
ছবি: জনকণ্ঠ
বাংলাদেশে ব্যান্ড সঙ্গীতের যাত্রা শুরু হয় অনেক আগেই। তবে, উত্তরবঙ্গে এর চর্চা খুব বেশি দিনের নয়। স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশে আজম খান গড়ে তুলেছিলেন ‘উচ্চারণ’ নামের একটি ব্যান্ড। যতদূর জানা যায়, স্বাধীন বাংলাদেশে সেটাই প্রথম ব্যান্ড সঙ্গীতের দল। এরপর ফিরোজ সাঁই, ফকির আলমগীর, ফেরদৌস ওয়াহিদের নামও উল্লেখযোগ্য।
আজম খান তাঁর ব্যান্ড ‘উচ্চারণ’-এর মাধ্যমে গেয়েছেন ‘সালেকা মালেকা’, ‘রেললাইনের ওই বস্তিতে’, ‘আসি আসি বলে তুমি আর এলে না’, ‘আলাল ও দুলাল’, ‘অভিমানী’, ‘মুক্তিসেনা আমি’-র মতো গান। এই গানগুলো সাধারণ মানুষকে সঙ্গীত নিয়ে নতুনভাবে ভাবতে বাধ্য করেছে, তাঁদের কৌতূহলী করেছে।
এরপর ‘মাইলস’ ও ‘সোলস’ নামে দুটি ব্যান্ড দীর্ঘ সময় রাজত্ব করে। সাফিন আহমেদ ও তপন চৌধুরী বাংলা ব্যান্ড সঙ্গীতে যুক্ত করেন নতুন ধারা। আরও যোগ হয় ফিডব্যাক, ফিলিংস, রেনেসাঁ ও নগর বাউল। ব্যান্ড সঙ্গীতের কিংবদন্তি আইয়ুব বাচ্চুর ‘এলআরবি’ ও জেমস-এর ‘নগর বাউল’ এই ধারাকে পৌঁছে দেয় নতুন উচ্চতায়।
তাঁরাই বাংলা ব্যান্ড সঙ্গীতকে সাধারণ মানুষের মাঝে নিয়ে যান। খোলা মাঠে, এমনকি রাস্তার পাশেও বাজে ব্যান্ডের গান, মেটাল বা হেভি মেটাল যাই হোক না কেন? তরুণদের আকর্ষণ করে ব্যাপকভাবে। ‘ওয়েভস’ নামের একটি গ্রুপ বাংলাদেশে হেভি মেটালের যাত্রা শুরু করে। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। ধীরে ধীরে সবার মাঝে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ব্যান্ড সঙ্গীত।
তবে, উত্তরবঙ্গ—বিশেষ করে রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলে ব্যান্ড সঙ্গীতের তেমন প্রভাব ছিল না। সেই শূন্যতা পূরণে মুখ্য ভূমিকা পালন করে "নর্থ বেঙ্গল ব্যান্ড মিউজিক ফ্যানস ক্লাব" (NB-BMFC)।
সম্প্রতি এই গ্রুপটি দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ডগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে। লক্ষ্য করলে দেখা যায়—নগর বাউল, ওয়ারফেজ, অর্থহীন, আলাপাতসহ আরও অনেক ব্যান্ড তাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন NB-BMFC-কে।
এই গ্রুপটি পরিচালনা করছেন ফাউন্ডার আহমেদ আশিক। এছাড়াও রয়েছেন ফাহমিদা, মোস্তাফিজ, নাইমুর, প্রান্ত, বর্ণ, কাজল, মুন, ফুয়াদ, ফাহাদ, সাগর, শিশির, সিনহা, তন্ময়, ফাহিম, জাকারিয়া, ইফরাদ ও আরও অনেকে।
এক সময় ব্যান্ড গান ছিল শুধু শহর কিংবা সমাজের নির্দিষ্ট শ্রেণীর মধ্যে সীমাবদ্ধ। এখন তা প্রান্তিক এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়ছে। সঙ্গীতপ্রেমীদের প্রত্যাশা—বাংলা ব্যান্ড সঙ্গীতের এই ধারা আরও বিস্তৃত হোক।
শহীদ