ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বাংলাদেশি আম যাচ্ছে চীনে, রপ্তানির নতুন দিগন্ত

প্রকাশিত: ০০:৪৫, ২২ মে ২০২৫; আপডেট: ০০:৫৪, ২২ মে ২০২৫

বাংলাদেশি আম যাচ্ছে চীনে, রপ্তানির নতুন দিগন্ত

ছবি: সংগৃহীত

আম আমাদের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফসল। আপনারা সবাই জানেন, প্রতিবছর আমাদের দেশে বিপুল পরিমাণ আম উৎপাদিত হয়ে থাকে। আমরা প্রায় ২৭ লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদন করি, বিভিন্ন জাতের। এটি একটি মৌসুমি ফল, এবং আমরা সবাই জানি, নির্দিষ্ট একটি সময়ের মধ্যেই এই আমের মৌসুম শেষ হয়ে যায়।

আম রপ্তানির বিষয়ে বর্তমানে বেশ কিছু কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আমাদের আম দেশের ভেতরে যেমন বিক্রি হয়, তেমনি সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও রপ্তানি হচ্ছে। ছোট্ট একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে—২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ৩,১০০ মেট্রিক টন আম রপ্তানি হয়েছে। এর আগের বছর, অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থবছরে, রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১,৩২১ মেট্রিক টন। অথচ ওই বছর আমাদের দেশে আম উৎপাদন হয়েছিল প্রায় ২৭ লাখ মেট্রিক টন, এবং এর আগের বছর তা ছিল প্রায় ২৪ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন।

অর্থাৎ আমরা প্রতিবছর গড়ে প্রায় ২৪-২৫ লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদন করলেও, রপ্তানি হচ্ছে মাত্র ২-৩ হাজার মেট্রিক টন। অথচ সারা বিশ্বে আমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আপনারা জানেন, বাংলাদেশের আম অত্যন্ত সুস্বাদু এবং এটির আন্তর্জাতিক বাজারে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি।

আমাদের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা স্যার চীনে সফরের সময় এই বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা চলছিল, কিন্তু এরপর তা গতি পেয়েছে। স্যারের নির্দেশনায় আমরা এখন একটি বড় উদ্যোগ হাতে নিয়েছি। আগামী ২৮ মে প্রথমবারের মতো চীনে আম রপ্তানি করা হবে। প্রাথমিকভাবে আনুমানিক ৫০ মেট্রিক টন আম পাঠানো হবে। চীনের বিভিন্ন প্রদেশের সরকারের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে, এবং আমাদের রাষ্ট্রদূত এই উদ্যোগে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন।

আমরা চাই, এই রপ্তানি ধাপে ধাপে বাড়ানো হোক এবং চীনের বাজারে বাংলাদেশের আমের ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হোক। এছাড়াও যেসব দেশে আমাদের আম রপ্তানি হয়, সেইসব দেশের বাজারও কিভাবে বাড়ানো যায় এবং নতুন নতুন বাজার খুঁজে পাওয়া যায়, সে দিকেও আমরা নজর দিচ্ছি।

মাননীয় স্যার আজ নির্দেশনা দিয়েছেন, দেশভিত্তিক চাহিদা ও বাজার বিশ্লেষণ করে কিভাবে আমরা ওই বাজার ধরতে পারি, সেই কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। আমরা কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে একটি বড় উদ্যোগ নিচ্ছি, যা খুব শিগগিরই দৃশ্যমান হবে।

আম ছাড়াও চীনে কাঁঠাল রপ্তানির উদ্যোগও আমরা নিয়েছি, যা এখন প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। পাশাপাশি, এগ্রো প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে মৌসুমি ফলগুলো যেমন আম, কাঁঠাল ইত্যাদিকে ভ্যালু অ্যাড করে ক্যান বা অন্যান্যভাবে সংরক্ষণ করে সারা বছর বিক্রির উপযোগী করে তোলার প্রচেষ্টা চলছে।

সব মিলিয়ে, আম নিয়ে আমাদের একটি বড় সম্ভাবনা রয়েছে, এবং আমরা সেটি বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেছি।

 

সূত্র : https://www.youtube.com/watch?v=I4pFgdp_DDY

আলিফ

×