
ছবি: সংগৃহীত
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা একটি রাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো গণতান্ত্রিক নৈতিক শক্তি। এই শক্তির জায়গা যদি আমরা হারিয়ে ফেলি, তাহলে ফ্যাসিবাদীরা দ্রুত তাদের কার্যকলাপের ন্যায্যতা দাবি করে বসবে।”
রবিবার এক আলোচনায় তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে যদি আমাদের ব্যক্তি মানসিকতা বা বুদ্ধিবৃত্তিক অবস্থান এমন হয়ে যায় যে, আমরা নিজেরাও পাল্টা ফ্যাসিবাদী আচরণ করছি, তাহলে সেটা হবে অত্যন্ত ক্ষতিকর। কারণ আমাদের সংগ্রামের ভিত্তি হচ্ছে গণতান্ত্রিক নীতি ও মূল্যবোধ।”
তিনি বলেন, যারা হত্যা বা সহিংস কার্যক্রমে জড়িত, তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে। শুধুমাত্র ব্যক্তি নয়, দল হিসেবেও যদি কোনো দায় থেকে থাকে, সেটিও বিচারের আওতায় আনা জরুরি। তিনি উল্লেখ করেন, “আইসিটি আইনে দলীয়ভাবে বিচারের কোনো বিধান ছিল না। আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি, দল হিসেবে বিচারের ব্যবস্থা থাকা উচিত, বিশেষ করে যখন নিষিদ্ধ করার প্রশ্ন আসে।”
জোনায়েদ সাকি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কোনো দল নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে মত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “এটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচিত হয় এবং নিষিদ্ধ হওয়া দলগুলো নিজেদের ভিকটিম হিসেবে তুলে ধরে। এতে বিষয়টি রাজনৈতিক বাদানুবাদের মধ্যে পড়ে যায়, যা ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে না।”
তিনি জানান, সরকার সম্প্রতি আইনে সংশোধনী এনে দল হিসেবে বিচার প্রক্রিয়ার আওতায় আনার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা ইতিবাচক। তবে একইসঙ্গে তিনি আওয়ামী লীগের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। তাঁর ভাষায়, “আওয়ামী লীগ নানা ষড়যন্ত্র, অন্তর্ঘাত এবং বিচারপ্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার চেষ্টা করেছে। এর ফলে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।”
তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমরা সবসময়ই বলেছি, রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান রাজনৈতিকভাবেই করতে হবে। আইন-শৃঙ্খলার মাধ্যমে রাজনৈতিক সমস্যা মোকাবিলা করলে তার ফল সবসময় ইতিবাচক হয় না, অনেক সময় তা উল্টো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।”
জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, "গণতন্ত্রের পথে থেকে ফ্যাসিবাদের মোকাবেলা করাই প্রকৃত প্রতিরোধের পথ। বিচার ও ন্যায়বিচারের পথেই রাষ্ট্রকে এগিয়ে যেতে হবে।"
ভিডিও দেখুন: https://www.youtube.com/watch?v=ajPKOQeWlSY
এম.কে.