
ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানের সাম্প্রতিক প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষিতে, দক্ষিণ এশিয়ায় পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা নতুন করে দানা বাঁধছে। তবে এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের নীতিমালা ও সম্ভাব্য কৌশল নিয়ে উদ্বেগ ও প্রশ্ন উঠছে।
পাকিস্তান এখন পর্যন্ত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে "প্রথম আঘাত" না করার কোন প্রতিশ্রুতি দেয়নি। বরং, তারা স্পষ্ট করে বলেছে, যদি দেশটির অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে, তাহলে তারা প্রথমেই পারমাণবিক হামলা চালাতে পারে। এছাড়া বড় ধরনের প্রচলিত সামরিক হামলার জবাবে ট্যাকটিক্যাল নিউক্লিয়ার অস্ত্র ব্যবহারের পক্ষেও নীতিগত অবস্থান নিয়েছে ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতা তুলনামূলকভাবে ছোট হওয়ায়, একটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরু করা তাদের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকির বিষয়। অতীতেও তিনটি প্রচলিত যুদ্ধে পরাজিত হয়েছে দেশটি। এ কারণে পাকিস্তান এমন কোনো পদক্ষেপ নিতে চায় না, যা তাদের জন্য বিজয়ের চেয়ে ধ্বংস ডেকে আনবে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতের বেশ কয়েকটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। তবে তারা এখন পর্যন্ত সরাসরি পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দেয়নি।
অবশ্য, পাকিস্তান ও ভারত উভয়ই "পারমাণবিক স্থাপনায় আক্রমণ নিষিদ্ধকরণ চুক্তি"-তে সই করেছে, যার আওতায় প্রতি বছর একে অপরকে নিজেদের পারমাণবিক স্থাপনাসমূহের তালিকা জানায়। এ বছরের জানুয়ারিতেও এই তালিকা বিনিময় হয়েছে, এটি ছিল টানা ৩৪তম বার। তবে দু'দেশই এখনো বৈশ্বিক "পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি" (NPT)-তে স্বাক্ষর করেনি।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পাকিস্তানকে সংযত থাকতে এবং উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া সহ বিভিন্ন দেশ দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা কমাতে পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
বর্তমানে পাকিস্তানের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো, এমনভাবে জবাব দেওয়া যাতে পরিস্থিতি আর না ঘনীভূত হয় এবং এমন সংঘাত শুরু না হয়, যার পরিণতি তারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। কারণ, পারমাণবিক সংঘাত শুধু পাকিস্তান নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার জন্যই চরম বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
আসিফ