ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

ভোলায় জেলা শহর রণক্ষেত্র, প্রাণহানি একজনের

 নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা

প্রকাশিত: ১৯:০৬, ৪ আগস্ট ২০২৪

ভোলায় জেলা শহর রণক্ষেত্র, প্রাণহানি একজনের

ভোলা জেলা

ভোলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রবিবার (৪ আগস্ট) জেলা শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।প্রায় ৪/৫ ঘণ্টাব্যাপী শহরে তাণ্ডবে একজন নিহত এবং অর্ধশত আহতের খবর পাওয়া গেছে।

স্থানীয়রা জানান, সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে জসিম নামে এক পথচারী নিহত হয়েছেন। তিনি নতুন বাজার এলাকার ছাতার মেরামতের মিস্ত্রী ছিলেন। আন্দোলনকারীরা জেলা আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও শ্রমিক লীগ অফিস, পৌরভবন, ডিস অফিস, এসপি অফিসসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। পুড়িয়ে দিয়েছে জলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে থাকা বেশ কয়েকটি গাড়ি এবং মোটর সাইকেল। সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত অর্ধশত আহত হয়েছেন। এর মধ্যে  ২০ জন ভোলা সদর  হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

প্রত্যক্ষদর্শী বিভিন্ন সূত্র জানায়, আন্দোলনককারীরা সকাল থেকে ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ইলিশ ফোয়ারার মোড়ে জড়ো হতে থাকে। সকাল ১০ টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কালিনাথ রায়ের বাজার হয়ে সদর রোডে আসলে পুলিশি বাধাঁর মুখে পড়ে। সেই বাধা অতিক্রম করে সদর রোডের কে জাহান মার্কেটের সামনে গেলে আওয়ামী ও  ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যায়ে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এসময় বেশ কয়েকটি মোটর সাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। পরে তারা স্বেচ্ছাসেবকলীগ, শ্রমিকলীগ কার্যালয় ভাংচুর করে আসবাবপত্রে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এর পরপরই পৌরভবনে হামলা ভাংচুর ও সামনে অগ্নিসংযোগ করে। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে ভাংচুর করা হয়। এরপর হামলা করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। সেখানে মুক্তিযুদ্ধ কর্নারে আগুন দেয় ও  বিভিন্ন কক্ষে ভাংচুর করা হয়। একপর্যায়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভিতরে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের ১৪টি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ভাংচুর করা হয় বিটির ভোলা প্রতিনিধির মোটর সাইকেল। এমনকি এসিল্যান্ড অফিসের  একটি সরকারি গাড়িতেও আগুন দেওয়া খবর পাওয়া গেছে।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমাণ্ডার অহিদুর রহমান জানান, আন্দোলনকারীরা সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনে হামলা করে। এ সময় ভবনের সামনে রাখা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর একটি মাইক্রোবাস ও একটি মোটর সাইকেল অগ্নিসংযোগ করা হয়। অপরদিকে ভোলার পরানগঞ্জ বাজার এলাকার আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়েছে।
পরে দুপুর দুইটার দিকে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তবে বিকাল চারটা পর্যন্ত থেমে থেমে পুলিশের কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট,  সউন্ডগ্রেডসহ বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ পাওয়া গেছে বলে স্থানীয় বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে। 

বিকাল ৫ টার দিকে আন্দোলনকারীরা ভোলা খাদ্য অফিসে অগ্নিসংযোগ করে। তবে নতুন বাজার এলাকা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে মানুষের মাঝে ব্যাপক আতংক বিরাজ করছে। বর্তমানে পরিস্থিতি থমথমে অবস্থায় রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ভোলা পুলিশ সুপার মোঃ মাহিদুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, সহিংস হামলার ঘটনায় তিনি নিজে সহ ১০ পুলিশ আহত হয়েছেন।
 

 

এম হাসান

×