ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৬ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ছাত্রদলকর্মী রাফি হত্যার বিচার দাবিতে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

শাহাদাৎ বাবু, নোয়াখালী সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ১৯:৩৩, ২৫ মে ২০২৫

ছাত্রদলকর্মী রাফি হত্যার বিচার দাবিতে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

ছ‌বি: জনকণ্ঠ

নোয়াখালী সদরের অশ্বদিয়া ইউনিয়নে পল্লী চিকিৎসকের ছুরিকাঘাতে নিহত ছাত্রদলকর্মী আবুল হোসেন রাফি (১৯) হত্যাকাণ্ডের আসামি পল্লী চিকিৎসক গিয়াস উদ্দিন শাহীনকে দ্রুত গ্রেপ্তার ও তার ফাঁসির দাবিতে সকাল-বিকাল দফায় দফায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও প্রধান সড়কের বড় মসজিদ মোড় এলাকায় মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

রবিবার (২৫ মে) সকাল ১১টা থেকে এলাকাবাসীর ব্যানারে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
একই দিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পৃথকভাবে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জেলা ছাত্রদল।

সকালে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে এসে মানববন্ধনে অংশ নেন নিহত রাফির বাবা, মা, স্বজন, এলাকাবাসীসহ বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। বিকেলে জেলা ছাত্রদলের ব্যানারে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেন ছাত্রদলের জেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

ছাত্রদলের বিক্ষোভ সমাবেশে নোয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সভাপতি পদপ্রার্থী মো. ওয়াসিমের সভাপতিত্বে এবং অশ্বদিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি ফখরুল ইসলামের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি মো. মারুফসহ বিভিন্ন শাখা সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

এর আগে সকালের সমাবেশে রাফির বাবা আবুল কালাম আজাদ, নোয়াখালী শহর ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. ওয়াসিম, অশ্বদিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি ফখরুল ইসলামসহ এলাকাবাসী এবং ছাত্রদলের অন্যান্য নেতাকর্মীরা বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঘটনার চারদিন পার হয়ে গেলেও ছাত্রদলকর্মী আবুল হোসেন রাফির হত্যাকারী পল্লী চিকিৎসক গিয়াস উদ্দিন শাহীনকে এখনো গ্রেপ্তার না করায় প্রশাসনের প্রতি তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করছেন। তারা প্রশাসনকে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে সতর্ক করে বলেন—এই সময়ের মধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় না আনলে শহর এবং গ্রামের অলিগলিসহ সব রাস্তাঘাট অচল করে দেওয়ার হুমকি দেন এবং আরও বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দেন।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে এলাকায় ফুটবল খেলতে গিয়ে ঠোঁটে আঘাত পেয়ে আহত রাফি চিকিৎসা নিতে যান পল্লী চিকিৎসক গিয়াস উদ্দিন শাহীনের কাছে। কিন্তু শাহীন তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে চিকিৎসা দিতে অস্বীকৃতি জানান। বারবার বলার পরেও তিনি চিকিৎসা না দিলে রাফির সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে শাহীন রাফিকে ছুরিকাঘাত করেন।

এতে রাফির প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই ঢাকায় নেয়ার পথে রাফি মারা যায়।

নিহত রাফি অশ্বদিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের অলিপুর গ্রামের মো. আজাদের ছেলে। অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসক মো. গিয়াস উদ্দিন শাহীন (৬০) একই এলাকার সুজাত উল্যার ছেলে।

এদিকে, ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসক শাহীন পলাতক রয়েছেন। এ ঘটনায় রাফির বাবা আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে গিয়াস উদ্দিন শাহীনকে আসামি করে সুধারাম মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসক এলাকা থেকে পালিয়েছেন। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারে কাজ করছে এবং অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এম.কে.

×