ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

অপরিকল্পিত ড্রেজিং

নাব্য সংকটে পদ্মা-যমুনা

নিজস্ব সংবাদদাতা, রাজবাড়ী

প্রকাশিত: ২১:৪৩, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

নাব্য সংকটে পদ্মা-যমুনা

ডেজিং করে নদীতেই ফেলা হচ্ছে মাটি

দিন দিন পদ্মা-যমুনা নদী যৌবন হারাচ্ছে। হারাচ্ছে গভীরতা। গভীরতা হারানোর কারণে শুকনো মৌসুমে নদীতে অসংখ্য ডুবোচরের সৃষ্টি হয়। এতে ছোট হয়ে যাচ্ছে নৌপথ। স্বাভাবিক চলাচল করতে পারে না নৌযান। অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার দিয়ে নদী খনন এবং নদীর দুই পাড়ে দখল ও বালু উত্তোলন বন্ধ না হওয়ায় এমনটি হচ্ছে বলে মনে করেন অনেকে। 
পদ্মা-যমুনার মিলনস্থল রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া এবং মানিকগঞ্জ জেলার পাটুরিয়া। দুই রঙের দুই নদী স্পষ্ট দুই ধারা বহন করছে। যমুনা নদীর ঢেউ কলতান দিয়ে পদ্মা কন্যার বুকে পড়ছে। জেলেরা যমুনা নদীতে জাল ফেলে পদ্মা নদীতে এসে ওঠাচ্ছে। মাঝিরা নৌকা নিয়ে পদ্মা-যমুনা নদী পাড়ি দিচ্ছে। এই নৌরুটের এক পাড়ে রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া ঘাট ও অন্য পাড়ে মানিকগঞ্জ জেলার পাটুরিয়া ঘাট।

রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া-মানিকগঞ্জ জেলার পাটুরিয়া নৌরুটের দুই পাড়ে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, দুই পাড় থেকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার দিয়ে ড্রেজিং করছে। শুকিয়ে যাওয়া নদীতে নৌযান চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য বিআইডব্লিউটিএ ড্রেজিং করছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, নদীতে বালু উত্তোলন করে পাশেই ফেলা হচ্ছে।

উভয় পারে ফেরি ও লঞ্চ ঘাটে পাশে ড্রেজিং করে ফেলা হচ্ছে বালু। নিয়মের তোয়াক্কা না করে এভাবে অপরিকল্পিতভাবে নদী খনন করায় কোন কাজে আসছে না। বরং বিআইডব্লিউটিএর কোটি কোটি টাকা অপচয় হচ্ছে। পদ্মা-যমুনা নদী হারাচ্ছে গভীরতা। 
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে চলাচলরত একাধিক ফেরি মাস্টার বলেন, নদীর গভীরতা কমে যাচ্ছে। নৌরুট সচল রাখার জন্য প্রতি বছর ড্রেজিং করা হয়। কিন্তু কতটুকু পরিকল্পনা করে ড্রেজিং করা হয়। যেভাবে ড্রেজিং করা হচ্ছে ১৫ দিনের মধ্যে আবার নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। আবারও ড্রেজিং করা হচ্ছে। তা হলে এভাবে ড্রেজিং করার কারণ কি?

একাধিক লঞ্চ চালক বলেন, নদীতে অসংখ্য ডুবোচর রয়েছে। লঞ্চ চালাতে অনেক সমস্যা হয়। কিন্তু পরিকল্পনা করে ড্রেজিং করলে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে স্বাভাবিকভাবে লঞ্চ-ফেরিসহ বিভিন্ন প্রকার নৌযান স্বাভাবিক চলাচল করতে পারবে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা বন্দরের পোর্ট অফিসার সাজ্জাদুর রহমান বলেন, দুই পাড়ে অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়েছে। তবে ড্রেজিংয়ের ব্যাপারে কোন তথ্য আমার কাছে নেই।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা বন্দরের ড্রেজিং বিভাগের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করলেও ড্রেজিং নিয়ে কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে নারাজ তারা।

×