ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২০ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

রামুতে চোরাই গরুর হাট গর্জনীয়া বাজার বন্ধ, তবু ও শঙ্কায় খামারিরা

চোরাই গরুর দাপটে বিপাকে দেশীয় খামারিরা

মোঃসাইদুজ্জামান সাঈদ, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, রামু (কক্সবাজার) 

প্রকাশিত: ২১:৪২, ১৯ মে ২০২৫; আপডেট: ২১:৪৫, ১৯ মে ২০২৫

চোরাই গরুর দাপটে বিপাকে দেশীয় খামারিরা

চোরাই গরুর দাপটে বিপাকে দেশীয় খামারিরা—এমন খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়া গবাদিপশুর বাজার। তবে এতে সমস্যার সমাধান হয়নি, বরং নতুন করে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন স্থানীয় খামারিরা। তারা বলছেন, প্রশাসনের বাজার বন্ধের সিদ্ধান্ত শুধু সাময়িক স্বস্তি, মূলত সমস্যার গোড়ায় এখনও হাত পড়েনি।

গর্জনিয়া বাজারটি দীর্ঘদিন ধরে মায়ানমার সীমান্ত হয়ে আসা চোরাই গরুর প্রধান কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল। প্রশাসন বলছে, বাজারটি বন্ধ করে দিয়ে তদন্ত ও নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। তবে স্থানীয়দের দাবি, সীমান্তের অন্তত ১৫টি পয়েন্ট দিয়ে এখনও অব্যাহত আছে গরুর স্রোত। খোলা বাজার না থাকলেও চোরাই গরুর বেচাকেনা চলছে গোপনে।

রামু পূর্ব রাজারকুলের এক প্রান্তিক খামারি ও রামু উপজেলা ডেরিএসোশিয়েশনের সভাপতি আকতার কামাল আজাদ বলেন, “ঈদের বাজার ধরতে লাখ টাকা খরচ করে গরু পালন করেছি। এখন চোরাই গরু কম দামে বাজার দখলে নেওয়ায় বিক্রি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। বাজার বন্ধ হলেও চোরাচালান বন্ধ হয়নি।”

খামারিদের দাবি, সীমান্তের আশারতলী, বাইশফাঁড়ি, জামছড়ি, ঘুমধুম, তুমবুরুসহ বহু পয়েন্ট দিয়ে প্রতিদিন শত শত বার্মিজ গরু আসছে, যার সঙ্গে আসছে ইয়াবা ও আইস জাতীয় মাদক। প্রশাসনের অভিযান থাকলেও তা চোরাচালান সিন্ডিকেট ঠেকাতে ব্যর্থ।

স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন, “বাজার বন্ধ করলেই সব সমাধান হয় না। সীমান্ত পাহারা আরও জোরদার করতে হবে। গরু পাচারের আড়ালে বড় ধরনের মাদক কারবারও চলছে।” এই চোরাচালান দেশে বিপুল রাজস্ব ক্ষতি করছে। একই সঙ্গে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

স্থানীয় সাবেক ইউপি ও সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কক্সবাজার জেলা যুবদল মির্জা আবছার বলেন, “এই বাজার ঘিরে শুধু গরু নয়, অস্ত্র ও ক্ষমতার খেলা চলছে। প্রশাসন, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বিত তদারকি ছাড়া এর সমাধান সম্ভব নয়।”

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের মার্চ ও মে মাসে চোরাচালানকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে দুইজন নিহত হন। এতে স্পষ্ট, শুধু অর্থনৈতিক নয়, প্রাণহানির ঝুঁকিও রয়েছে বাজার ঘিরে।

খামারিরা বলছেন, বাজার বন্ধ নয়—পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপের দাবি তোলার সময় এখন। তারা চান সীমান্তে নজরদারি, চোরাচালানে যুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং দেশীয় খামারিদের স্বার্থ রক্ষায় সরকারিভাবে গরু কেনা-বেচার বিশেষ হাট চালুর উদ্যোগ।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রাশেদুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন জঠিলতার কারণে গর্জনীয়ার গরুর হাট বন্ধ রাখা হয়েছে। আজ জেলা মিটিং এ গর্জনীয়া বাজার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমি উর্ধতন কতৃপক্ষ কে জানিয়েছি তারা আমাকে যা সিদ্ধান্ত দিবে পর্বতীতে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবো।

রাজু

×