বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে মৌলভীবাজার-শমসেরনগর সড়কের একটি বড় অংশ। এতে যানবাহন চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে
বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের মাত্রা কমে আসায় সিলেট ও সুনামগঞ্জে নদনদীর পানি কমতে শুরু করেছে। পানি কমলেও দুই জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা এখনো প্লাবিত রয়েছে। এতে পানিবন্দি ১৬ লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ কমছে না। পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাত না থাকায় পানি কমছে দ্রুতগতিতে। তবে পানিবন্দি মানুষের ত্রাণসামগ্রী না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। এ জেলায় প্রায় ৪ লাখ মানুষ পানিবন্দি। কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চলছে ভাঙন। এ জেলার নদীরপাড়ের মানুষ আছে চরম আতঙ্কে। গাইবান্ধার সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। পাঁচ দিন পর শুক্রবার রৌদ্রোজ্জ্বল দিন পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে নীলফামারীর তিস্তাপাড়ের মানুষ। তিস্তা বাঁধের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি শুক্রবার বেলা ৩টা পর্যন্ত বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও ভাটিতে কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতার।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সিলেট নগরীর ২৯টি ওয়ার্ডসহ ১৩টি উপজেলায় ১০ লাখ ৪৩ হাজার ১৬১জন মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। এর মধ্যে সিলেট নগরীর ৪২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৯টি ওয়ার্ডের ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি। ৭১৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ২৮ হাজার ৯২৫জন। ১৩টি উপজেলায় ১৫৫২টি গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, গোলাপগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট , জকিগঞ্জ, বিশ্বনাথ ওসমানী নগর।
জেলার প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারাসহ সবকটি নদীর পানি কমা অব্যাহত রয়েছে। সিলেটবাসীকে বন্যার কবল থেকে রক্ষা করতে সবধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার সকালে সিলেটে সুরমা নদী পরিদর্শনকালে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেটের বন্যার খোঁজখবর রাখছেন।
শুক্রবার দিন ছিল রৌদ্রোজ্জ্বল। পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় পানি কমতে শুরু করেছে। বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ি ঢল না হলে পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে।
জানা গেছে, প্রথম দফায় জেলার গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জের মানুষ বেশি আক্রান্ত হলেও দ্বিতীয় দফায় সিলেটের সব উপজেলার মানুষ বন্যা আক্রান্ত হয়েছে। নদ-নদীর পানি কমলেও এসব উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা এখনো প্লাবিত রয়েছে। এতে পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ কমেনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, শুক্রবার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর আগে গতকাল এ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৭৪ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। সুরমা নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে শুক্রবার সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর আগে গতকাল এই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশীদ পয়েন্টে শুক্রবার সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর আগে গতকাল এই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৮১ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। শেওলা পয়েন্টে সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর আগে এ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল।
অপরদিকে সিলেট আবহাওয়া অফিস বলছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত কোথাও বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া যায়নি। একইভাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের চেরাপুঞ্জিতেও কোনো বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া যায়নি।
পানি কিছুটা কমলেও প্লাবিত গ্রাম এলাকায় মানুষ পানিবন্দি জীবন যাপন করছেন। বিশ্বনাথ পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়নের বন্যাকবলিত এলাকায় চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন সাধারণ মানুষ। উপজেলা সদরের সঙ্গে অনেক ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
বন্যাকবলিত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ মানুষ এখনো পানিবন্দি। পানিতে তলিয়ে আছে উপজেলা পরিষদ, বেশিরভাগ হাটবাজার গ্রামীণ রাস্তাঘাটসহ উপজেলার ৯৭টি গ্রাম। প্রায় ৫ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে। ৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখ হয়েছিল। এর মধ্যে ৩৮টি কেন্দ্রে লোকজন আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত ত্রাণ বিতরণ হচ্ছে না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সিলেটবাসীকে রক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর- পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক ॥ সিলেটবাসীকে বন্যার কবল থেকে রক্ষা করতে সবধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার সকালে সিলেট নগরীর ক্বীন ব্রিজ এলাকায় সুরমা নদী পরিদর্শনকালে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এমপি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, আগামীতে সিলেট সুনামগঞ্জের বন্যাকবলিত এলাকা কিভাবে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে পারি সে লক্ষ্যে আমরা আলোচনা করেছি। ইতিমধ্যে সুরমা নদীর ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে ১২ কিলোমিটার খনন কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
বন্যার পানিতে কিশোরের মৃত্যু ॥ বন্যার পানিতে গোসল করতে নেমে এক কিশোরের মৃত্যু ঘটেছে। শুক্রবার বেলা ১টার দিকে নগরীর শাহপরান মুক্তিরচক কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাশের একটি খালে এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া অভি স্থানীয় একটি স্কুলের ৮ম শ্রেণির ছাত্র বলে জানা যায়। তার বাবা একজন সরকারি চাকরিজীবী।
সুনামগঞ্জ ॥ জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। টানা ১৫ দিন পর শুক্রবার সূর্যের দেখা পেয়েছে সুনামগঞ্জবাসী। গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমার পানি ষোলঘর পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৮ সে. মি. ওপর দিয়ে বইছে। ফলে হাওরপাড়ের গ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।
জেলার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হলেও এখনো দুর্ভোগে লক্ষাধিক মানুষ। এখনো পানিবন্দি রয়েছেন প্রায় ৬ লাখ মানুষ। বন্যার পানি কিছুটা কমলেও বসবাসের অনুপযোগী থাকায় বাড়ি ফিরতে পারেনি বন্যার্তরা। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে রয়েছে সুপেয় পানির সংকট। এ ছাড়া আশ্রয়কেন্দ্র ও বন্যাকবলিত এলাকায় পয়ঃনিষ্কাশনের সুব্যবস্থা না থাকায় মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুণ। হাওর ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘর, দোকান, চলাচলের রাস্তা, মসজিদ, মন্দির পানিতে ডুবে আছে এখনো। বসতবাড়ি ও দোকানের মালামাল রক্ষায় উৎবেগ আর উৎকণ্ঠায় আছে নদী ও হাওর তীরবর্তী এলাকার মানুষজন। পানিবন্দি যেসব মানুষের ঘরবাড়ি থেকে পানি নেমেছে তারা পুনর্বাসন নিয়ে রয়েছেন দুশ্চিন্তায়। ঘরবাড়ি মেরামতসহ সুপেয় পানির দুর্ভোগ বেড়েছে কয়েকগুণ। বন্যাকবলিত নি¤œাঞ্চলের বেশিরভাগ টিউবওয়েল পানিতে তলিয়ে খাবার পানির সংকটে রয়েছেন তারা।
আশ্রয়কেন্দ্রে এসে খাদ্য সংকটে পড়েছেন সুনামগঞ্জের বন্যার্তরা। শিশুদের নিয়ে মায়েরাও রয়েছেন কষ্টে। ক্ষুধা সহ্য করতে না পেরে কান্নাকাটি করছে শিশুরা। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার হাসন নগরের আফলাতুন্নেছা বলেন, ‘ঘরে কোমর সমান পানি। গত কয়েকদিন বন্যার জন্য আমার গাড়িচালক স্বামীর রোজগার হয়নি। চার দিন আগে এখানে এলেও কোনো সহায়তা পাইনি। রান্নাবান্না করারও সুযোগ নেই। কোনোরকমে দিন কাটছে আমাদের। আজ সকালে একজন এসে রুটি আর কলা দিয়ে গেছে। খাবারের জন্য ছোট্ট শিশুরা কান্নাকাটি করছে।’
শাল্লায় পুলিশের রান্না করা খাবার বিতরণ ॥ উপজেলার পানিবন্দি মানুষের মাঝে শাল্লা থানার ওসি মিজানুর রহমানের উদ্যোগে পুলিশের রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে গ্রামে গ্রামে গিয়ে পানিবন্দি মানুষের মাঝে এসব খাবার বিতরণ করা হয়।
এদিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. আলাউদ্দিন।
মৌলভীবাজার ॥ জেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তীত রয়েছে। নতুন করে কোনো ভাঙন দেখা না দিলেও পুরানো ভাঙন দিয়ে পানি প্রবেশ করছে। কুশিয়ারা ও জুড়ী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে মনু ও ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে বন্যাকবলিত এলাকা থেকে প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রে বাড়ছে ভিড়। বন্যায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখার মানুষ। জেলার ৭ উপজেলার ৪৭ ইউনিয়নের ৪৭৪টি গ্রামের প্রায় ৪ লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন।
বন্যাকবলিত এলাকার অধিকাংশ বাড়িঘর ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তলিয়ে গেছে। বন্যাকবলিত মানুষ উঁচু স্থানে গবাদিপশুসহ আশ্রয় নিয়েছেন। অধিকাংশ গ্রামীণ সড়ক তলিয়ে গেছে। আঞ্চলিক মহাসড়কের অনেক স্থানে পানি উঠেছে। বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গিয়ে এ পর্যন্ত ২ জন মারা গেছে।
পাউবো মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল জানান, জেলার কুশিয়ারা ও জুড়ী নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে এবং মনু ও ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজানে ভারত অংশে বৃষ্টি না হওয়ায় পানি কমতে শুরু করেছে। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে বালির বস্তা দেওয়া হচ্ছে যাতে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে না পারে।
কুড়িগ্রাম ॥ তিস্তা, দুধকুমার, ধরলা, ব্রহ্মপুত্রসহ জেলার ১৬টি নদ-নদীর পানি বেড়েই চলছে। শুক্রবার তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫০ সেমি আর ধরলা নদীর পানি ফুলবাড়ি পয়েন্টে ১৫ সেমির ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে অন্যান্য নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। জেলার ৫টি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কুড়িগ্রাম সদর, নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী, রাজারহাট ও উলিপুর উপজেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ১৫ হাজার মানুষ। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চলছে ব্যাপক ভাঙন। নদ-নদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
চলছে ভাঙন ॥ জেলার প্রধান প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে ভাঙন। ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও গঙ্গাধর নদীর তীব্র ভাঙনের কারণে নদীপাড়ের মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও গঙ্গাধর নদে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতি ও শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ধরলা নদীর ভাঙনে রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের কিং ছিনাই, জয়কুমার ও নামা জয়কুমার গ্রামের কমপক্ষে ১০টি পরিবার নদীভাঙনের শিকার হয়ে বাঁধের রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে।
নীলফামারী ॥ তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি শুক্রবার বেলা ৩টা পর্যন্ত বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও ভাটিতে কাউনিয়া পয়েন্টে ওই সময় বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পাঁচদিন পর রৌদ্রোজ্জ্বল দিন পেয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে নীলফামারীর তিস্তাপাড়ের মানুষজন।
লালমনিরহাট ॥ তিস্তা নদী তীরবর্তী নি¤œাঞ্চলের ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে তিস্তা তীরবর্তী অঞ্চলের লোকজন।
গাইবান্ধা ॥ জেলার সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। শুক্রবার ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট, তিস্তা ও করতোয়া নদীর পানি বেড়েছে। সকাল ৯টায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সংলগ্ন কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। অন্য তিনটি নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃহ¯পতিবার একই সময়ে একই পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
নেত্রকোনা ॥ কলমাকান্দা উপজেলায় উব্দাখালি নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া খালিয়াজুরীতে ধনু নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তবে সোমেশ্বরী ও কংস নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। শুক্রবার সারাদিন কোনো বৃষ্টি হয়নি। বাড়িঘর প্লাবিত হওয়ায় কলমাকান্দা ও খালিয়াজুরী উপজেলার ১৬০ জন মানুষ দুটি আশ্রয়কেন্দ্রে বাস করছেন।
পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু ॥ কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের পাঁচকাঠা রাতকান্দা গ্রামের বন্যার পানিতে ডুবে রিফাত (১০) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।