ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

বে টার্মিনালে বিশ্ব ব্যাংক -সিঙ্গাপুর ও দুবাইয়ের ১৪ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ

প্রকাশিত: ১৪:৪৩, ২১ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ১৪:৪৬, ২১ এপ্রিল ২০২৫

বে টার্মিনালে বিশ্ব ব্যাংক -সিঙ্গাপুর ও দুবাইয়ের ১৪ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ

ছবি : সংগৃহীত

দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে ক্রমবর্ধমান চাহিদা মোকাবেলায় চট্টগ্রাম বন্দরের বিকল্প হিসেবে পতেঙ্গা উপকূলে বে টার্মিনাল গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল প্রায় এক দশক আগে। তবে ভূমি অধিগ্রহণ, অর্থায়নসহ বিভিন্ন জটিলতায় এতদিন ধরে প্রকল্পটি আটকে ছিল। অবশেষে, রোববার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে ১৪ হাজার কোটি টাকার এই মেগা প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে।

 

 

সূত্র:https://youtu.be/YiNji4IZp9Q?si=0yuNtOzHvrKpCvaF

প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বুধবার ৬৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্রেক ওয়াটার নির্মাণে চুক্তি স্বাক্ষরের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন বন্দরের সংশ্লিষ্টরা। তারা আশা করছেন, বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে শিগগিরই চুক্তি স্বাক্ষর হবে এবং এরপরই ঠিকাদার নিয়োগসহ অন্যান্য কার্যক্রম শুরু হবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১৩,৫২৫ কোটি টাকার প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা থাকবে প্রায় ৯৩৩ কোটি টাকা, বাকি অর্থ চট্টগ্রাম বন্দর নিজেই বহন করবে। এর মধ্যে ৮,২৬৯ কোটি টাকা খরচ হবে ব্রেক ওয়াটার নির্মাণে, ১,৯৭৯ কোটি টাকা ব্যয় হবে নেভিগেশন এক্সেস চ্যানেল তৈরিতে, ৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বসানো হবে নেভিগেশন যন্ত্রপাতি এবং সড়ক ও রেল সংযোগে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩,৪৩৪ কোটি টাকা।

প্রকল্প বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে টার্মিনাল নির্মাণে যুক্ত হচ্ছে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও। পুরো বে টার্মিনালের দৈর্ঘ্য ৬.৫ কিলোমিটার হলেও এখানে গড়ে উঠবে স্বতন্ত্র তিনটি টার্মিনাল। এর মধ্যে দুটি, ১,০২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের, নির্মাণ করবে সিঙ্গাপুর পোর্ট অথরিটি ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ড। এ দুটি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে বিনিয়োগ করবে প্রায় ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাকি একটি মাল্টিপারপাস টার্মিনাল, দৈর্ঘ্য ১,৫০০ মিটার, থাকবে চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়ন্ত্রণে।

 

 

নতুন এই বে টার্মিনালের একটি বড় সুবিধা হবে, এটি সাগর উপকূলে হওয়ায় পণ্যবাহী জাহাজের চলাচল জোয়ার-ভাটার উপর নির্ভর করবে না। অর্থাৎ, এখানে ২৪ ঘণ্টাই জাহাজ আসা-যাওয়া করতে পারবে। এর গভীরতাও হবে তুলনামূলক বেশি, ফলে ১২ মিটার ড্রাফট এবং ২০০ মিটার দীর্ঘ জাহাজ সহজেই চলাচল করতে পারবে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে বছরে ৩২ লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়, অথচ বে টার্মিনালে তা বেড়ে দাঁড়াবে ৫০ লাখে।

 

 

দেশের আগামী ৫০ থেকে ১০০ বছরের বাণিজ্যিক চাহিদা মাথায় রেখেই এই বন্দরের ডিজাইন করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ২০২৬ সালে অপারেশন চালুর পরিকল্পনা থাকলেও সংশোধিত সময় অনুযায়ী এটি ২০২৯ সালের মধ্যে চালু হওয়ার কথা। সব জটিলতা নিরসনের পর অবশেষে স্বপ্ন নয়, বাস্তব হয়ে উঠছে দেশের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত এই সমুদ্রবন্দর প্রকল্প।

আঁখি

×