ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

সীমান্ত পরিস্থিতির উন্নতি

রাখাইন থেকে টেকনাফে ভিড়ছে পণ্যবাহী জাহাজ

মুহাম্মদ হানিফ আজাদ, উখিয়া, কক্সবাজার 

প্রকাশিত: ১৯:৩২, ২ এপ্রিল ২০২৪

রাখাইন থেকে টেকনাফে ভিড়ছে পণ্যবাহী জাহাজ

পণ্যবাহী জাহাজ।

চার দিন ধরে নাফ নদীর ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের কোথাও শোনা যাচ্ছে না মর্টার শেল ও গ্রেনেড বিস্ফোরণের শব্দ। এতে নাফ নদীর এ পারে টেকনাফ সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। শুধু তাই নয়, রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিথুয়ে (আকিয়াব) বন্দর থেকে টেকনাফে আমদানি পণ্য বোঝাই কার্গো ট্রলার ও জাহাজ আসা-যাওয়া করছে। 

স্থলবন্দরে গিয়ে দেখা গেছে, সিথুয়ে বন্দর থেকে থেকে আমদানি পণ্য বোঝাই দুটি ট্রলার টেকনাফে জেটিতে ভিড়েছে । শ্রমিকরা ট্রলার থেকে নারকেল, আচার, মুগ ডাল, শুঁটকি, শুকনো সুপারি, কাঠ ও হিমায়িত মাছ খালাস করছেন।  

সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ বলেন, গত চার দিন সেন্টমার্টিনের মানুষ মর্টার শেলের বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পায়নি। ভালোভাবে ঘুমাতে পেরেছেন। অথচ বৃহস্পতি ও শুক্রবার (২৫ ও ২৬ মার্চ) পুরো দ্বীপ থেকেই বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। 

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আক্তার কামাল বলেন, গত চার দিন ওপার থেকে বিস্ফোরণের শব্দ আসেনি। ধারণা করা হচ্ছে, যে কোনো সময়ে দুই পক্ষের মধ্যে আবার সংঘাত শুরু হবে।

একটি ট্রলারের পণ্য আমদানিকারক ওমর ফারুক বলেন, রাখাইন রাজ্যের দেড় মাসের টানা সংঘাতে টেকনাফ স্থলবন্দরে ৮০ শতাংশ পণ্য আমদানি কমেছে। আগে দৈনিক ১৫-২০টি পণ্য বোঝাই ট্রলার-জাহাজ এলেও এখন আসছে সপ্তাহে সাত-আটটি। সংঘাত বেড়ে গেলে স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক বিভাগের কাস্টমস সুপার বি এম আবদুল্লাহ আল মাসুম বলেন, রাখাইন রাজ্যের সংঘাতের কারণে সীমান্ত বাণিজ্যের ক্ষতি হচ্ছে। রাজস্ব আয় কমে গেছে। গত জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে মিয়ানমারে পণ্য রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। 

সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, টানা দেড় মাসের বেশি সময় ধরে রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে লড়াই চলছে। এরই মধ্যে মংডু টাউনশিপের উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব পাশের রাচিডং টাউনশিপসহ ১২টি থানা আরাকান আর্মি দখলে নিয়েছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীটির সঙ্গে টিকতে না পারে কয়েক দিন আগে তিনজন সেনা সদস্য নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। 

এর আগে ১১ মার্চ আশ্রয় নেন মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) ১৭৭ জন সদস্য। তারা সবাই নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) হেফাজতে রয়েছেন। তারও আগে কয়েক দফায় বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন ৩৩০ জন সেনা ও বিজিপি সদস্য। ১৫ ফেব্রুয়ারি তাদের ফেরত পাঠানো হয়। 
 

 এসআর  

×