ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৮ মে ২০২৫, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

হাতিয়ায় সি-ট্রাকের টিকেট বিক্রিতে বাধা, মাস্টারের ওপর হামলা

মো: ছাইফুল ইসলাম জিহাদ, হাতিয়া, নোয়াখালী

প্রকাশিত: ১৯:৩৬, ২৪ মে ২০২৫

হাতিয়ায় সি-ট্রাকের টিকেট বিক্রিতে বাধা, মাস্টারের ওপর হামলা

ছবি: দৈনিক জনকন্ঠ।

নোয়াখালীর হাতিয়ার নদী পারাপারে বর্ষাকালে নিরাপদ মাধ্যম হলো সি-ট্রাক আর এই সি-ট্রাক বন্ধের পাঁয়তারা করছে একটি মহল।

নোয়াখালী হাতিয়া ঘাটে যাত্রীদের কাছে টিকেট বিক্রিতে বাধা দেওয়া, নির্দিষ্ট সময়ের আগে ঘাট ছেড়ে যেতে বাধ্য করা, অনেক সময় যাত্রী উঠতে বাধা দেওয়া সহ যাত্রীবাহী সি-ট্রাক চলাচলে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় সরাসরি ট্রলার মালিক সিন্ডিকেট জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি দ্বীপ উপজেলা হাতিয়া থেকে জেলা সদরে একমাত্র যোগাযোগের নৌ-রুট চেয়ারম্যানঘাট –নলচিরা রুটে চলাচলকারী এসটি শৈবাল সিট্রাকের মাস্টার ও স্টাফের উপর হামলার ঘটনায় একটি ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় প্রচার হলে আলোচনায় আসে বিষয়টি। ভিডিওতে দেখা যায় কয়েকজন সি-ট্রাকের মাস্টার ও স্টাফদের দিকে তেড়ে আসছেন। তারা দ্রুত সি-ট্রাক ছেড়ে যেতে গাল-মন্দ করছেন।

৫ আগস্টের পর হাতিয়ায় ঘাট ও যাত্রী পারাপারের ব্যবস্থাপনা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় । ইজারাদার ফ্যাসীবাদী হওয়ায় গা ঢাকা দেয়।ফলে যে যার মত করে ফিটনেসবিহীন ট্রলারে যাত্রী পারাপার করতে থাকেন ঝুঁকি নিয়ে। এতে প্রশাসনের তদারকি না থাকায় বিশাল এক সিন্ডিকেট তৈরি হয়। তারা ফিটনেসবিহীন ট্রলার স্পিডবোট সহ বিভিন্ন যানবাহন পরিচালনা করে আসছেন।

এদিকে বর্ষা মৌসুমের কথা চিন্তা করে সরকারি সি-ট্রাকটি চলাচলের ব্যবস্থা করেন প্রশাসন। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে সী-ট্রাক চলাচলে বাধা দেওয়া শুরু করে এ সিন্ডিকেট।  চেয়ারম্যান ঘাটে সী-ট্রাকের যাত্রীদের টিকেট কাউন্টারটিও বন্ধ করে দেয় তারা। এ ধরনের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যায় জামশেদ নামের এক ব্যক্তি টিকেট কাউন্টারে গিয়ে দায়িত্বরত ব্যক্তিদের বের করে দেয়। টেবিলের উপর রাখা টিকেটের বান্ডেল ছিঁড়ে ফেলেন। পরে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এলে নৌবাহিনী চেয়ারম্যানঘাট গিয়ে একজনকে আটক করেন।

এর কিছুদিন পর সংঘবদ্ধ দল চেয়ারম্যান ঘাটে সি-ট্রাকে যাত্রী উঠতে বাধা দিতে দেখা যায়। তারা সী- ট্রাকের মূল প্রবেশদ্বার সিঁড়ির গোড়ায় দাঁড়িয়ে যাত্রীদের অন্য যানবাহনে উঠতে বাধ্য করেন। এতে যাত্রীদের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। অনেক যাত্রীর সাথে তাদের ধস্তাধস্তি হয়।

এ রুটে চলাচলকারী যাত্রী মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, শীত মৌসুমে সিট্রাক ছাড়াও অন্যান্য বাহনে নদী পার হওয়া যায়। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে দ্বীপের সাত লাখ মানুষের নদী পারাপারের নিরাপদ ব্যবস্থা হল এ সি-ট্রাক। কারণ তখন নদী উত্তাল থাকে। অন্য যানবাহন চলাচলে ঝুঁকি থাকে। যেকোনো মূল্যে আমাদেরকে সী-ট্রাক চলাচল ঠিক রাখতে হবে। 

এস টি শৈবাল সি-ট্রাক মাস্টার আফজাল হোসেন বলেন, সম্প্রতি সাইফুল ও তার সহযোগী আলমগীর ঘটনার দিন সী-ট্রাক ছাড়ার সময় ৮ টায় থাকলেও সাড়ে ৭টা থেকে আমাদেরকে সিট্রাক ছেড়ে দেওয়ার জন্য গালিগালাজ শুরু করে। সি-ট্রাকের রশি খুলে না দেওয়ায় স্ট্যাফকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। পরিস্থিতির এক পর্যায়ে তারা আমার উপর তেড়ে আসে গালমন্দ করে। পরে ৭ টা ৪০ মিনিটে সী-ট্রাক ছেড়ে আসতে বাধ্য হই। বিষয়টি আমি প্রশাসনকে অবহিত করেছি। তারা মূলত সি-ট্রাকে যাত্রী পারাপার বন্ধ রেখে অবৈধভাবে ট্রলারে যাত্রী পারাপারের সুবিধা নিতে এসব করছে।

এ বিষয়ে নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন সী-ট্রাক মাস্টার আইনগত প্রতিকার চাইলে তাকে সব ধরনের  সহায়তা করা হবে।

মিরাজ খান

×