ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে সাত উপ-পরিচালকের নথিপত্র খুঁজে পাচ্ছেন না কৃষি কর্মকর্তা

নিজস্বসংবাদদাতা, গফরগাঁও, ময়মনসিংহ

প্রকাশিত: ২৩:৫৩, ৮ মে ২০২৫; আপডেট: ২৩:৫৪, ৮ মে ২০২৫

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে সাত উপ-পরিচালকের নথিপত্র খুঁজে পাচ্ছেন না কৃষি কর্মকর্তা

ময়মনসিংহের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ছয় উপ-পরিচালকের নথিপত্রের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে যোগদান ও বদলির তারিখ জানেন না কেউই। এমতাবস্থায়, অনার বোর্ডে তাদের কার্যকাল লেখা সম্ভব হয়নি। এতে সৃষ্টি হয়েছে বিভ্রান্তি।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) ময়মনসিংহ শহরের মহারাজা রোডে অবস্থিত কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (খামারবাড়ি) ময়মনসিংহ কার্যালয়ের উপ-পরিচালকের কক্ষে গিয়ে দেখা যায়, এ পর্যন্ত এখানে ৩৫ জন উপ-পরিচালক দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে প্রথম সাতজনের যোগদান ও বদলির তারিখ সংগ্রহ করতে পারেননি বর্তমান কর্মকর্তারা। নামের পাশে শুধু শূন্য লেখা রয়েছে। ওই সাতজনের একজন দুইবার দায়িত্ব পালন করেছেন এই কার্যালয়ে।

এই ছয়জন উপ-পরিচালক হলেন— সিরাজুল ইসলাম ভূঁইয়া, জেড এইচ খান, আবুল মনসুর, আব্দুল কাদির, এ এইচ এম মতিয়ুর রহমান এবং শেখ গোলাম মেহবুব। এর মধ্যে জেড এইচ খানের নাম দুইবার উল্লেখ রয়েছে, তিনি ময়মনসিংহের দ্বিতীয় ও চতুর্থ উপ-পরিচালক ছিলেন। ৭ নম্বর উপ-পরিচালক পর্যন্ত কার্যকালের স্থানে আটটি শূন্য লেখা রয়েছে। ৮ নম্বর উপ-পরিচালক হিসেবে শফি উদ্দিন ভূঁঞা ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে ১৯৭৬ সালের ৬ এপ্রিল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে কার্যালয়টিতে উপ-পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন ড. নাছরিন আক্তার বানু। তিনি ২০২৩ সালের ২১ ডিসেম্বর যোগদান করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কার্যালয়টির কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, এক থেকে সাত নম্বর উপ-পরিচালকের নাম তারা সংগ্রহ করতে পারলেও তাদের কোনো যোগদানপত্র বা বদলির নথি খুঁজে পাননি। ফলে অনার বোর্ডে কার্যকাল উল্লেখ করা যাচ্ছে না। এতে করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়োগ-ইতিহাস সম্পর্কে অস্পষ্টতা থেকেই যাচ্ছে।

নাসিরাবাদ কলেজের অধ্যাপক এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, অনার বোর্ড অনেক স্মৃতি বহন করে। অবসরপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা এসে যদি নিজের কার্যকাল লেখা না দেখে, তাহলে নিশ্চয়ই তিনি কষ্ট পাবেন। এমনকি তিনি না থাকলেও, তার পরিবারের কেউ স্মৃতি ধরে রাখতে এসে যদি এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হন, তাহলে তাঁরাও দুঃখ পাবেন।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ময়মনসিংহ মহানগরের সম্পাদক আলী ইউসুফ জনকণ্ঠকে বলেন, আমার ধারণা, এই কর্মকর্তাদের নথিপত্র ঠিকভাবে খোঁজা হয়নি। নিখুঁত অনুসন্ধান চালালে নিশ্চয়ই তাদের কার্যকাল পাওয়া সম্ভব। তা না হলে, তাদের যোগদান ও বদলির ইতিহাস চিরতরে অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।

এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ময়মনসিংহের বর্তমান উপ-পরিচালক ড. নাছরিন আক্তার বানু বলেন, এর আগে আরেকটি অনার বোর্ড ছিল, সেখানেও এক থেকে সাত নম্বর উপ-পরিচালকের নামের পাশে কার্যকাল ছিল না। সেই পুরোনো বোর্ড ধরেই নতুন বোর্ড তৈরি করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কার্যালয়ে ওই সাবেক উপ-পরিচালকদের কোনো নথি নেই। তবে বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনব। প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাধ্যমে নথিপত্র খোঁজার কাজ শুরু করা হবে। আমিও চাই, বিষয়টি ভালোভাবে অনুসন্ধান করা হোক। যদি কার্যকাল পাওয়া যায়, তাহলে অনার বোর্ডে নতুন করে তা লিপিবদ্ধ করা হবে।

এসএফ

×