ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৩ মে ২০২৫, ২০ বৈশাখ ১৪৩২

ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বাঁধ

নিজস্ব সংবাদদাতা, মীরসরাই, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ২২:১৯, ২ মে ২০২৫

ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বাঁধ

নদী ভাঙনে বিলীন হচ্ছে সিডিএএসপি বাঁধ

মীরসরাইয়ের চর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট প্রজেক্টের (সিডিএসপি) আওতায় নির্মিত ১১.৫ কিলোমিটার  দৈর্ঘ্যরে বাঁধের একাধিক অংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে মুহুরী প্রজেক্ট এলাকায় মীরসরাই ও সোনাগাজী অংশে নদীভাঙনে প্রায় ২০০ একর মৎস্য খামার সম্পূর্ণভাবে নদীতে হারিয়ে গেছে। ঝুঁকিতে রয়েছে আরও অন্তত ৫০০ একর এলাকা।

স্থানীয় বাসিন্দা ও মৎস্য খামার মালিকরা জানান, বাঁধ রক্ষায় অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে মীরসরাইয়ে গড়ে ওঠা ৩৪ হাজার একরের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (বিইজেড) হুমকির মুখে পড়বে। একইসঙ্গে বাঁধ ভেঙে গেলে লবণাক্ত পানি ঢুকে উপজেলার ৫নং ওচমানপুর ও ৬নং ইছাখালী ইউনিয়নের ১০-১২টি গ্রামে দেখা দিতে পারে জলাবদ্ধতা ও বন্যা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বঙ্গোপসাগরের ভাঙন থেকে রক্ষার জন্য ১৯৯৪ সালে নির্মাণ করা হয় এ সিডিএসপি বাঁধ। এর পর এ বাঁধ ঘিরে গড়ে ওঠে শত শত মৎস্য প্রকল্প, যা চট্টগ্রামের মাছের চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশ পূরণ করে আসছে।
মৎস্য খামার মালিকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই ভাঙন প্রতিরোধে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। মীরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন বলেন, ‘বাঁধ রক্ষায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অনুরোধ করা হয়েছে।’ চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রশান্ত তালুকদার বলেন, ‘বাঁধ রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত অংশে জিও ব্যাগ ফেলাসহ মেরামত কাজ দ্রুত শুরু করা হবে।

কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভে ফের ভাঙন 
স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার থেকে জানান, কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভে আবারও ভাঙন ধরেছে। বঙ্গোপসাগরে অমাবস্যার  জায়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতায় মেরিন ড্রাইভে ধাক্কা লাগলে টেকনাফের সাবরাং অংশের আড়াই কিলোমিটারজুড়ে সাতটি অংশে ভাঙন দেখা দেয়। এর আগে ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে পূর্ণিমার জোয়ারের ধাক্কায় মেরিন ড্রাইভের একই অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছিল। তখন সেনাবাহিনীর ইসিবি (ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন) জিও টিউব ব্যাগের মাধ্যমে মাটির বাঁধ দিয়ে ভাঙন প্রতিরোধ করেছিল।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বুধবার সকালের জোয়ারের পানির ধাক্কায় মেরিন ড্রাইভের জিরো পয়েন্টে আড়াই কিলোমিটারের কয়েকটি অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙন তীব্র হচ্ছে। সড়কের পশ্চিম পাশে বসানো জিও ব্যাগের বাঁধ বিলীন হচ্ছে। জোয়ারের ধাক্কায় ধসে পড়ছে জিও টিউব বাঁধ। কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি অবৈধভাবে সমুদ্রের বালু তুলে জমি ভরাট করছেন। এটিই মেরিন ড্রাইভের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সৈকত থেকে অবাধে বালু  তোলায় মেরিন ড্রাইভের গোড়ার অংশ নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, মেরিন ড্রাইভের রক্ষণাবেক্ষণ করে সেনাবাহিনী। ঢেউয়ের আঘাতে মেরিন ড্রাইভের বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। সড়ক ও জনপথ সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার-টেকনাফ ৮০ কিলোমিটারের মেরিন ড্রাইভ দেখভাল করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইসিবি। তাই ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে ইসিবি।

×