ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২

সড়কে প্রকাশ্যে চলছে চাঁদাবাজি, ব্যবস্থা নেয়ার কেউ নেই!

কামরুজ্জামান বাচ্চু, নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ১৭:৫৪, ১৪ মে ২০২৫

সড়কে প্রকাশ্যে চলছে চাঁদাবাজি, ব্যবস্থা নেয়ার কেউ নেই!

ছ‌বি: জনকণ্ঠ

বাউফল পৌর শহরের সড়কগুলোতে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি হলেও রহস্যজনক কারণে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। প্রতিদিন সড়কগুলোতে গাড়ি থামিয়ে সর্বনিম্ন ২০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। আর এই চাঁদার ভাগ চলে যাচ্ছে প্রশাসনের পকেটে— এই কারণেই সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাউফল পৌর শহরের কাগুজীপুল এলাকায় বাসস্ট্যান্ড ছাড়া সরকারিভাবে আর কোনো ইজারা দেওয়া হয়নি। অথচ বাউফল-বাগা হাইওয়ে সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে গাড়ি থামিয়ে চাঁদা নেওয়া হচ্ছে। হানিফ নামের এক ব্যক্তি হাইওয়ে সড়কে চলাচলকারী বাস, ট্রাক, মিনিট্রাক, কাভার্ডভ্যান থেকে চাঁদা নিচ্ছেন। বাস ও ট্রাক থেকে ৫০০, মিনিট্রাক ও কাভার্ডভ্যান থেকে ২০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে।

এছাড়াও, টেম্পুস্ট্যান্ডের কোনো ইজারা না দেওয়া সত্ত্বেও পাবলিক মাঠের বটতলা, বাংলাবাজার, গার্লস স্কুলের দক্ষিণ মাথায় ও গোলাবাড়ি বেইলি ব্রিজের কাছে ব্যাটারিচালিত অটো ও টেম্পু থেকে ১০-২০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে।

পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় থেকেই এসব স্পট থেকে ছাত্রলীগের নামে চাঁদা আদায় করা হতো। এখন তারাই রূপ পরিবর্তন করে একইভাবে চাঁদা আদায় করছে। ওই সময় হানিফ নামের যে ব্যক্তি হাইওয়ে সড়কে পরিবহন থেকে চাঁদা আদায় করতেন, বর্তমানে তিনিই আবার সেই কাজ করছেন।

নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, প্রতিদিন ২০-২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করা হয়। সে অনুযায়ী মাসে ৬-৭ লাখ টাকা এবং বছরে প্রায় কোটি টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় হয়। বৈশাখ মাসের শুরু থেকেই এই চাঁদা আদায় চলছে। এই চাঁদার টাকার ভাগ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, পৌরসভা এবং উপজেলা প্রশাসনের পকেট পর্যন্ত পৌঁছায়। যার ফলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও এই চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌরসভার প্রশাসক আমিনুল ইসলামকে তাঁর সরকারি নম্বরে ফোন দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি। পরে ওই নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপে কল দেওয়া হলে তিনি কেটে দেন। এরপর হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ দিলেও তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

এ বিষয়ে বাউফল পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাইনুল হক বলেন, “পৌরসভা থেকে কেবল কাগুজীপুল বাসস্ট্যান্ড এবং একটি বাজার ছাড়া আর কোনো ইজারা দেওয়া হয়নি। তাই অন্য কোনো জায়গায় গাড়ি থামিয়ে টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই। বিষয়টি আমার নজরে আসার পর আমি বাসস্ট্যান্ডের ইজারাদার আলম সিকদারকে নিষেধ করেছি, যেন তারা বাসস্ট্যান্ডের বাইরে কোনো জায়গা থেকে টোল আদায় না করে। তারপরও যেহেতু গাড়ি থামিয়ে টাকা নিচ্ছে, আমি বিষয়টি দেখছি— কি করা যায়।”

এম.কে.

×