ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৩ মে ২০২৫, ২০ বৈশাখ ১৪৩২

ময়লার দুর্গন্ধে পথচারীদের দুর্ভোগ, হুমকিতে পাহাড়ের পরিবেশ

মো. মামুন চৌধুরী,হবিগঞ্জ।

প্রকাশিত: ১৪:১০, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ময়লার দুর্গন্ধে পথচারীদের দুর্ভোগ, হুমকিতে পাহাড়ের পরিবেশ

হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জে ওলিপুর রেলওয়ে গেইটের অদূরে রঘুনন্দন পাহাড়ের পাশে রেলপথ ও সড়ক পথের মাঝামাঝি সরকারি জমিতে অপরিকল্পিতভাবে ময়লা ফেলা হচ্ছে।  
একাধারে এ অবস্থা চলে আসায় স্থানটি এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ময়লার দুর্গন্ধে আশপাশের বাড়ির লোকজন ও পথচারীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এর ফলে হুমকিতে পড়েছে পাহাড়সহ এখানের পরিবেশ।  প্রতিকার করতে এগিয়ে আসছেন না কেউ।  এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন দুর্ভোগের শিকার হওয়া লোকজন।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে দেখা যায়, পিকআপ ভর্তি ময়লা এনে ফেলা হচ্ছে। আর ময়লার দুর্গন্ধে এ স্থান দিয়ে যাতায়াত করা কষ্টদায়ক হয়ে পড়েছে। এ সময় আলাপকালে পিকআপ চালক আব্দুস ছাত্তার জানান, এসব ময়লা ওলিপুর বাজারের। তিনি টাকার বিনিময় গাড়ী দিয়ে বহন করে এখানে নিয়ে আসছেন। শ্রমিকরা মজুরি পেয়ে এখানে ময়লাগুলো ফেলে যাচ্ছে। এখানে তার কিছু করার নেই।  বাকী আর কিছু জানতে হলে ওলিপুর বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি নূরুল ইসলাম সরদারের সঙ্গে কথা বলতে হবে।

বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি নূরুল ইসলাম সরদার বলেন, ময়লা ফেলানোর আর কোন স্থান নেই। তাই ময়লাগুলো এখানে ফেলা হচ্ছে। দ্রুত যেন সরকারিভাবে ড্রাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করে দেওয়া হয়। তাহলে আর ওই স্থানে ময়লা ফেলতে হবে না।  
এলাকার বাসিন্দা আব্দুল জলিল বলেন, ময়লার দুর্গন্ধে বাড়িতে অবস্থান করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই। ব্যাটারি চালিত টমটম চালক বাচ্চু মিয়া বলেন- ময়লার দুর্গন্ধে এ পথে চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে। দ্রুত এর প্রতিকার দেখতে চাই। একই কথা বলেন পথচারী সন্তোষ ভৌমিকসহ অন্যান্য পথচারীরাও।   

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, রঘুনন্দন পাহাড়টি পরিবেশ রক্ষায় বিরাট ভূমিকা পালন করছে। এ পাহাড়, সড়ক ও রেলপথের পাশে খোলা স্থানে অপরিকল্পিতভাবে ময়লা ফেলা ঠিক হচ্ছে না। এতে পাহাড়ের প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর বিরাট প্রভাব পড়ছে। আর এ দুর্গন্ধে পথচারী ও আশপাশের লোকজন নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ময়লা ফেলার জন্য অন্যত্র ড্রাম্পিং স্টেশন করে ময়লা ফেলা হোক।

শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনের ঊর্ধ্বতন উপ-প্রকৌশলী (পথ) ফিরোজ আহমেদ বলেন, শুনেছি রেলপথের পাশে ময়লা ফেলা হচ্ছে।  এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিবেন শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনের ঊর্ধ্বতন উপ-প্রকৌশলী (পূর্ত) কর্মকর্তা মিঠুন দাস।

ঊর্ধ্বতন উপ-প্রকৌশলী (পূর্ত) কর্মকর্তা মিঠুন দাস বলেন, বিষয়টি জেনে পরবর্তীতে জানানো যাবে। এর আগে সঠিক করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রঘুনন্দন পাহাড়ে অবস্থিত শাহজিবাজার রাবার বাগানের ব্যবস্থাপক নন্দী গোপাল রায় জানান, ময়লা রেলওয়ের জায়গায় ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এর প্রভাব পড়ছে এ পাহাড়ের আশেপাশেও। তাই বাগানে শ্রমিকরা কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হোক। 

শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ব্রাহ্মণডোরা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহন মিয়া বলেন, এখানের ময়লার কথা উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। আশা করছি, উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সরকারি বরাদ্দে দ্রুত ডাম্পিং স্টেশন করে দেওয়া হবে। তাহলে স্থায়ীভাবে এখানের সমস্যার সমাধান আসবে।   

শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পল্লব হোম দাস বলেন, বিষয়টি জেনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখানে কারো ক্ষতি করে ময়লা ফেলা যাবে না।

নুসরাত

×