ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পর্যটন বিকাশের বাইরে থাকা এক ঐতিহাসিক সৌন্দর্য কমলা রাণীর সাগর দীঘি

আব্দুল্লাহ আল নোমান, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, হবিগঞ্জ

প্রকাশিত: ০৩:৪২, ২০ মে ২০২৫

পর্যটন বিকাশের বাইরে থাকা এক ঐতিহাসিক সৌন্দর্য কমলা রাণীর সাগর দীঘি

ছবি: জনকণ্ঠ

হবিগঞ্জের ঐতিহাসিক জলাধার পর্যটনের বিকাশ থেকে বঞ্চিত। প্রশ্ন উঠছে, কবে জাগবে কমলা রাণীর সাগর দীঘি? প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ইতিহাস ও ঐতিহ্যবাহী এক গ্রামের নাম বানিয়াচং। হবিগঞ্জ জেলায় অবস্থিত এ গ্রামটি এক সময় ছিল প্রাচীন লাউড় রাজ্যের রাজধানী। মোগল আমল থেকেই তিলোত্তমা এ গ্রামটি শহর হিসেবে পরিচিত।

হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় অবস্থিত কমলা রাণীর সাগর দীঘি, যার ইতিহাস জড়িয়ে আছে মধ্যযুগীয় শাসন, রাজপ্রেম এবং প্রাচীন স্থাপত্যের সঙ্গে আজও রয়ে গেছে পর্যটন বিকাশের অন্ধকারে। ৬৬ একরের এই বিশাল দীঘি ইতিহাসপ্রেমী ও প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য হতে পারতো একটি আন্তর্জাতিক মানের দর্শনীয় স্থান, কিন্তু তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই বললেই চলে।

দ্বাদশ শতাব্দীতে রাজা পদ্মনাভ প্রিয় রাণী কমলার স্মৃতিতে এই বিশাল দীঘি খনন করেন। শতাব্দী পেরিয়ে গেলেও এই দীঘি কখনো সরকারি পরিকল্পনায় বিশেষ গুরুত্ব পায়নি। নেই পর্যাপ্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা, নেই উন্নত ঘাট, নেই নিরাপত্তা বা তথ্য কেন্দ্র সব মিলিয়ে এটি যেন নিঃসঙ্গ দাঁড়িয়ে থাকা এক ইতিহাসের সাক্ষী।

বানিয়াচংয়ের স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, “প্রতিবছর অসংখ্য মানুষ এলেও তারা ফিরে যায় হতাশ হয়ে। কোনো দিকনির্দেশনা নেই, পরিচর্যার অভাবে সৌন্দর্যও হারাচ্ছে। আমরা চাই, এই দীঘিকে যেন সত্যিকারের পর্যটন কেন্দ্রে রূপ দেওয়া হয়।”

ইতিহাসবিদ ও পর্যটন বিশ্লেষকরা মনে করেন, সরকার বা বেসরকারি খাত যদি এর ওপর গুরুত্ব দেয়, তাহলে এই দীঘি হতে পারে ‘হেরিটেজ ট্যুরিজম’-এর অন্যতম কেন্দ্র। ইতিহাস, সংস্কৃতি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অনবদ্য সমন্বয় এখানে বিদ্যমান। কমলা রাণীর সাগর দীঘি আজও ইতিহাসের অম্লান সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু কবে জাগবে এই দীঘির ভাগ্য? কবে মিলবে পর্যটনের স্পর্শ?

বাংলাদেশের পর্যটন যখন বৈচিত্র্যের খোঁজে, তখন এই নিদর্শনকে অবহেলা করার দায় কার? এখনই সময় কমলা রাণীর দীঘিকে বিশ্ব মানচিত্রে জায়গা করে দেওয়ার।

শহীদ

×