ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

সংবাদ সম্মেলনে জামালপুর পৌরসভার সাবেক মেয়রকে গ্রেপ্তারের দাবি

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর

প্রকাশিত: ২১:৩৩, ২ নভেম্বর ২০২৪

সংবাদ সম্মেলনে জামালপুর পৌরসভার সাবেক মেয়রকে গ্রেপ্তারের দাবি

জামালপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেনের সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে নির্মম নির্যাতনের শিকার শিক্ষানবিশ আইনজীবী নুর হোসেন আবাহনী সংবাদ সম্মেলন করে তার বিরুদ্ধে নির্যাতন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার সাবেক মেয়র তার সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

শনিবার বেলা ১২টার দিকে প্রেসক্লাব জামালপুরে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ভুক্তভোগী নূর হোসেন আবাহনী পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শহরের পাথালিয়া গুয়াবাড়িয়া এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে। বিগত সরকারের আমলে তার ওপর মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের ঘটনা তুলে ধরে নূর হোসেন আবাহনী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সেইদিন ছিল ২০২৩ সালের ২৯ মার্চ রমজান।

জোড়পূর্বক জমি দখলের প্রতিবাদে মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেনকে সর্তক করার উদ্দ্যেশে আমি ফেসবুকে লাইভ দেই। লাইভটি দেখে মেয়র তার লোক দিয়ে ডেকে আমাকে পৌরসভায় নিয়ে যায়। পরে মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন আমার হাত ধরেন এবং পিস্তল ঠেকিয়ে আমাকে গাড়িতে তুলেন। মেয়র প্রথমেই আমার নাকে একটি ঘুষি মারেন।

এতে নাক দিয়ে রক্ত বের হয়ে আমার সাদা পাঞ্জাবি লাল হয়ে যায়। পরে মেয়রের বাড়ির পাশে একটি ঘরে (টর্চারসেল) নিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্মমভাবে নির্যাতন করেন। ইফতারের সময় হলে আমাকে শুধু পানি খেতে দেওয়া হয়। পরে  সেখান থেকে মেয়রের বড় ভাই আনোয়ার হোসেন আনু মেয়রের সন্ত্রাসী বাহিনীর তাজুসহ কয়েকজন আমাকে ইটের ভাটায় নিয়ে পুনরায় নির্মমভাবে মারধর মাথা ন্যাড়া করে দেয়। সময় আমার ভ্রু ফেলে দেওয়া হয়।

  লোহার রড, হকি স্টিক বাঁশের গুড়ালি দিয়ে ব্যাপক পিটুনি দেন। আমার শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রতঙ্গে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে জবাই করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়। তখন আমি পানি খেতে চাইলে আমাকে পানিও দেওয়া হয়নি। আমি তখন শুধু আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার বলছিলাম। সময় হঠা করে মেয়রের সন্ত্রাসী তাজুর ফোনে কল আসে। তখন আমাকে জবাই না করে মেয়রের মামা হাসানের বাড়িতে নেয়া হয়।

সেখানে আমার চার হাত-পা ভাঙছে কি-না তা দেখা হয়। সেখানেও মারধর করা হয়। পরে পুলিশ ডেকে আমাকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সে সময় পুলিশ আমার অবস্থা দেখে নিতে চায়নি। জোড়পূর্বক তাদের কাছে দেওয়া হয়। পরে আমাকে পুলিশের মাধ্যমে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিসা দেওয়া হয়। উল্টো আমার নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়। সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত নূর হোসেন আবাহনীর বাবা আব্দুর রশিদ বলেন, মেয়র পৌরসভায় আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে যান।

বাড়িতে নিয়ে মারধর করেছেন। পরে মেয়রের বাড়িতে গেলে আমার ছোট ভাতিজাকেও মারধর করে। আমাদের বাড়ি থেকে ঘাড় ধরে বের করে দেন। হাসপাতালে চিকিসা না করে তাকে জেলখানাতে পাঠিয়ে দেন। আমাদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে মির্জা আজমের বাসায় নিয়ে মীমাংসা করায়। কিন্তু আমার ছেলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়েছিলেন মেয়র।

সেই মামলায় আমার ছেলেকে জামিনে জেলখানা থেকে বের করি। কিন্তু পরে মেয়র মামলায় নারাজি দেন। মির্জা আজম মীমাংস করে দেওয়ার পরেও মামলাটি মেয়র উত্তোলন না করে আমার ছেলেকে হয়রানি করছেন। আমি এই সন্ত্রাসী মেয়রের বিচার আমার ছেলের বিরুদ্ধে দেওয়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। 

×