ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভারতের অনৈতিক দাদাগিরি আর কত?

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০১:৩৩, ২০ মে ২০২৫

ভারতের অনৈতিক দাদাগিরি আর কত?

পাকিস্তানের বাবর আজম (বাঁয়ে) ও ভারতের রোহিত শর্মা

ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব আর ক্রিকেটে দেশ দুটির সাপে নেউলে সম্পর্ক যেন রবীন্দ্রনাথের ছোট গল্প- শেষ হইয়াও হইল না শেষ...। যুদ্ধবিরতির পর আইপিএল এবং পিএসএলের বাকি অংশ মাঠে গড়ালেও আসন্ন এশিয়া কাপ থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিতে চলেছে ভারত। অথচ এশিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের এ আসরের আয়োজক তারা। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবর, ইন্ডিয়ান ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) বিষয়টি ইতোমধ্যে মৌখিকভাবে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলকে (এসিসি) জানিয়ে দিয়েছে।

এমনকি আগামী জুনে শ্রীলঙ্কায় হতে চলা মেয়েদের ইমার্জিং এশিয়া কাপের পাশাপাশি সেপ্টেম্বরে ছেলেদের এশিয়া কাপেও না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। এমনিতে দীর্ঘদিন দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সিরিজ বন্ধ। সাম্প্রতিক উত্তেজনায় এবার বৈশ্বিক আসরেও সাক্ষাৎ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
সোমবার দিনভর বিশ্ব ক্রিকেটাঙ্গনে এ নিয়ে চলে ব্যাপক গুঞ্জন। সন্ধ্যায় নিজেদের অবস্থান জানিয়ে কথা বলেন বিসিসিআই সচিব দেবজিত সাইকিয়া ‘আজ সকাল থেকে কিছু সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, বিসিসিআই এশিয়া কাপ এবং নারী ইমার্জিং এশিয়া কাপে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ধরনের খবরের কোনো ভিত্তি নেই। এসিসির কোনো ইভেন্টে অংশগ্রহণ না করার বিষয়ে বিসিসিআই এখন পর্যন্ত কোনো আলোচনা পর্যন্ত করেনি, সিদ্ধান্ত নেওয়া তো দূরের কথা।’

সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন তিনি। উল্লেখ্য পূর্ব নির্ধারিত সূচীতে আগামী সেপ্টেম্বরে ভারতে হওয়ার কথা এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ১৭তম আসর। হাইব্রিড মডেলে পাকিস্তানর ম্যাচগুলো হবে শ্রীলঙ্কায়। এদিকে বিসিসিআইর বিশ্বস্ত একটি সূত্রের বরাত দিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায় পাকিস্তান ক্রিকেটকে কোণঠাসা করার পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ভারত এশিয়া কাপ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ‘ভারতীয় দল এমন এক টুর্নামেন্টে খেলতে পারে না, যার আয়োজক এসিসি এবং এর প্রধান একজন পাকিস্তানি মন্ত্রী। এর সঙ্গে পুরো দেশের আবেগ জড়িয়ে।

আসন্ন নারী ইমার্জিং এশিয়া কাপের পাশাপাশি ভবিষ্যতে তাদের (এসিসি) ইভেন্টে আমাদের অংশগ্রহণ স্থগিত রাখতে আমরা এসিসির সঙ্গে মৌখিকভাবে যোগাযোগ করেছি। আমরা ভারত সরকারের সঙ্গেও সর্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি।’ গত এপ্রিলে শ্রীলঙ্কার শাম্মি সিলভার জায়গায় এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসির) সভাপতি হন নাকভি। তিনি একই সঙ্গে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডেরও (পিসিবি) চেয়ারম্যান। 
ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি না হলে আর্থিক দিক থেকে অনেক লোকসানের সম্ভাবনা থাকে। কারণ, দুই দলের ক্রিকেট দেখতে এখনো মুখিয়ে থাকেন কোটি কোটি ক্রিকেটপ্রেমী। পৃষ্ঠপোষক, বিজ্ঞাপনের ব্যাপারসহ অনেক কিছুই তখন চলে আসে। সে ক্ষেত্রে সাত দল নিয়ে টুর্নামেন্ট হতে পারে সংযুক্ত আরব আমিরাত বা শ্রীলঙ্কায়। কিন্তু সম্প্রচারকারী সংস্থা এশিয়া কাপ সম্প্রচারে কী ভূমিকা নেয়, সেটিও দেখার বিষয়।

এসিসি এরই মধ্যে ১৭ কোটি মার্কিন ডলারে (২০৭১ কোটি টাকা) আগামী চার এশিয়া কাপের সম্প্রচার স্বত্ব সনি স্পোর্টস নেটওয়ার্কের কাছে বিক্রি করেছে। দ্বিপক্ষীয় সিরিজ দূরে থাক, পাকিস্তানের মাঠে কোনো মেজর ইভেন্ট আয়োজন করা হলে ভারতীয় ক্রিকেট দল সেখানে খেলতে যেতে চায় না। জলজ্যান্ত উদাহরণ হিসেবে ২০২৩ এশিয়া কাপ ও ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। ২০২৩ সালে হাইব্রিড মডেলে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা মিলে এশিয়া কাপ হয়েছে।

যেখানে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, শুবমান গিলরা খেলেছিলেন লঙ্কায়। আর এ বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চে আয়োজিত চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারত তাদের ম্যাচগুলো খেলেছে দুবাইয়ে। ২০২৩ এশিয়া কাপ, ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিÑএই দুই টুর্নামেন্টেই চ্যাম্পিয়ন ভারত।

×