
যশোরে জুলাই গণঅভ্যত্থানে আহতদের অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। আজ বুধবার দুপুরে যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট জানা গেছে, যশোর জেলার সি ক্যাটাগরির ৬৬জন জুলাই যোদ্ধার প্রত্যেককে এক লাখ টাকার অনুদানের চেক বিতরণের আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। অনুষ্ঠানে জেলায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের তালিকা প্রণয়নে অসঙ্গতি তুলে আপত্তি জানিয়ে বক্তব্য দেয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। শহরের আলোচিত জাবির ট্রাজেডিতে নিহত সবাই শহিদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে কি না সেটি নিয়েও তারা প্রশ্ন তোলেন। একই সাথে আহতের তালিকা প্রণয়নের স্বজনপ্রীতি ও দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ তোলেন। এসময় পাল্টাপাল্টি যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন ছাত্ররা। একই সাথে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তালিকার বিষয়ে ব্যাখা দেয়া হয়। চেক বিতরণের সময় ছাত্ররা প্রতিবাদ জানিয়ে স্লোগান দেন দালালি না রাজপথ, রাজপথ...।
এ বিষয়ে যশোর জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম সদস্য সচিব মারুফ হাসান সুকর্ণ বলেন, জুলাই যোদ্ধার তালিকায় নূর ইসলাম নামে একজনকে আহত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কিন্তু সে কোথাও আহত হয়নি। এমন অন্তত ১৫ থেকে ২০জনকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যারা কোনভাবেই আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলে না। এদেরকে জুলাই যোদ্ধা হিসেবে অন্তভুক্তি জুলাই বিপ্লবের সঙ্গে বেঈমানি করা হয়েছে।এ বিষয়ে যশোর জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মূখ্য সংগঠক আব্দুল্লাহ আল মামুন লিখন বলেন, যশোর জেলায় ৬৬জন আহতকে জুলাই যোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অথচ তালিকার অনেকেই দেখছি, যারা কোনভাবে আন্দোলনে আহত নয়। তাদেরকে জুলাই যোদ্ধা হিসেবে মানতে পারছি না। তালিকা প্রণয়নে স্বজনপ্রীতি করা হয়েছে। যারা জুলাই যোদ্ধা তাদের সঙ্গে কোন ভুয়া যোদ্ধা অন্তর্ভুক্ত হোক, এটা চাই না। অবিলম্বে যাচাই বাছাই করে প্রকৃত জুলাই যোদ্ধাদের চিহ্নিত করার দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে যশোর জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, আমরা যারা আন্দোলন করেছি তাদের প্রায় সবাই কোন না কোনভাবে আহত হয়েছি। কিন্তু সি ক্যাটাগরির তালিকায় যাদের নাম দেখছি, তাদের অধিকাংশই আহত নন। আমরা তো আহতের তালিকায় নাম তুলি নাই। তালিকা যাচাই বাছাই করা উচিত।
জুলাই বিপ্লবে শহিদ ও আহত যাচাই বাছাই কমিটির সদস্য ও ছাত্রপ্রতিনিধি মেজবাহুর রহমান রামীম বলেন, শুধু যশোরে আন্দোলনে নিহত ও আহতদের তালিকায় অন্তভূক্ত করা হয়নি। যশোরের বাইরে রাজধানী ও বিভিন্ন জেলায় আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের তালিকা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। আমরা সেই তালিকা যাচাই করেছি।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম বলেন, জেলার শহিদ ও আহতদের তালিকা হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে। ওই তালিকা জেলা যাচাই বাছাই কমিটি যাচাই করেছে। আমরা তালিকা প্রস্তুতি করিনি। যাচাই বাছাই কমিটিতে দুজন ছাত্র প্রতিনিধি ছিল। তারা সরেজমিনে যাচাই বাছাই করেছে। তারপরেও তালিকায় অসঙ্গতি থাকতে পারে। ছাত্রদের নেতৃত্বে যাচাই-বাছাই করে সংশোধনের সুযোগ আছে।’
হট্টগোলের এক পর্যায়ে চেক বিতরণ করা হয়। জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন নাজমুস সাদিক রাসেল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাজিবুল আলম, যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হোসাইন সাফায়েত, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন প্রমুখ।
রাজু