ি থেকে পাশর্^বর্তী গ্রাম হরিদ্রখালীতে বড় ছেলে মন্নান সরদারের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পর ঠিক কবে তিনি নিখোঁজ হন-তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেন না।


পরিবারের সদস্যরা ধারণা করছেন, তিনি প্রায় ১১ দিন নিখোঁজ ছিলেন। তবে ২-৩ দিন আগে তারা টের পান তিনি কোথাও নেই। এরপরই শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়ায় কেউ থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেননি। 


নিখোঁজ বাবা আব্দুর রহিমের মরদেহের সন্ধান পাওয়া ছোট ছেলে মোস্তফা সরদার বলেন, ‘তার বাবা হৃদরোগে ভুগছিলেন। হয়তো অসুস্থ অবস্থায় ঝোপে পড়ে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। পরে শেয়াল-কুকুরে মরদেহ ছিন্নভিন্ন করে ফেলতে পারে।’ 


তবে স্থানীয় কয়েকজনের মতে, বৃদ্ধ হয়ে যাওয়ায় হয়তো পরিবারের সদস্যরা তার তেমন খোঁজখবর রাখেননি। অবহেলার কারণেই হয়তো এমন পরিণতি হয়েছে।


এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমারৎ হোসেন বলেন, ‘ঝোপঝাড়ের ভেতর থেকে একটি কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে। কঙ্কালের সঙ্গে কোন মাংস ছিল না। কঙ্কালটির পাশে থাকা টুপি-লুঙ্গি দেখে পরিবারের লোকজন শনাক্ত করেছে এটি বৃদ্ধ আব্দুর রহিমের মরদেহ। 

তিনি আরো জানান, আমরা ডিএনএ সংগ্রহ করেছি এবং সুরাতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে কঙ্কালটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে মৃত্যু কিভাবে হয়েছে, তা বলা যাবে । এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

রিফাত

×