ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২১ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভোগাই-চেল্লাখালীতে পানি বাড়ছে, কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ

এম. সুরুজ্জামান, নালিতাবাড়ী, শেরপুর

প্রকাশিত: ১৯:০৩, ২০ মে ২০২৫; আপডেট: ১৯:০৫, ২০ মে ২০২৫

ভোগাই-চেল্লাখালীতে পানি বাড়ছে, কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ

ছবি: জনকণ্ঠ

গত কয়েক দিনের বজ্রবৃষ্টি ও উজানে ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় প্রবাহিত ভোগাই এবং চেল্লাখালী নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে অকাল বন্যার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন বলছে, যদি অকাল বন্যা সৃষ্টি হয়, তাহলে তাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২০ মে) বেলা ১২টায় চেল্লাখালী নদীর পানি বারোমারী বাজার পয়েন্টে বিপদসীমার ১২৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর ভোগাই নদীর পানি বিপদসীমার ২৬৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বর্তমানে বৃষ্টিপাত চলমান থাকায় দুই নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। চেল্লাখালী নদীর বারোমারী পয়েন্টের গেজ পাঠক আলমগীর হোসেন এবং ভোগাই নদীর পৌরসভা পয়েন্টের গেজ পাঠক মুকুল মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সব এলাকায় গত ৩–৪ দিন ধরে টানা বজ্রবৃষ্টি হচ্ছে। একই সঙ্গে উজানে ভারতের মেঘালয় রাজ্যেও প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। হঠাৎ করে নদী দুটির পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অকাল বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যদি নদী উপচে বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়, তাহলে ঘরবাড়ি ও ফসলাদির অনেক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে নতুন করে বৃষ্টিপাত না হলে ঢলের পানি ভাটির দিকে চলে যাবে এবং বন্যার আশঙ্কা মুক্ত হবে নালিতাবাড়ী।

এদিকে, বোরো আবাদের মাঝামাঝি সময়ে এসে হঠাৎ অতিবৃষ্টির কারণে কৃষকরা ধান কাটা, মাড়াই ও শুকাতে পারছেন না। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগের কারণে কৃষকদের পড়েছে মাথায় হাত। উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে আবহাওয়ার আগাম সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কৃষকদের হারভেস্টার মেশিন দিয়ে কেটে ফেলতে বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক কৃষক ধান কেটে ফেলেছেন, তবে এখনো অনেক জমির ধান কাটতে পারেননি। এছাড়া রোদ না থাকায় কাটা ধান শুকাতে পারছেন না কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, এই উপজেলায় কৃষক ৯৬ শতাংশ বোরো ধান ইতোমধ্যে কেটে ফেলেছেন। বাকি ৪ শতাংশ ধান দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে কাটা যাচ্ছে না। তাছাড়া রোদ না থাকায় কৃষকরা তাদের সোনার ফসল শুকাতে পারছেন না।

এ বিষয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে অকাল বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ মোকাবিলায় ইতোমধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি বন্যার্তদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খোলা, শুকনো খাবার বিতরণ এবং স্বেচ্ছাসেবক দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট সবাইকে অকাল বন্যা মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

শহীদ

×